বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১   ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সিটিজেন চার্টার অনুযায়ী সেবা, মনিটরিংয়ের আহ্বান রাষ্ট্রপতির

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৮:১১ এএম, ২৪ জুলাই ২০১৯ বুধবার

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, প্রায় সব কার্যালয়েই আকর্ষণীয় ডিজাইনের সিটিজেন চার্টার টানানো থাকে, কিন্তু চার্টার অনুযায়ী সেবা প্রত্যাশীরা সেবা পাচ্ছে কি না তা মনিটরিং করতে হবে। সেই সঙ্গে তদবির ছাড়াই যে সরকারি সেবা পাওয়া যায়, সে আস্থা জনমনে তৈরি করতে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জনপ্রশাসন পদক ২০১৯’ প্রদান অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, সরকারি অনেক সংস্থা থেকেই জনগণকে স্বচ্ছতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে সেবা দেয়া হয়ে থাকে। কিন্তু সেবা প্রত্যাশীদের মাঝে এ সেবা পাওয়ার ব্যাপারে আস্থাহীনতা কাজ করে। তাই কোনো রকম তদবির বা যোগাযোগ ছাড়াই যে সরকারি সেবা পাওয়া যায় জনমনে সে আস্থা তৈরি করতে হবে।

 

আবদুল হামিদের মতে, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী ও জনগণের মধ্যে আস্থার সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, সামাজিক বিভিন্ন ইস্যুতে অস্থিরতা তৈরি করে সুযোগসন্ধানীরা যাতে কোনো ধরনের ফায়দা লুটতে না পারে সে ব্যাপারে কর্মকর্তাদের সচেতন থাকতে এবং তৃণমূল পর্যায়েও ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সরকারি কর্মকর্তাদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাদের প্রকল্প বাছাইয়ের ক্ষেত্রে জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

‘গ্রামগঞ্জে দেখা যায়, অপরিকল্পিত রাস্তাঘাট ও ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণের ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। অনেক সময় নির্মাণ কাজের মান এতটাই খারাপ হয় যে কাজ শেষ না হতেই আবার মেরামতের প্রয়োজন হয়। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’

তিনি আরো বলেন, জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য সরকার অনেক উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে আরো অনেক কাজ করতে হবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতির পিতার আজীবনের লালিত স্বপ্ন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত স্বনির্ভর বাংলাদেশ বাস্তবায়নে স্বচ্ছ, দক্ষ ও জবাবদিহিমূলক জনপ্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা খুবই জরুরি।

 

 

 

তিনি জানান, দুর্নীতির বিরুদ্ধে বর্তমান সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণপূর্বক সিভিল সার্ভিসের সংস্কার এবং সরকারি সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে নতুন নতুন কৌশল উদ্ভাবন করতে প্রশংসনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

‘বৃটিশরা পাক-ভারত উপমহাদেশে প্রশাসন ব্যবস্থা চালু করেছিল উপমহাদেশকে শাসন করতে এবং এ দেশের ধনসম্পদ শোষণ করার লক্ষ্যে। তখন প্রশাসনের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল উপমহাদেশে তাদের শাসন কায়েম রাখা ও শোষণ নীতি বজায় রাখা। জনকল্যাণ ছিল গৌণ লক্ষ্য,’ জানিয়ে তিনি বলেন, এখন আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক। এখন প্রশাসনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে জনগণকে সেবা দেয়া। তাই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের সনাতন দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনার বিকল্প নেই।

সব স্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়ে রাষ্ট্রপতি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, তা হলেই সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড টেকসই ও অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে। মনে রাখবেন, জনগণের জন্য প্রশাসন, প্রশাসনের জন্য জনগণ নয়।

 

বিগত বছরে এবং এবার যারা জনপ্রশাসন পদক পেয়েছেন তাদের সবাইকে অভিনন্দন জানান রাষ্ট্রপতি।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত মন্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়েজ আহম্মদ।