বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১   ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

প্রতিনিধি পরিষদে ট্রাম্পের বর্ণবাদী মন্তব্যের প্রতি নিন্দা

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১২:০১ পিএম, ১৮ জুলাই ২০১৯ বৃহস্পতিবার

মার্কিন কংগ্রেসের চার নারী ডেমোক্রেট সদস্যকে উদ্দেশ্য করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের করা মন্তব্যকে ‘বর্ণবাদী মন্তব্য’ হিসেবে আখ্যায়িত করে এর নিন্দা জানিয়েছে দেশটির প্রতিনিধি পরিষদ। 

মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে এ সংক্রান্ত ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণের পক্ষে ভোট দেন ২৪০ কংগ্রেসম্যান। আর বিপক্ষে ভোট দেন ১৮৭ কংগ্রেসম্যান।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা নিন্দা প্রস্তাবে বলা হয়, জোরালোভাবে ট্রাম্পের বর্ণবাদী মন্তব্যের নিন্দা জানাচ্ছে প্রতিনিধি পরিষদ। তার এসব মন্তব্য নতুন আমেরিকান এবং ভিন্ন বর্ণের মানুষের প্রতি ভয় ও ঘৃণাকে বৈধতা দেবে। ফলশ্রুতিতে এ ধরনের ভয়-বিদ্বেষ ও ঘৃণার প্রবণতা আরও বেড়ে যাবে।

 

রোববার ধারাবাহিক তিনটি টুইট পোস্ট করে কংগ্রেসের চার নারী ডেমোক্র্যাট সদস্যকে কটাক্ষ করেন ট্রাম্প। তাদের উদ্দেশ্য করে ট্রাম্প লেখেন, কংগ্রেসের নারী প্রগতিশীল সদস্যরা মূলত যেসব দেশ থেকে এসেছেন সেসব দেশের সরকারগুলোই চরম বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে, সেগুলোই সবচেয়ে খারাপ, সবচেয়ে দুর্নীতিবাজ আর সবচেয়ে নিস্ক্রিয়।... আর তারাই এখন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী আর মহান দেশ যুক্তরাষ্ট্র কিভাবে চলবে তার পরামর্শ দিচ্ছে। এসব ডেমোক্র্যাট সদস্যদের ‘নিজ দেশে’ ফিরে গিয়ে সেসব ঠিক করতে সাহায্য করার পরামর্শ দেন ট্রাম্প।

ট্রাম্পের এমন মন্তব্যকে জেনোফোবিয়া (ভিনদেশিদের নিয়ে আতঙ্ক) বলে আখ্যা দিয়েছেন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। তিনি বলেন, আমাদের বৈচিত্র্য আমাদের শক্তি আর আমাদের ঐক্য আমাদের ক্ষমতা।

যে চার নারী সদস্যকে উদ্দেশ্য করে ট্রাম্প বর্ণবাদী টুইট করেছেন তারা হলেন- আলেক্সজান্দ্রিয়া ওকাসিয়ো কর্টেজ, রাশিদা তালিব, আয়ান্না প্রেসলি এবং ইলহান ওমর। এদের মধ্যে প্রথম তিনজনের জন্ম ও বেড়ে উঠা যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই। চতুর্থ জন ইলহান ওমর শিশু বয়সেই যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হন।

 

ট্রাম্পের টুইটের জবাবে মিশিগানের কংগ্রেস সদস্য রাশিদা তালিব প্রেসিডেন্টের অপসারণ দাবি করেছেন। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, ‘একজন নীতিহীন ও সম্পূর্ণ ব্যর্থ প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? তিনিই সংকট। তার বিপদজনক আদর্শই সংকট। তাকে অপসারণ করা দরকার।’

আরেক নারী সদস্য আলেক্সজান্দ্রিয়া ওকাসিয়ো কর্টেজ ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে টুইট বার্তায় লেখেন, ‘আপনি ক্ষুব্ধ কারণ আমরা যে আমেরিকা ধারণ করি আপনি তা ধারণ করতে পারেন না। লুটতরাজ চালানোর জন্য আপনি শঙ্কিত আমেরিকা চান।’

সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্সও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বর্ণবাদ চালানোর অভিযোগ তুলেছেন।

ডেমোক্র্যাটরা ছাড়াও কোনও কোনও রিপাবলিকান সমর্থকও এরইমধ্যে ট্রাম্পের মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন। রিপাবলিকান সমর্থক কলামিস্ট মেগান ম্যাককেইন এই মন্তব্যকে বর্ণবাদী আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, যেসব মানুষকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি তাদেরকে আমরা ফিরে যেতে বলতে পারি না। 

 

এদিকে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনামূলক প্রতিক্রিয়া দেখা গেলেও তা তার সার্বিক জনপ্রিয়তায় তেমন কোনো প্রভাব ফেলেনি বলে রয়টার্স ও জরিপ সংস্থা ইপসোসের এক জরিপে লক্ষ্য করা গেছে। আগামী বছর অনুষ্ঠেয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প ফের প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।