মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১   ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ঘুমন্ত মাকে ছোবল মেরে ছেলের গলা পেঁচিয়ে ধরলো সাপ

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০২:৩৫ পিএম, ৩১ জুলাই ২০১৯ বুধবার

দেড় বছরের ঘুমন্ত এক শিশুর গলা জড়িয়ে ফণা তুলেছিল একটি বিষাক্ত সাপ। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে সাপের ছোবল খান বাবাও। পরে প্রতিবেশীরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পর বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন শিশুর মা। ফলে তাকেও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে জানা যায়, মাকেই আগে ছোবল মেরেছিলো সাপটি, পরে গিয়েছিল ঘুমন্ত শিশুর কাছে।

ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের ঝাড়গ্রামের বেলিয়াবেড়া জেলায়। সাপের দংশন খেয়ে বর্তমানে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন মোহন ও শিখা হেমব্রম নামের ওই দম্পতি এবং তাদের দেড় বছরের ছেলে মানিক। 

তবে হাসপাতালে আনতে দেরি হওয়ায় শিশুটির মা শিখার অবস্থা আশঙ্কাজনক। সাপে কাটা মায়ের স্তনপান করায় শিশু মানিককেও নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

 

চৈনিশোল গ্রামের বাসিন্দা মোহন (২৭) জানান, প্রতিদিনের মতো সোমবার রাতে খাওয়াদাওয়ার পর দুই ছেলেকে নিয়ে শুতে গিয়েছিলেন তারা। টাঙিয়েছিলেন মশারিও। হেমব্রম দম্পতির বড় ছেলে তিন বছরের সাগুন ও ছোট ছেলে মানিক শুয়েছিল বাবা-মায়ের মাঝখানে। আর মাঝরাতে ঘরে ঢুকে বিষাক্ত সাপটি।

এরপরের অবস্থার বর্ণনা দিতে গিয়ে মোহন বলেন, মাঝরাতে স্ত্রীর চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায়। উঠে দেখি স্ত্রী ভয়ে কাঁপছে। অঘোরে ঘুমোচ্ছে সাগুন ও মানিক। মানিকের গলা পেঁচিয়ে ফণা তুলে আছে একটা সাপ।

ছেলেকে বাঁচাতে সাপের মাথা চেপে ধরতে যান মোহন। তখনই তাকে ছোবল মারে সাপ। এসময় তার চিৎকারে জড়ো হন প্রতিবেশীরা। তারাই সাপ মেরে মোহনকে নিয়ে যান হাসপাতালে।

ভোরের দিকে শিখার পেট ও গলা ব্যথা করতে থাকে। শিখার পরিজনেরা দুই নাতি ও বউমাকে নিয়ে হাসপাতালে যান। শিখাকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ)-এ ভর্তি করানো হয়। হাসপাতালের সুপার মলয় আদক বলেন, ৭২ ঘণ্টা না কাটলে তিনজন সম্পর্কে কিছু বলা সম্ভব নয়। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা চলছে।

 

মোহনের এক প্রতিবেশী জানান, শিখাকে যে সাপে কামড়েছে সেটা ঘুণাক্ষরেও কেউ বুঝতে পারিনি। তাই শিখাকে হাসপাতালে আনতে দেরি হয়ে যায়।

এ ঘটনা সম্পর্কে পশ্চিমবঙ্গের কেশপুর কলেজের প্রাণিবিজ্ঞানের বিভাগের প্রধান সুমন প্রতিহার জানান, সম্ভবত সাপটি ‘কালাচ’ (কমন ক্রেট)। এই সাপ মূলত ঘুমন্ত মানুষকে ছোবল মারে। 

আক্রান্ত ব্যক্তি অনেক সময় বুঝতেই পারেন না যে তাকে সাপে ছোবল মেরেছে। পরে শুরু হয় পেট ব্যথা, গলা ব্যথা কিংবা সারা শরীর জুড়ে অস্বস্তি। সময়মতো চিকিৎসা শুরু না হলে সাপে কাটা ব্যক্তি মারা যায়।