ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে কি করবেন?
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৮:১৬ এএম, ২৪ জুলাই ২০১৯ বুধবার
চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জানুয়ারি থেকে মে) রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ৩২৪। কিন্তু জুনে এক লাফে এর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৫ গুণ অর্থাৎ ১ হাজার ৭৫০ জনে দাঁড়ায়। আর চলতি মাসে এসে আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে ফেলেছে এ রোগ।
ঢামেক সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত এ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন মোট এক হাজার ৬৪ জন। যাদের মধ্যে ৯১১ জন ভর্তি হয়েছেন গত ২২ দিনে। এছাড়া জানুয়ারিতে তিনজন, ফেব্রুয়ারিতে শূন্য, মার্চে চারজন, এপ্রিলে তিনজন, মে মাসে আটজন, জুনে ১৩৫ জন ভর্তি হয়েছেন। তবে জুলাইয়ের ২২ দিনে এক লাফে এ সংখ্যা ৯১১-তে উন্নীত হয়েছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আরো বাড়বে।
ভয়াবহ আকার ধারন করা এ রোগ হলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করান। অনেক সময় রক্তপাত হলে, রক্ত দিতে হয়। তাই অবস্থা আশঙ্কাজনক হবার পূর্বেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
যেনে নিন ডেঙ্গু জ্বরের কিছু উপসর্গ
জ্বর ১০১ থেকে ১০৫ পর্যন্ত পর্যন্ত উঠে যেতে পারে। জ্বর সাধারণত এক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হতে পারে। আবার সব সময় উচ্চমাত্রার জ্বর নাও থাকতে পারে। জ্বর ভালো হওয়ার পর থেকে ব্রণের মতো লালচে র্যাশ বের হতে পারে। র্যাশ অনেকের শরীরে ঘামাচি দানার মতোও হয়। এ বছর রোগীদের শরীরে ঘামাচির মতো লালচে দানা গতবারের তুলনায় কম।
পুরো দেহের হাড়ে বা জয়েন্টে জয়েন্টে ভয়ানক ব্যথা হয়। হাড় ভেঙে যাওয়ার মতো পুরো শরীরে ব্যথা হয়। এর সাথে রোগীর খুব দুর্বল লাগে। পানিশূন্যতা হতে পারে।
খাবারে অরুচি, বমি বমি ভাব, পেটে ব্যথা, অ্যাসিডিটিও থাকতে পারে। অনেকের বমির পরিমাণ বেশি হয়। খাবারে গন্ধ লাগে।
ডেঙ্গু জ্বর ভয়ানক খারাপ পর্যায়ে চলে গেলে ব্লাড প্রেশার দ্রুত কমতে থাকে। রোগী শকে পর্যন্ত চলে যায়। হৃৎপিণ্ড, লিভার, কিডনি ফেইলর হয়ে রোগী মারাও যায়। ডেঙ্গু জ্বরের এ খারাপ অবস্থাকে বলে “ডেঙ্গু শক সিনড্রোম।” এ অবস্থায় রক্তপাতও হয়। নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত পড়া, মলের সাথে রক্ত, বমির সাথে রক্ত যেতে পারে।
এই জ্বরে প্লাটিলেট (রক্তের জরুরি অংশ) দ্রুত কমে যায়। দেহের লবণ পানির অসামঞ্জস্য ঘটে। হৃৎপিণ্ড দ্রুত ওঠানামা করে।
কিভাবে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন
ডেঙ্গু জ্বরের জন্য দায়ী এডিস মশা নোংরা পানিতে বাসা বাঁধে। তাই পুরনো যেসব জিনিসে পানি জমতে পারে, যেমন- ফুলদানি, ফুলের টব, এসি ফ্রিজের পেছনের অংশ, বাথরুমে বালতি বা হাঁড়িতে, কমোডের আশপাশে যেন পানি জমে না থাকে সেই চেষ্টা করতে হবে।
বাসার চারপাশে মশাবিরোধী নেট, ঘরের কোণায় মশানিরোধক যন্ত্র ব্যবহার করবেন। জানালার কার্নিশে অনেক সময় ময়লা ভাঙাচোরা জিনিসে যেন পানি জমে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে।
শিশুর জ্বরের মাত্রা কমানোর জন্য বার বার ভেজা কাপড় দিয়ে স্পঞ্জ করতে হবে। তরল খাবার ফলের রস বেশি করে খেতে হবে। জ্বরের মাত্রা বেশি হলে শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।
প্লাটিলেটের মাত্রা কতোটা কমে গেছে তা নির্ণয় করতে হবে (সিবিসি/রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে)।
দেহের কোথাও র্যাশ ঘা হয়েছে কিনা, অবশ্যই খেয়াল রাখবেন। শিশুর নাক, মুখ, মল, বমি দিয়ে রক্ত যাচ্ছে কিনা, পর্যবেক্ষণ করবেন।
অবস্থা খারাপ মনে হলে, শিশুকে বাসায় না রেখে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করান। অনেক সময় রক্তপাত হলে, রক্ত দিতে হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ার আগেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ছোট বা বড় কারো ক্ষেত্রেই ডাইক্লোফেনাক ব্যবহার করা যাবে না। তবে প্যারাসিটামল ব্যবহার করা নিরাপদ।