বৃহস্পতিবার   ০৭ নভেম্বর ২০২৪   কার্তিক ২২ ১৪৩১   ০৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মহাপ্রয়াণের শোক আখ্যান ‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৩:৩০ পিএম, ১৮ জুলাই ২০১৯ বৃহস্পতিবার

মহাকাল নাট্য সম্প্রদায় বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও বাংলাদেশ পথ নাটক পরিষদ অন্তর্ভূক্ত অন্যতম সক্রিয় নাট্যদল। ‘মহাকাল’ বাঙালির হাজার বছরের সংস্কৃতির প্রতি অবিচল আনুগত্যে স্থির থেকে ১৯৮৩ সাল থেকে নিয়মিত নাট্যচর্চারত সংগঠন হিসাবে নিজেদের অবস্থানকে সুদৃঢ় করেছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে অবিরাম নাট্যচর্চায় ‘মহাকাল’ ৪০টি নাট্য প্রযোজনা মঞ্চে এনেছে ও ইতোমধ্যে নাটকগুলোর ১০২৩টি প্রদর্শনী সম্পন্ন করেছে এবং ২টি নাট্য প্রযোজনার শতাধিক এবং ১টি নাট্য প্রযোজনার দেড়শতাধিক মঞ্চায়ন সম্পূর্ণ করেছে। মঞ্চে ৪টি প্রযোজনা নিয়মিতভাবে মঞ্চায়ন অব্যাহত রেখেছে। 

 

সবুজ শ্যামল বৃক্ষলতা- তার চিরল বিরল গাঙ- আর উপরে সাদা আর নীল আকাশ রঙ- আর মেঘ নিয়ে ছাদ হয়ে থাকে। ছোট স্বাধীন ভূখন্ড উপরন্তু ৭১-এ দখলদার চিলশকুনেরা নিজ দেশমুখে উড়নকালে পালক ঝড়িয়ে রেখে গেছে। যে পালক বিস্তৃত হয়ে ডানা, নখ, পেট, পুচ্ছের কায়া নিয়ে- তীক্ষ্ণ চঞ্চুতে ঠোকর দেয় আমাদের কবিতাতে, কাব্য, উপন্যাস, নাটক, সঙ্গীত, নৃত্য আর বাদ্যযন্ত্রের বোলে। চিল শকুনের কালো পালকের চিহ্ন মোচন নিমিত্তে ক’জন স্বপ্ন সাহসী যুবকের শিল্প সংগ্রামের প্রতিস্পর্ধী প্রয়াস ‘মহাকাল’।  

মহাকাল এর পতাকা হাতে নিয়ে ছুটে চলেছে অগণিত মুখ- সেমুখে আগুনের স্ফুলিঙ্গ। সেই গ্রাম থেকে কবে শহরে এসে নগর জীবনের অশুভ হাতছানিকে উপেক্ষা করে মনোযোগী হয়েছে শিল্পসৃষ্টিতে। বাবা-মা’র কড়া শাসন সব সময় আহলাদ ভরা বাড়াবাড়িতে কেবলই জড়োসড়ো হয়ে থাকা ছোট্ট শিশু থেকে তরুন হয়ে উঠা পর্যন্ত দূরন্ত মানুষগুলো একত্রিত হলো মহাকাল এর হাত ধরে মহাকাল পাড়ি দিবে বলে।

 

জন্মলগ্ন  থেকেই মহাকালের অভিপ্রায় ছিল রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক নানারকম সাম্প্রতিক সংকট উপজীব্য নাট্য প্রযোজনা মঞ্চে নিয়ে আসা। সংগ্রামী নারী আসমানী থেকে আরম্ভ করে মুক্তিযুদ্ধের বিস্তৃত ক্যানভাস, গীতিকার নারী, তাঁত শিল্পের কারিগর, প্রান্তিক জনমানুষ, লিঙ্গ প্রতিবন্ধী, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জঙ্গিবাদের মত বিষয় ও নানামাত্রিক চরিত্র উঠে এসেছে মহাকালের নাট্য আয়োজনে।

মহাকাল নাট্য সম্প্রদায় এর প্রতিষ্ঠার তিনযুগ পূর্তি উপলক্ষ্যে শুক্রবার মহাকাল জাতীয় নাট্যশালার মূল হলে আয়োজন করছে আলোচনা, কোরিওগ্রাফি, পথনাটক এবং নতুন প্রযোজনা মহাপ্রয়াণের শোক আখ্যান ‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’ মঞ্চায়ন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আনন জামান রচিত ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এন্ড পারফর্মেন্স স্টাডিস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আশিক রহমান লিয়ন এর পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় ‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’ মহাকাল নাট্য সম্প্রদায় এর ৪০তম প্রযোজনা।

নাটকটির নেপথ্য শিল্পীরা হলেন- মঞ্চ, আলো, পোষাক ও আবহসঙ্গীত পরিকল্পনায় আশিক রহমান লিয়ন, এ্যানিমেশন ও আবহসঙ্গীত সম্পাদনায় কাজী মোহাইমিনুল হক, কোরিওগ্রাফি আমিনুল আশরাফ, পোস্টার ডিজাইন দেব্যেন্দু উদাস, রূপসজ্জা শিল্পী শুভাশীষ দত্ত তন্ময়, টিকেট ব্যবস্থাপনায় সৈয়দ লুৎফর রহমান, প্রচার ব্যবস্থাপনায় সৈকত নাসির ও কাজী সাইফ আহমেদ, প্রকাশনা ব্যবস্থাপনায় কানাই চক্রবর্তী ও বুলবুল আহমেদ, সেট ও প্রপস ব্যবস্থাপক রাজিব হোসেন, প্রযোজনা ব্যবস্থাপক ইকবাল চৌধুুরী, সহ মঞ্চ অধিকর্তা শিবলী সরকার, মঞ্চ অধিকর্তা কবির আহামেদ, প্রযোজনা  সমন্বয়ক মো: শাহনেওয়াজ, প্রযোজনা অধিকর্তা মীর জাহিদ হাসান ও সামগ্রিক তত্ত্বাবধানে আফজাল হোসেন।