নিজের জীবনের যে বিষয়গুলো গোপন রাখা উচিত
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০১:৫২ পিএম, ৩১ জুলাই ২০১৯ বুধবার
দৈনন্দিন জীবনের কিছু কিছু বিষয় অবশ্যই গোপন রাখা উচিত। সব গোপন কথা প্রকাশ করলে জীবন আরো জটিল হয়ে উঠবে। ব্যাপারগুলো খুবই সামান্য মনে হলেও তা গোপন থাকাটাই ভালো। কারণ সবাই আপনাকে উৎসাহ দেবে এমনটা নয়। উৎসাহ দেয়ার পরিবর্তে ক্ষতি করার চেষ্টাই থাকে অনেকের। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক কোন বিষয়গুলো গোপন রাখাটা মঙ্গলজনক হতে পারে-
ভবিষ্যত পরিকল্পনা
আপনার উচ্চাকাঙ্ক্ষী ভবিষ্যত পরিকল্পনা বন্ধুদের জানাতে চান। বন্ধুদের পাশে পাওয়া যাবে, তারা সহযোগিতা করবে এই প্রত্যাশায়। কিন্তু সবসময়ই যে তাদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাবেন এমন ভাবনা মন থেকে মুছে ফেলাটাই ভালো। কেউ কেউ আপনাকে আপনার লক্ষ্য থেকে পিছনে টেনে আনতে চাইবে, কেউ নেতিবাচক কথা বলবে। কেউবা বলেই বসবে আরে তোমাকে দিয়ে এ কাজ হবে না। এ অনেক কঠিন কাজ। শেষমেষ সামনে এগিয়ে যাওয়ার যে সাহস আর আত্মবিশ্বাস অর্জন করেছিলেন সেটাও হারাবেন।
বন্ধুদের গোপন তথ্য
আপনার কোনো বন্ধু বিশ্বাস করে যে গোপন কথা আপনাকে বলেছে সেটাকে কানের কুঠুরিতে বন্ধ করে রাখাটাই মঙ্গলজনক। বন্ধুর গোপন কোনো কথা অন্যদের জানাবেন না বা আলোচনা করবেন না। এতে বন্ধুত্বের সম্পর্কে চিড় ধরতে এক পলক সময় ও লাগবে না। সেই সঙ্গে বন্ধুর কাছে বিশ্বাসযোগ্যতার জায়গাটাও হারাবেন। এছাড়া কারো সম্পর্কে কোনো কথা শোনার পর তার সত্যতা যাচাই না করে সেই কথা নিয়ে আলোচনা করবেন না, বা সবাইকে বলে বেড়াবেন না যে, সে এমন কাজ করেছে।
পারিবারিক সমস্যা
পরিবারের গুরুত্ব সবার উর্ধ্বে। সঙ্গিনীর সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে? কিংবা পরিবারের কারো ডিভোর্স হয়েছে? এমন সব কথা পরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধা থাকাটা ভালো। পারিবারিক সমস্যা নিয়ে অন্যের সঙ্গে কথা বললে পারতপক্ষে সাময়িক সময়ের জন্য সমবেদনা বা সহানুভূতি মিললেও আপনি সেই ব্যক্তির কাছে দুর্বল হয়ে গেলেন। পারিবারিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা মূলত এর মাত্রাকে আরো বাড়িয়ে দেয়। আপনার সঙ্গীর সবকিছু আপনার ভালো নাই লাগতে পারে। বা আপনি তার কোনো কাজে বিরক্ত। সেটা নিজেদের মধ্যেই রাখুন। বাইরের মানুষের সামনে সে বিষয়কে প্রকাশ করলে আপনার সঙ্গীকে হেনস্তার শিকার হতে হবে।
ব্যক্তিগত সম্পর্ক
প্রেমিক বা প্রেমিকার কথা বন্ধু সহকর্মীর কাছে প্রকাশ করে বেশ গর্ববোধ করা যায়। কিন্তু নিজের ব্যক্তিগত জীবন বিস্তারিত আলোচনা বাজে অভ্যাস। এই অভ্যাসের দরুন প্রিয় মানুষটির সঙ্গে সম্পর্ক ধ্বংস হতে পারে।
দানশীলতা
অসহায় মানুষের দুঃখ-কষ্টে আপনি সাধ্যমত তাদের সাহায্যে কাজ করে যান, তাদের মুখে হাসি ফুটাতে চান। কিন্তু আপনার এই মানবপ্রেমমূলক কাজের কথা সবাইকে বলে বেড়ানো থেকে বিরত থাকা উচিত। কেননা এটা তাদের দায়িত্ব জ্ঞানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তাছাড়া মানুষ ভাববে আপনি লোক দেখানোর জন্য এই কাজ করছেন। তাই নিজের জনসেবামূলক কাজকে বেশিমাত্রায় প্রকাশ না করাটাই ভালো।
আর্থিক অবস্থা
আপনার অর্থনৈতিক অবস্থা, টাকা-পয়সার পরিমাণ কিংবা ব্যাংকে আপনার জমাকৃত সম্পদের পরিমাণ অন্যের কাছে প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকুন। অর্থনৈতিক সমতার ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে সম্পর্কের সৃষ্টি হয় না। আপনি যদি বন্ধুদের মধ্যে আপনার অর্থ উপার্জন নিয়ে আলোচনা শুরু করে দেন তাহলে সেটা শেষ পর্যন্ত কে কত বেশি টাকা ইনকাম করতে পারে এমন প্রতিযোগিতায় নেমে যাবে। আর এর ফলাফল হিসেবে বন্ধুরা আপনার অর্থ উপার্জন এর জন্য হিংসা করবে। ফলে বন্ধুত্বের সম্পর্কটাও হারাবে। এরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন না হতে চাইলে আপনার অর্থ উপার্জন ও অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা করা থেকে বিরত থাকুন।
জীবনযাপন
ঈর্ষান্বিত হয়ে পরিচিতরা আপনার স্বাস্থ্যকর ডায়েটের পথে বাধা হয়ে দাড়াতে পারে। আপনার ইতিবাচক জীবনযাপন নিয়ে বেশি আলোচনা করলে সেটা এমন সব লোকের মনযোগের কারণ হবে যারা আপনার সুস্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তিত নয়। আর তাদের কারণে হয়তো আপনার সুস্থ থাকার রাস্তাটাও বদলে যেতে পারে।
আরো একটি ব্যক্তিগত বিষয় যেটি নিয়ে অন্যের সঙ্গে আলোচনা থেকে বিরত থাকা জরুরি, সেটি হল ধর্মীয় বিশ্বাস। এটি খুবই স্পর্শকাতর একটি বিষয়। কেননা মতনৈক্য কারণে অশান্ত ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।