এই ভূতুড়ে জঙ্গলে নিরুদ্দেশ বহু মানুষ, কখনো ফিরে নি
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০২:০৩ পিএম, ৩১ জুলাই ২০১৯ বুধবার
রহস্যে ঘেরা এক অরণ্য ‘হোয়া বাচু’। অতিপ্রাকৃতিক কার্যকলাপ, অপ্রত্যাশিত ঘটনার ফলে যা এরই মধ্যে পৃথিবীর সবচেয়ে ভূতুড়ে জঙ্গলের তকমা পেয়েছে।
রোমানিয়ার ট্রান্সসিলভানিয়ার ক্লাজ নাপোকা শহরে প্রায় ২৫০ হেক্টর জায়গাজুড়ে দাঁড়িয়ে আছে এ জঙ্গল। অনেক বছর আগে এক মেষপালক প্রায় ২০০ ভেড়া চড়াতে ওই বনে প্রবেশ করে, কিন্তু আর কখনোই ফিরে আসেনি তারা। জঙ্গলের গোলকধাঁধায় কোথায় যে হারিয়ে গেছে তা কেউ জানে না।
১৯৬০ সালে প্রথমবারের মতো এ অরণ্য বিশ্ববাসীর নজরে আসে। জীববিজ্ঞানী আলেকজান্দ্রু সিফট আকাশে ডিম্বাকৃতি কিছু উড়ে যেতে দেখেন। সেই বস্তুটির ছবিও তোলেন তিনি। ১৯৬৮ সালে এমিল বার্নিয়া নামে সেনাবাহিনীর এক টেকনিশিয়ানও ইউএফওর (অশনাক্ত উড়ন্ত বস্তু) মতো এক ‘সসার’ জঙ্গলের ওপর দিয়ে উড়ে যেতে দেখেন বলে দাবি করেন।
এ ঘটনায় হতবাক হয়ে এমিল আশপাশের গ্রামের মানুষের কাছে জানতে চাইলে তারাও জানায়, মাঝেমধ্যেই তীব্র গোলাকার আলোর বলয় ঊর্ধ্বাকাশে যেতে দেখেছে। পরবর্তীকালে যারাই এ জঙ্গলে গিয়েছে তাদের প্রায় প্রত্যেকেই মাথাঘোরা, গায়ে ফোসকা পড়া, শরীরের বিভিন্ন স্থান পুড়ে যাওয়ার মতো বিভিন্ন অস্বাভাবিক ঘটনার শিকার হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন পরীক্ষা করে দেখেছেন, এ বনে অস্বাভাবিক মাত্রায় তেজস্ক্রিয় বিকিরণ হয়ে থাকে। এ ছাড়া এখানে চুম্বকীয় ও তড়িত্চুম্বকীয় ক্ষেত্রের বেশ কিছু বিচ্যুতি আছে। এ জঙ্গলে এমন একটি জায়গা আছে, যেখানে কোনো দিন কোনো গাছ অথবা লতা-গুল্ম জন্মাতে দেখা যায়নি।
বিজ্ঞানীরা এখানকার মাটি নিয়েও পরীক্ষা করে দেখেছেন। তবে মাটিতেও এমন কোনো অস্বাভাবিকতা চোখে পড়েনি, যা গাছ জন্মানোর পরিপন্থী। স্থানীয় বাসিন্দারা ওই বিশেষ জায়গাটিকে ভূতুড়ে ঘটনার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তাদের ধারণা, কোনো অশরীরী কিছু বা অতৃপ্ত আত্মার বাস আছে ওই জায়গায়।
জনশ্রুতি আছে, অনেক বছর আগে কিছু চাষিকে অন্যায়ভাবে এ জঙ্গলে হত্যা করা হয়েছিল। তাদের অতৃপ্ত আত্মাই এ বনের আনাচকানাচে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বনের গাছের ফাঁকে ফাঁকে তাই কান পাতলেই শোনা যায় নারীর কান্নার আর্তনাদ, হাসির আওয়াজ।
উত্তর খুঁজতে অনেক বিজ্ঞানী নিরন্তর গবেষণা চালিয়েছেন। কারো মতে, এসব মানুষের আজগুবি কল্পনা। আবার কেউ কেউ বনের গহিন দেখেছে ছায়ামূর্তি, চাপা ফিসফাস। তবে আজো সারা দুনিয়ার চোখে ভূতুড়ে হয়েই আছে ট্রান্সসিলভানিয়ার এ জঙ্গল।