হত্যাকারীদের দেখে এজলাসে অচেতন নুসরাতের মা
নিউজ ডেস্ক:
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০১:৩১ পিএম, ১১ জুলাই ২০১৯ বৃহস্পতিবার
মাদরাসার অধ্যক্ষের নির্দেশে তারা আমার মেয়ে নুসরাতের গায়ে আগুন দেয়। আমি সব অপরাধীর ফাঁসি চাই। আমার মেয়ের হাত ধরেছে কে, পা ধরেছে কে, আগুন লাগিয়েছে কে, মুখ চেপে ধরেছে কে? এসব আসামিদের স্বীকারোক্তি থেকেই জেনেছি। তারা সবাই আদালতে স্বীকার করেছে।
বুধবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে দেয়া সাক্ষ্যে নুসরাতের মা শিরিনা আক্তার এসব কথা বলেন।
দুপুর ১২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত তার জবানবন্দি গ্রহণ ও আসামি পক্ষের আইনজীবীদের জেরা চলে।
সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষে নুসরাতের মা এজলাসেই অজ্ঞান হয়ে পড়েন। প্রায় ১৫ মিনিট চেষ্টার পরও জ্ঞান না ফিরলে তাকে ফেনী হার্ট ফাউন্ডেশনে ভর্তি করা হয়। বিকেলে কিছুটা সুস্থ হলে তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
এ নিয়ে নুসরাত হত্যা মামলায় তার মাসহ ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হলো। বৃহস্পতিবার আবুল খায়ের নামে মাদরাসার পরীক্ষার হলের একজন পরিদর্শকের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য আছে।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী এম শাহজাহান সাজু বলেন, দুপুর ১২টা থেকে আদালতে নুসরাতের মা শিরিন আক্তারের সাক্ষ্যগ্রহণ চলছিল। এ সময় বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। আদালতের এজলাসে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা, কামরুন নাহার মনি ও উম্মে সুলতানা পপিকে দেখে চিৎকার করে কেঁদে ওঠেন তিনি। বেলা আড়াইটার দিকে এজলাসেই জ্ঞান হারান শিরিন আক্তার। পরে তাকে ফেনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তিনি বলেন, এর আগে মাদরাসার নৈশপ্রহরী মো. মোস্তফার সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে। বুধবার পঞ্চম দিনে সাক্ষী সোনাগাজী ফাজিল মাদরাসার পিয়ন নুরুল আমিনের জেরা, মঙ্গলবার নুসরাতের সহপাঠী নাসরিন সুলতানার জেরা শেষে হলে সাক্ষী সোনাগাজী ফাজিল মাদরাসার পিয়ন নুরুল আমিনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। এর আগে ৭ জুলাই কেরোসিন বিক্রেতা জসিম উদ্দিন, বোরকা বিক্রেতা লিটন ও দোকানের কর্মচারী হেলাল উদ্দিন ফরহাদের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মামলার সব আসামিকে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালনে আনা হয়।
গত ২৭ জুন মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষী নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এরপর তাকে জেরা শুরু করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। যা শেষ হয় ৩০ জুন। পরে সোমবার ও মঙ্গলবার নুসরাত জাহান রাফির বান্ধবী নিশাত সুলতানা ও সহপাঠী নাসরিন সুলতানা ফূর্তির সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়।
অভিযোগ গঠনের ছয়দিনের মাথায় ৯২ জন সাক্ষীর মধ্যে বাদীপক্ষের তিনজন সাক্ষীকে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য উপস্থাপন করা হয়। ২০ জুন সাক্ষ্যগ্রহণের আদেশ দেন আদালত। মামলার চার্জশিট জমা দেয়ার আগে সাতজন সাক্ষী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।