বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১   ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আদালতে মিন্নির দুই আবেদন নামঞ্জুর

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৩:০০ পিএম, ২২ জুলাই ২০১৯ সোমবার

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ও নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে নিয়ে আদালতে করা দুটি আবেদন আজও নামঞ্জুর করা হয়েছে। আবেদন দুটি হল আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহারের জন্য আদালতে তলব এবং হাসপাতালে নিয়ে তার উপযুক্ত চিকিৎসা দেয়া।

সোমবার দুপুরের দিকে এ আবেদন দুটি নামঞ্জুর করেন বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী। ১৬৪ ধারায় দেয়া মিন্নির জবানবন্দি প্রত্যাহারের জন্য তাকে আদালতে তলবের আজ বেলা ১১টার দিকে আবেদন করেন তার আইনজীবী ও জেলা বারের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. মাহবুবুল বারী আসলাম। এ সময় আইনজীবী মিন্নি অসুস্থ বলেও দাবি করে তাকে উপযুক্ত চিকিৎসা দেয়ার জন্য হাসপাতালে পাঠানোর আবেদন করেন। দুটি আবেদনই নামঞ্জুর করেন আদালত।

মিন্নির আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, রিফাত হত্যা মামলায় আমরা মিন্নির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহার চেয়ে আদালতে আবেদন করতে চাই। সেই আবেদন করতে হলে মিন্নির একটি স্বাক্ষর প্রয়োজন। এজন্য আমি মিন্নিকে আদালতে তলব করার আবেদন জানাই। কিন্তু এই স্বাক্ষর জেলহাজতে থাকা অবস্থায় জেলারের মাধ্যমে নেয়া সম্ভব জানিয়ে আবেদনটি নামঞ্জুর করেন আদালত।

 

তিনি আরো বলেন, মিন্নি অসুস্থ, তার চিকিৎসা প্রয়োজন। মিন্নির সুচিকিৎসার আবেদন জানিয়ে আদালতে আরেকটি আবেদন করেছিলাম। কিন্তু মিন্নির যেকোনো ধরনের চিকিৎসা কারা কর্তৃপক্ষ দিতে বাধ্য জানিয়ে এ আবেদনটিও নামঞ্জুর করেছেন আদালত। এর আগে গতকাল রোববার আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত।

প্রসঙ্গত, ১৬ জুলাই মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বরগুনার মাইঠা এলাকার বাবার বাসা থেকে মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তার বক্তব্য রেকর্ড করতে বরগুনা পুলিশ লাইনসে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টায় মিন্নিকে রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। পর দিন মিন্নিকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে তার পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। আদালত মিন্নির পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।

পরদিন বৃহস্পতিবার বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে জানান, মিন্নি তার স্বামী রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এ হত্যার পরিকল্পনার সঙ্গেও তিনি যুক্ত ছিলেন। এরপর শুক্রবার বিকালে মিন্নি একই আদালতে তার স্বামী রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

 

এর আগে গত ২৬ জুন সকাল ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। সেদিনই বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

এ হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। হত্যাকাণ্ডের পরের দিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বরগুনা থানায় ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ ছাড়া সন্দেহভাজন অজ্ঞাতনামা আরো চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়। এ মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। মামলার এজাহারভুক্ত ছয় আসামিসহ এ পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে ১৪ জনই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।