দেহের উপকারে তিল
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৩:৩০ পিএম, ৪ আগস্ট ২০১৯ রোববার
প্রাচীনকাল থেকেই তিল ও তিলের তেল মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয়। বিভিন্ন ধরনের খাদ্যে ব্যবহৃত হয়ে আসছে তিল। নাড়ু, মোয়া, খাজা ইত্যাদি মিষ্টি জাতীয় খাবার তৈরি করা হয় এটি দিয়ে। এর মধ্যে তিলের খাজার ব্যাপক প্রচলন রয়েছে। তাছাড়া আয়ুর্বেদী চিকিৎসায় আদিকাল থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে এই তিল।
এটি দেহের পুষ্টির সমস্যা দূর করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই সুস্থ থাকার জন্য তিল ও তিলের তেল কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেই সম্পর্কে আমাদের সবার জানা প্রয়োজন।
এবার তা জেনে নিন :
১. প্রতিদিন ভোরে এক চামচ কালো তিল অল্প অল্প করে মুখে দিয়ে মিহি করে চিবিয়ে যখন রসের মতো হয়ে যাবে তখন গিলে খেতে হবে। এই তিল খাওয়ার তিন ঘণ্টা পর্যন্ত কিছু খাওয়া যাবে না। তবে রুগ্নি দেহ থেকে স্বাস্থ্যবান হবেন। আর যারা মোটা তাদের মেদ কমে যাবে।
২. যাদের শরীরের বৃদ্ধি ঘটে না, তাদের শারীরিক বৃদ্ধির জন্য তিল খুবই উপকারী।
৩. যদি কারও মাড়ি থেকে দাঁত দুর্বল হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে তিলের মাধ্যমে দুর্বল দাঁত মজবুত করা সম্ভব।
৪. বুকে কফ জমে যাওয়া অসুখে কালো তিলের তেল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি সর্দি, কাশির জন্য দ্রুত কাজ করে এবং ফলাফলও খুব ভালো দেয়।
৫. অনেকেরই অকালে চুল পেকে যায় এবং দুর্বল হয়ে চুল পড়েও যায়। তাদের এই সমস্যা নিরসনে কালো তিলের প্রয়োজন। এই তিলের তেল প্রয়োগ করলে খুব উপকার পাওয়া যায়। এমনকি চুল গজাতেও সাহায্য করে।
৫. শরীরের ক্লান্তি দূর করে এবং সব ইন্দ্রিয়ের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে তিল।
৬. তিলের তেল শরীরের রং উজ্জ্বল করে এবং শরীরের ছোট ছোট দোষত্রুটি দূর করে দেয়।
৭. এটি মাথাব্যথা কমিয়ে দেয় এবং বুদ্ধিবৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
৮. তিল, যব, চিনি একত্রে চূর্ণ করে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে যাদের বাচ্চা হবে আর যাদের বাচ্চা হয়েছে তাদের রক্তস্রাব বন্ধ হবে।
৯. যেসব শিশু রাতে বিছানায় প্রস্রাব করে তাদের কালো তিল আর তার সঙ্গে এক টুকরো মুলা খাওয়ালে ওই বদ-অভ্যাস দূর হবে।
১০. শরীরের পুড়ে যাওয়া জায়গায় তিল পিষে ঘি ও কর্পূর মিশিয়ে প্রলেপ দিলে সুফল পাওয়া যায়। তিলের তেল গরম করে লাগালেও আশ্চর্য সুফল পাওয়া সম্ভব।
১১. যদি শরীরের কোন অংশে খুব জ্বালা করতে থাকে তাহলে তিল দুধ দিয়ে পিষে প্রলেপ দিলে দাহ বা জ্বালা দূর হবে।
১২. যদি কোন ক্ষত বা ঘা না সারে তাহলে তিল পিষে নিয়ে মধু আর ঘি মিশিয়ে লাগালে অনেক ওষুধ বা মলমের চেয়ে বেশি কাজ করবে।
১৩. পেষা কালো তিল এক ভাগ, চিনি দু’ভাগ এবং ছাগলের দুধ একসঙ্গে মিশিয়ে খেলে রক্ত-আমাশা দূর হবে।
১৪. যেসব মেয়েদের ঋতুস্রাব নিয়মিত নয় কিংবা খুব ব্যথা-বেদনা হয় তাদের তিলের তেল খাওয়া উচিত। দুই চা চামচ তিল পিষে নিয়ে এক গ্লাস পানি মিলিয়ে ফুটাতে দিন। এক চতুর্থাংশ হলে নামিয়ে ঠান্ডা করে সেই পানিটুকু পান করলে মাসিক ঠিক মতো হবে।
১৫. শীতকালে হাত-পা ফাটা এমনকি গাল বা ঠোঁটেও তিলের তেল লাগালে উপকার পাওয়া যায়।
১৬. রসুন দিয়ে গরম করা তিল তেলের ফোটা কানে দিলে কানের ব্যথা সেরে যায়। এই তেল বাতের ব্যথা অর্থাৎ বাতও সারিয়ে দেয়।
১৭. তিল পিষে নিয়ে মাখনের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে অর্শ্বের রক্তপড়া ও কষ্ট কমে যায়।
উপরোক্ত দিকগুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রত্যেকেরই তিল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত।