সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

যেভাবে বুঝবেন সন্তান মাদকে জড়াচ্ছে

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৩:৩১ পিএম, ৪ আগস্ট ২০১৯ রোববার

সন্তান বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বা-বাবার চিন্তার শেষ নেই। বিশেষ করে বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছলে তা আরও বেড়ে যায়। সন্তান বয়ঃসন্ধিতে পড়লে তাদের আচার-ব্যবহারে বদল আসে। এজন্য তাদেরকে বোঝা একটু কঠিন হয়ে পড়ে। আর এ সময়টাতেই সন্তান মাদকে জড়িয়ে যেতে পারে।

শিশুরা মন খুলে কথা বলার মানুষ পায় না পরিবারের মধ্যে। একাকিত্বও গ্রাস করতে পারে তাদের। তা থেকে নানা রকম মাদকদ্রব্যের শিকার হয় কিশোর-কিশোরীরা। তাই সন্তানের এই স্খলন রুখতে সবার আগে সচেতন হতে হবে অভিভাবককে।

 

মনোবিদদের মতে, মাদক ও নেশার কবলে পড়া শিশুদের আচরণগত কিছু ফারাক ঘটে। অনেক সময় সন্তান বড় হয়ে গেলে তার খুঁটিনাটির প্রতি খেয়াল রাখতে পারেন না অভিভাবকরা। আর সেই ফাঁকেই ঘাঁটি গাড়ে নেশার চারা। 

মনোবিদরা বলছেন, কিছু লক্ষণ দেখলেই সচেতন হোন। কেউ কেউ বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে প্রথমে কৌতূহলের বশে মাদকের স্বাদ নিতে শুরু করে কিন্তু পরে আর নিজেদের সামলাতে পারে না। 

যেসব লক্ষণে বুঝবেন সন্তান নেশায় জড়িয়েছে :

* সন্তানের মন-মেজাজের দিকে খেয়াল রাখুন। কথায় কথায় বিরক্তি বা রাগ দেখাচ্ছে কি না কিংবা খুব মুড সুইং হচ্ছে? তা হলে সচেতন হোন। হতেই পারে মাদক থেকে তৈরি হওয়া সমস্যার কারণে হয়তো এমনটা ঘটছে না। তবু সতর্ক থাকার সময় সবটুকুর জন্যই থাকতে হবে।

* খাওয়া-দাওয়া ও ঘুমের সময়ের উপর নজর রাখুন। ঠিকঠাক খাওয়া-দাওয়া না করা বা সারা রাত জেগে থাকা, বাইরে থেকে নেশা চোখে বাড়ি ফেরা, হঠাৎ অবিন্যস্ত কথা বলা-এসব দেখলে সতর্ক হোন।

 

* কোচিংয়ে যাচ্ছে, সেখানে আদৌ সময় মতো যাচ্ছে কি না, খেয়াল রাখতে হবে সে ক্ষেত্রেও। সবচেয়ে বড় ব্যাপার কাদের সঙ্গে মিশছে, কার সঙ্গে কতটা গভীর ভাব, এগুলোও দূর থেকে বা তাদের দলে মাঝে মাঝে ভিড়ে জেনে নিতে হবে।

অতটা সম্ভব না হলে অন্তত ছেলে-মেয়ের বন্ধুদের মাঝে মাঝেই বাড়িতে ডাকুন। দরজা বন্ধ করে চুপচাপ আড্ডা নয়, সবার মাঝে হই-হুল্লোড় করে আড্ডা দিতে বলুন। এর ফাঁকে বুঝে নিতে চেষ্টা করুন, সন্তানের ‘সঙ্গদোষ’ তৈরি হচ্ছে কি না। তেমনটা বুঝলে বোঝান তাকে। নিজেরা না পারলে কাউন্সিলিংয়ের সাহায্য নিন।

* সন্তানের ব্যবহার করা ফোন ও ল্যাপটপ নিয়ে বন্ধুর মতোই ব্যবহার করুন। প্রথম থেকেই তেমনটা করতে পারলে গোপনীয়তার পরিধি কম থাকবে।

 

* হঠাৎই উল্লেখযোগ্য ভাবে পরীক্ষার ফল খারাপ হতে শুরু করলে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকবেন না। নেশা ছাড়াও নানা কারণেই হতে পারে তা। কেন হল তা জেনে সেই মতো ব্যবস্থা নিন। তবে মনে রাখবেন, অনেক ক্ষেত্রেই নেশার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার কারণেও এমন অবহেলা দেখা যায়।

* হঠাৎই হাত খরচের পরিমাণ বাড়াতে বলছে, আবার কিসে এত খরচ হচ্ছে তার কোনও হিসাব দিতে পারছে না। এমনটা ঘটলে সচেতন হোন।
* কেবল সন্তান নয়, নিজেদের ভুলগুলোও চিহ্নিত করুন। বাড়িতে এমন কিছু করবেন না বা এমন কোনও পরিবেশ তৈরি করে রাখবেন না, যেখানে মাদকদ্রব্য সেবন বা নেশার জন্য আপনার দিকেই আঙুল উঠতে পারে।