বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১   ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরই মুসলিম নিপীড়ন বেড়েছে

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১১:১৭ এএম, ১৮ জুলাই ২০১৯ বৃহস্পতিবার

ভারতে মুসলিমদের ওপর ক্রমবর্ধমান নিপীড়নের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ব্রিটেন। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লেখা এক চিঠিতে প্রভাবশালী এমপি জোনাথান অ্যাশওয়ার্থ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমলে ভারতে মুসলিমদের ওপর চলমান বিদ্বেষ ও সহিংস আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে। নির্যাতন-নিপীড়নে সেখানে প্রচণ্ড উদ্বেগজনক পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

ধর্মীয় উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে হত্যাকাণ্ড, হামলা-আক্রমণ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, বৈষম্য-অসম, ঘরবাড়ি ভাংচুর, ব্যক্তির ধর্মবিশ্বাস ও প্রার্থনায় বাধা প্রদান প্রভৃতি ঘটনার সুস্পষ্ট রিপোর্ট রয়েছে।

কিন্তু এ ব্যাপারে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে ভারত সরকার। মুসলিমদের ওপর সহিংস আক্রমণের ঘটনায় সাড়া দিতে ব্রিটিশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অ্যাশওয়ার্থ। খবর দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের।

 

২০১৪ সালে কট্টর হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির ক্ষমতায় আসার পরই মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ওপর নিপীড়ন বৃদ্ধি পায়।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদন বলছে, গত ৩ বছরে গোরক্ষার নামে ১২ রাজ্যে হত্যা করা হয় ৪৪ জনকে। যার ৩৬ জনই মুসলমান। চলতি বছর বড় জয়ের মধ্যদিয়ে ফের সরকার গঠন করেছে মোদির দল। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই কয়েকটি ভয়াবহ মুসলিম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গত মাসে ভারতের ঝাড়খন্ড প্রদেশে এক মুসলিম যুবককে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করে দেশটির উগ্রপন্থী হিন্দুরা।

এ ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার মাঝে মোদি বলেন, ঝাড়খন্ডের ওই ঘটনায় তিনি ব্যথিত এবং অপরাধীরা কঠোর শাস্তি পাবে। একই সঙ্গে দেশটিতে যেকোনো ধরনের সহিংসতা কিংবা অপরাধ আইনি উপায়ে দমন করা হবে বলে জানান তিনি। গত সপ্তাহেই ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী জেরেমি হান্টের কাছে চিঠি লেখেন লেচেস্টার দক্ষিণ আসনের লেবার দলীয় এমপি ও জেরেমি করবিনের ছায়া মন্ত্রিসভার সদস্য জোনাথান অ্যাশওয়ার্থ।

 

চিঠিতে তিনি বলেন, আমার আসনের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যদের মাধ্যমে আমি ভারতে চলমান সহিংস হামলার ব্যাপারে জেনেছি। ভারতের পরিস্থিতি চরম উদ্বেগজনক। আমার সাংবিধানিক আসনের বাসিন্দারা উদ্বিগ্ন যে, ‘ভারতে মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর চলমান সহিংসতা মোকাবেলায় ভারতীয় সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’

চিঠিতে তিনি আরো বলেন, এই ইস্যুতে ভারত সরকার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। জোনাথানের এই চিঠির জবাবে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিম নিপীড়নের ঘটনায় পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানোর জন্য ভারত সরকারের সঙ্গে কাজ করছি। আমাদের মুসলিম তরুণ ক্ষমতায়ন শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে ১৫০ জন তরুণ ও ২০ জন শিক্ষককে নিয়ে কাজ চলছে। এই প্রকল্প ভারতের শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চালু রয়েছে।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা-সংক্রান্ত রিপোর্টে অভিযোগ করা হয়, ২০১৮ সালেও ভারতের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিশেষত মুসলমানদের ওপরে হিন্দুত্ববাদী চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হিংসাত্মক আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে।