শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১   ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কাশেমীর পোষ্টারে নেই খালেদা-তারেক, ক্ষোভ বিএনপির তৃণমূলে

নারায়নগঞ্জ প্রতিনিধি

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৪:১৭ পিএম, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮ শুক্রবার

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে ধানের শীষ প্রতীক দিয়ে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা মনির হোসেইন কাশেমীকে মনোনয়ন দেয়া হলেও তার নির্বাচনী পোষ্টারে নেই তারেক ও খালেদা জিয়ার ছবি।

এই আসনে সাবেক সাংসদ গিয়াস উদ্দিন, বিএনপি নেতা শাহ আলম, মামুন মাহমুদসহ রাজনীতির মাঠ কাঁপানো বিএনপির হেভীওয়েট প্রার্থীদের বাদ দিয়ে  ধানের  শীষ প্রতীক দিয়ে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী করা হয় মনির হোসেইন কাশেমীকে।

নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় না নামতেই এবার তিনিই জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের ছবি বাদ দিয়ে নির্বাচনী পোষ্টার ছাপিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের চক্ষুশূল হয়েছেন কাশেমী। তাঁর এমন আচরণে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে বিএনপির শীর্ষ নেতা ও তৃণমূল কর্মীরা।

ক্ষুদ্ধ হয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জোটের স্বার্থে আমাদের হেভীওয়েট প্রার্থীদের বাদ দিয়ে যখন কাশেমীকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিলো এ নিয়ে আমরা টু শব্দটুকু পর্যন্ত করিনি।

গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে, চেয়ারপারসনকে বন্দীদশা থেকে মুক্ত করে আনতে এবং ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফেরাতে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীকে জেতাতেই নির্বাচনের মাঠে মনোনিবেশ করছিলাম। অথচ তিনি আমাদের মার্কা ব্যবহার করে  আমাদের দল কিংবা নেত্রী কাউকেই নির্বাচনী পোষ্টারে স্থান দেননি। এমন প্রার্থীর পক্ষে কি করে বিএনপির সবাই একত্রিত হতে পারে?

বিএনপির শীর্ষ নেতারা উদাহরণ টেনে বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-২ আসনে (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী করা হয় খেলাফতে মজলিসের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আল্লামা আব্দুল বাছিত আজাদকে।

তিনি তাঁর নির্বাচনী প্রচারণার পোষ্টারে ঠিকই বিএনপি চেয়ারপারসনের ছবি ব্যবহার করেছেন। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী কাশেমী বেগম জিয়ার ছবি ব্যবহার না করার কারণ কি? এতে রুষ্ঠ হয়েছে বিএনপির তৃণমূল। ঐক্যফ্রন্ট করার মূল টার্গেটই ছিলো বেগম জিয়ার মুক্তি। এই দাবিতে জোট হয়েছে। কিন্তু কাশেমী সাহেব প্রচারণায় না নামতেই সেসব বেমালুম ভুলে গিয়েছেন।

এদিকে প্রতীক বরাদ্দের দিন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী মনির হোসেইন কাশেমী জানিয়েছিলেন, বিএনপির সকল নেতাকর্মীদের সাথে তার যোগাযোগ হয়েছে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে নিয়ে তিনি প্রচার-প্রচারণায় নামবেন।

এখন প্রশ্ন উঠেছে, তিনি কোন বিএনপি নেতাদের সাথে যোগাযোগ করে এমন নির্বাচনী পোষ্টার ছাপিয়েছেন। যেই পোষ্টারে বিএনপির প্রতীক স্থান পেলেও দলটির কোন নেতা, নেত্রীর স্থান হয়নি।  তিনি এমন কাজ করে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছেন বলে মত বিএনপির তৃণমূল কর্মীদের।

ঐক্যফ্রন্টের প্রতি সমর্থন জানিয়ে দলের উপর আস্থা রেখে স্বতন্ত্র পার্থী হিসেবে মনোননয়নপত্র জমা দিয়ে প্রত্যাহার করে নেয়া গিয়াস উদ্দিনও তাঁর উপরে ভরসা করেছিলেন। এমন বিশ্বাসের এই প্রতিদান দিলেন কাশেমী।

বিএনপির তৃণমূল জানায়, কোথাকার কোন কাশেমীকে এনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী করা হয়েছিলো আমরা কিছু বলিনি। তাঁর পক্ষে কাজ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। অথচ কাশেমী সবকিছুতে শুরুতেই জল ঢেলে দিলেন। তৃণমূল বিএনপি কাশেমীর এমন দৃষ্টতায় অনেক ব্যথিত হয়েছে।

তিনি যতক্ষণ না পর্যন্ত তাঁর এমন কাজে অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চাইবেনা, বিএনপি চেয়ারপারসনের ছবি দিয়ে পুনরায় পোষ্টার না ছাপাবেন ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁর পক্ষে কোন প্রচারণায় নামবেনা বিএনপির তৃণমূল।