বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৩ ১৪৩১   ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নতুন রূপে ডেঙ্গু: আক্রান্ত হচ্ছে হার্ট, লিভার ও কিডনি

নিউজ ডেস্ক

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৯:২৩ এএম, ১০ জুলাই ২০১৯ বুধবার

এবার নতুন জটিলতা নিয়ে হাজির হয়েছে ডেঙ্গু। বদলে গেছে জ্বরের প্রকৃতি ও ধরন। শুরুতেই বড় জটিলতায় পড়ছেন রোগীরা। আক্রান্ত হচ্ছে হার্ট, লিভার ও কিডনি। নতুন আতঙ্ক হয়ে সামনে এসেছে ‘মায়োকার্ডিটিস’ বা হৃদযন্ত্রের প্রদাহ। এ অবস্থায় ডেঙ্গু চিকিৎসায় নতুন গাইডলাইন তৈরি করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে দেখা যায়, তীব্র জ্বর নিয়ে কয়েকদিন আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন নাজমুস সাকিব পিয়াস। পরীক্ষার পর ধরা পড়ে ডেঙ্গু। পিয়াসের মতো আরও অনেকেরই একই অবস্থা। গত জুন মাসে ঢামেকে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ১৩৫ জন। আর জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ভর্তি হন ৪১ রোগী। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে একজনের।

ঢামেক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত বছরের জুনে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৯৫। চলতি বছরের জুনে তা ৬ গুণ বেড়ে হয়েছে এক হাজার ৭৩৩ জন। বদলেছে ডেঙ্গুর প্রকৃতিও। এখন এতে আক্রান্ত হচ্ছে হার্ট, লিভার, কিডনির মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দীন বলেন, হার্টে কার্ডাইটিস হয়ে আসছে, লাঞ্চে পানি চলে আসছে, কিডনি ফেইলার নিয়ে আসছে। অনেকের ব্লিডিং হচ্ছে। স্কয়ার হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক নিগার নাহিদ। দুদিনের জ্বরেই মৃত্যু হয় তার।

চিকিৎসকরা বলছেন, এখন জ্বরের শুরুতেই কমে যাচ্ছে প্লাটিলেট। এতে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়ছে। হৃদযন্ত্র আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বাড়ায় তৈরি হয়েছে আতঙ্ক।

ঢাকা মেডিকেলের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মুরাদ হোসেন বলেন, অনেক রোগীর ডেঙ্গু ভাইরাসের কারণে হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে। এতে হার্টের কার্ডিয়াক মার্কারি বেড়ে যাচ্ছে। এটা কার্ডিয়াক এ্যাটাক না। এটা মায়োকার্ডিটিস না। এটা আসলে ডেঙ্গু ভাইরাসের কারণে হচ্ছে।

বিএসএমএমইউ মেডিসিন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, প্লাটিলেট কমলেই রক্তক্ষরণ হয়। ব্রাশ করতে, নাক দিয়ে রক্ত পড়ে। কিন্তু ইন্টারনাল ব্লিডিং বেশি মারাত্মক। ভেতরে রক্তক্ষরণে হলে রোগী শকে চলে যায়। এতে মৃত্যুঝুঁকি বাড়ে।

এ অবস্থায় ডেঙ্গু মোকাবিলায় পুরোনো গাইডলাইন সংশোধন করে নতুন কৌশল নির্ধারণ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের লক্ষ্য মৃত্যু প্রতিরোধ করা। আমরা গাইডলাইন অনুযায়ী সরকারি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি।