ওবামা বিদ্বেষের কারণেই ইরানবিরোধী পদক্ষেপ ট্রাম্পের!
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০১:৫৫ পিএম, ১৫ জুলাই ২০১৯ সোমবার
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রতি ভয়াবহ বিদ্বেষের কারণেই বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি থেকে ওয়াশিংটনকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সাবেক ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত স্যার কিম ড্যারোচ।
সম্প্রতি তার বেশ কিছু গোপনীয় ইমেইল ফাঁস হয়ে যাওয়ার ঘটনায় রাষ্ট্রদূতের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন তিনি। ফাঁস হয়ে যাওয়া মেইলগুলোতে তিনি বর্তমান মার্কিন ট্রাম্প প্রশাসনকে ‘অপদার্থ’ ও ‘অযোগ্য’ বলে মন্তব্য ও তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। এরইমধ্যে রোববার দ্য মেইল আবার নতুন করে নথি ফাঁস করেছে। স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের সতর্কতা সত্ত্বেও নতুন নথি ফাঁস করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি। - খবর বিবিসি
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ২০১৮ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক চুক্তি বহাল রাখার অনুরোধ জানানোর পর ফাঁস হওয়া মেমোটি লিখেছিলেন স্যার কিম ড্যারোচ। এতে ট্রাম্পের পদক্ষেপকে ‘কূটনৈতিক বিপর্যয়’ বলে আখ্যা দেন তিনি।
২০১৫ সালের জুনে ভিয়েনায় ইরানের সঙ্গে নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ সদস্য দেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন (পি-ফাইভ) ও জার্মানি (ওয়ান) পরমাণু চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। চুক্তি অনুযায়ী, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম সীমিত রেখে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি না করার প্রতিশ্রুতি দেয় তেহরান। ওবামা আমলে স্বাক্ষরিত এই চুক্তিকে ‘ক্ষয়িষ্ণু ও পচনশীল’ আখ্যা দিয়ে গেল বছরের মে মাসে তা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর নভেম্বরে তেহরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হয়।
দ্য মেইল জানিয়েছে, ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র সফর থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন ব্রিটেনে ফিরে আসার পর স্যার কিম লিখেছেন প্রেসিন্টে ট্রাম্প ‘ব্যক্তিগত কারণে’ পারমাণবিক চুক্তি বাতিল করতে চাইছেন বলে মনে হচ্ছে। কারণ এই চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন তার পূর্বসূরি বারাক ওবামা। ব্রিটিশ দূত নথিতে বলেন, চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর কী করা হবে তা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট উপদেষ্টাদের ও হোয়াইট হাউসের প্রতিদিনের কৌশল নির্ধারণ করা ছিল না।
এক সপ্তাহ আগে ব্রিটিশ দূত স্যার কিম ড্যারোচের প্রথম একটি নথি ফাঁস হয়। তাতে তিনি ট্রাম্প প্রশাসনকে ‘অদ্ভুত এবং নিষ্ক্রিয়’ আখ্যা দিয়েছেন। এর জেরে স্যার কিমকে ‘ভেরি স্টুপিড গাই’ অভিহিত করেন ট্রাম্প। নথি ফাঁসের জের ধরে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করেছে ব্রিটিশ সরকার। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কাজ চালিয়ে যাওয়া অস্ভব বলে মন্তব্য করে গত বুধবার পদত্যাগ করেন ব্রিটিশ দূত স্যার কি ড্যারোচ।
এই ঘটনার জেরে আর কোনও ফাঁস হওয়া কূটনৈতিক নথি প্রকাশের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে সতর্ক করে দেয় ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। যে সব সাংবাদিক সাবেক ব্রিটিশ দূতের যোগাযোগের বিস্তারিত ফাঁস করে দেবেন তারা রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগের মুখে পড়বেন বলে সতর্ক করা হয়। ওই সতর্কতা সত্ত্বেও নতুন স্যার কিম ড্যারোচের নতুন নথি ফাঁস করে দিল।