শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১   ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

প্রতিদিন মধু এবং দারুচিনির গুঁড়ো খেলে কি হয় জানেন?

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০২:৪৫ পিএম, ২১ জুলাই ২০১৯ রোববার

শরীর সুস্থ রাখতে কে না চায়! অসুস্থ হয়ে পড়া কারো কাম্য নয়। কিন্তু জানেন কি? আপনার ছোট ছোট সচেতনতা কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি রোগ থেকে বাঁচাতে পারে। এই যেমন- অল্প পরিমাণে মধু এবং দারুচিনির গুঁড়ো খেলে আপনি অনেক বড় ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভবণা রয়েছে। 

কারণ এই দু’টি প্রাকৃতিক উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া শুরু করলে শরীরে থাকা নানাবিধ উপকারি এনজাইমের মাত্রা বাড়ে। পাশাপাশি শরীরে প্রবেশ ঘটে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানেরও। এছাড়াও অ্যামাইনো অ্যাসিড, নিয়াসিন, রাইবোফ্লবিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং আরো নানাবিধ উপাদানের ঘাটতি দূর হওয়ার কারণে একাধিক শারীরিক উপকার মিলবে। যেমন ধরুন... 

১. ব্লাডারের অন্দরে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করলে ব্লাডার ইনফেকশনের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। এই সময় যদি এক চামচ দারুচিনির গুঁড়োর সঙ্গে আধা চামচ মধু মিশিয়ে খাওয়া যায়, তাহলে শরীরে উপস্থিত সমস্ত ধরনের ক্ষতিকারক জীবাণু মারা পরে। ফলে সংক্রমণের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না।

 

২. দারুচিনি এবং মধুতে উপস্থিত একাধিক উপাকারি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে মুখ গহ্বরে উপস্থিত নানাবিধ ক্ষতিকর জীবাণুরা সব মারা পরে। ফলে মুখের গন্ধ দূর হয়।

 

মধু ও দারুচিনি

মধু ও দারুচিনি

৩. একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত মধু এবং দারুচিনি খেলে চুলের গোড়ায় পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়। ফলে চুল পড়ার মাত্রা কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে চুলের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পায়। 

৪. শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল বা এল ডি এল মাত্রা কমানোর মধ্যে দিয়ে হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে দারুচিনি এবং মধু বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, মধুতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্টের অন্দরে প্রদাহ কমায়। ফলে যেকোনো ধরনের হার্ট ডিজিজ হওয়ার আশঙ্কা কমে। 

৫. সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন পরিমাণ মতো দারুচিনি পেস্ট নিয়ে তাতে মধু মিশিয়ে যদি মুখে লাগাতে পারেন, তাহলে স্কিনের যেকোনো সমস্যা কমে যায়। সেইসঙ্গে বলিরেখা এবং বয়সের ছাপও কমতে থাকে। 

 

 

গরম পানির সঙ্গে দারুচিনি গুঁড়ো ও মধুর মিশ্রণ

গরম পানির সঙ্গে দারুচিনি গুঁড়ো ও মধুর মিশ্রণ

৬. বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে, নিয়মিত সকালে উঠে গরম জলে মধু এবং দারুচিনি মিশিয়ে খেলে শরীরে অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে মেদ ঝরার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। 

৭. নিয়মিত গরম জলে পরিমাণ মতো মধু এবং দারুচিনি পেস্ট মিশিয়ে খেলে জয়েন্টে প্রদাহ কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে হাড়ও শক্তপোক্ত হয়ে ওঠে। 

৮. মধুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট, যা শরীর থেকে টক্সিক উপাদানদের বের করে দিয়ে ক্যান্সার সেলের জন্ম নেয়ার আশঙ্কা কমায়। অন্যদিকে, দারুচিনিতে উপস্থিত অ্যান্টি-টিউমার প্রপাটিজ শরীরে কোথাও টিউমার হতে দেয় না। ফলে ক্যান্সার রোগ ধারে কাছে ঘেঁষার সুযোগই পায় না। 

৯. দারুচিনি এবং মধুতে এমন কিছু পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে যা শরীরে প্রবেশ করার পর একদিকে যেমন দাঁতকে শক্তপোক্ত করে, তেমনি মুখগহ্বরে উপস্থিত ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াদের মেরে ফেলে। ফলে কোনো ধরনের ডেন্টাস প্রবলেম মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। 

 

 

দারুচিনি গুঁড়ো

দারুচিনি গুঁড়ো

১০. নিয়মিত যদি পরিমাণ মতো দারুচিনির পেস্টের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন, তাহলে শরীরে এমন কিছু উপাদানের পরিমাণ বাড়তে থাকে যে ধীরে ধীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মারাত্মক শক্তিশালী হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে ক্লান্তিও দূর হয়। 

১১. বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত দারুচিনি এবং মধু খেলে পেটে উপস্থিত গ্যাস বেরিয়ে যায়। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতারও উন্নতি ঘটতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বদহজম এবং বুক জ্বালার মতো সমস্যা কমে যায়। 

১২. দারুচিনি এবং মধু এই দুই প্রকৃতিক উপাদান ইনসুলের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।