হাজিদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশেষজ্ঞদের জরুরি পরামর্শ
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ১০:৫০ এএম, ১৬ জুলাই ২০১৯ মঙ্গলবার
সারাবিশ্ব থেকে হজ পালনকারীরা পবিত্র নগরী মক্কা ও মদিনায় যেতে শুরু করেছে। এবারের হজ মৌসুমে ধর্মীয় আবশ্যক নির্দেশ পালনে বিশ্বের প্রায় ২৫ লাখ মানুষ পবিত্র নগরী মক্কায় উপস্থিত হবে।
তারা সবাই মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালার মেহমান। আর আল্লাহর মেহমানদের সার্বিক সহযোগিতার পাশাপাশি স্বাস্থ্য সেবায়ও সৌদি আরব হজ কর্তৃপক্ষও প্রস্তুত।
এরপরও বিশ্বের অনেক দেশের ধর্মীয় শুভাকাঙ্ক্ষীরা হজ পালনকারীদের উদ্দেশ্যে দিয়েছেন বিভিন্ন উপদেশ। দুবাইভিত্তিক ওভিভো গ্রুপের সিইও ডাক্তার দিলশাদ আলি হজ পালনকারীদের সুস্থতা নিশ্চিতে স্বাস্থ্যসেবামূলক কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ দিয়েছেন। যা হজ পালনকারীদের সুস্থ থাকতে সহায়তা করবে। স্বাস্থ সচেতনার সে উপদেশগুলো হলো-
হজ পালনকারীদের সুস্থতা নিশ্চিতে স্বাস্থ্যসেবা (ফাইল ফটো)
> বাধ্যতামূলক ভ্যাকসিন গ্রহণ: লাখো মানুষের ভিড়ে বিভিন্ন রোগ ব্যাধি থেকে সুস্থ থাকতে ভ্যাকসিনের বিকল্প নেই। তাই প্রত্যেক হাজিকেই নিজ নিজ দেশ থেকে ভ্যাকসিন গ্রহণ করা জরুরি। কমপক্ষে হজ যাত্রার ২ সপ্তাহ আগে এ ভ্যাকসিন নেয়া জরুরি। বিশেষ কিছু বাধ্যতামূলক নেয়া আর এর মধ্যে রয়েছে, নিউমোনিয়া, ম্যানিংগোকোকাল (meningococcal vaccination)।
যাদের বয়স ৬৫ বছরের বেশি কিংবা ১২ বছরের কম শিশু, গর্ভবতী নারী ও ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তিরা বিশেষ সতর্কতায় থাকবেন। এদের মধ্যে অনেকেই থাকতে পারেন, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, কিডনি কিংবা শ্বাসযন্ত্রের রোগে আক্রান্ত। তাদের থাকবে খুব বেশি সতর্ক।
> প্রেসক্রিপশন গ্রহণ: যারা দীর্ঘস্থায়ী ও উপরোল্লেখিত জটিল রোগে আক্রান্ত তারা অবশ্যই হজে রওয়ানা হওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ এবং প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ সংগ্রহ করে সঙ্গে রাখতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের যোগাযোগ নম্বর সংরক্ষণ করে রাখা। যাতে হজের সফরে অসুস্থতায় সহযোগিতা নেয়া যায়।
> মাস্ক ব্যবহার: মানুষের ভিড় যত বাড়বে, সেখানে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি। তাই অতিরিক্ত ভিড়ে কিংবা ধুলাবালিতে মাস্ক ব্যবহার আবশ্যক। ফলে শাসযন্ত্রের ক্রিয়া আক্রান্তরা জটিল পরিস্থিতি থেকে বেঁচে যাবেন।
> ছাতা ও পানি সঙ্গে রাখা: এমনিতে সৌদি ৪০ ডিগ্রির ওপরে গরম থাকে। আর হজের সময় অধিক মানুষের সমাগমের কারণে তা আরো বেড়ে যায়। তাই অতিরিক্ত তাপ থেকে বাঁচতে প্রয়োজন ছাতা ও পানি। তাই হজের যেকোনো কাজে বা যেকোনো প্রয়োজনে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় অবশ্যই ছাতা এবং পানি সঙ্গে নেয়া জরুরি। তাহলে গরম কিংবা অত্যাধিক তাপ থেকে বেঁচে থাকা যাবে।
> পা ও চোখের বিশেষ খেয়াল রাখা: যারা ডায়াবেটিস কিংবা চর্ম রোগে আক্রান্ত তাদের পা ও চোখের যত্ন নেয়া আবশ্যক। কারণ চর্ম রোগ অবশ্যই ছোঁয়াচে এবং গরমে ডায়াবেটিস রোগীদের পায়ের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। এসব পরিস্থিতিতে অবশ্যই গরম নিরোধক জুড়া কিংবা চোখে ব্যবহারের জন্য কালো চশমা আবশ্যক।
গরমে পায়ে ফোস্কা কিংবা ধুলাবালি ও তাপে চোখের সমস্যায় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ পায়ে ফোস্কা ফুটলে হজের কাজে যেমন বিঘ্ন ঘটবে, তেমনি চলাফেরাও হবে অনেক কষ্টকর। আর তাতে ইনফেকশন বা সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনাও খুব বেশি। তাই অধিক গরমে পায়ের ও চোখের যত্ন নেয়া আবশ্যক।
সুতরাং হজ পালনকারীদের উচিত, হজে অংশগ্রহণ করার আগে থেকেই উল্লেখিত বিষয়গুলোর প্রতি যথাযথ গুরুত্ব দেয়া। বিভিন্ন জটিল রোগের ভ্যাকসিন গ্রহণ, ডাক্তারের পরামর্শ ও ব্যবস্থাপত্র গ্রহণ, পর্যাপ্ত মাস্ক, ছাতা ও পানির সংরক্ষণ ও সুব্যবস্থার পাশাপাশি যে কোনো ছোঁয়াচে রোগের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে হজের যাবতীয় কাজগুলো যথাযথ আদায়ে সুস্থ্য থাকার তাওফিক দান করুন।
সুস্বাস্থ্য ও সুস্থতায় কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমিন।