মঙ্গলবার   ০৫ নভেম্বর ২০২৪   কার্তিক ২১ ১৪৩১   ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তিন দশক পর পরিচালনায় ফিরলেন সি.বি. জামান

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৯:৩২ এএম, ৬ আগস্ট ২০১৯ মঙ্গলবার

দীর্ঘ ৩০ বছর পর নির্মাণে ফিরছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের গুণী নির্মাতা সি.বি. জামান। রোববার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে প্রযোজনা-পরিবেশনা প্রতিষ্ঠান ‌'এসএইচকে গ্লোবাল' এর 'এডভোকেট সুরাজ’ শিরোনামের চলচ্চিত্রের পরিচালক হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হন তিনি। এ সময় চুক্তিপত্রটিতে স্বাক্ষর করেন স্বনামধন্য পরিচালক সি.বি. জামান এবং এসএইচকে গ্লোবাল এর চেয়ারম্যান শামস হাসান কাদির। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন এসএইচকে গ্লোবাল এর সিইও ইমদাদুল ইসলাম (যিকরান), স্বনামধন্য পরিচালক শিল্পী বিশ্বাস এবং সি.এফ. জামান।

এ বিষয়ে পরিচালক সি.বি. জামান বলেন, আমার মুক্তিপ্রাপ্ত সর্বশেষ ছবি কুসুম কলি, যেটা ১৯৯০ সালে মুক্তি পেয়েছে। এরপর অনেক প্রযোজকই আমার কাছে এসেছে ছবি বানানোর জন্য তবে সেগুলির গল্প এবং প্ল্যান আমার পছন্দ না হওয়ার কারণে এতোদিন ছবি পরিচালনা করিনি। এই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটির প্ল্যান এবং 'এডভোকেট সুরাজ' চলচ্চিত্রের গল্প আমার কাছে ভালো লাগায় আবারো ৩০ বছর পর পরিচালনা শুরু করলাম।

এ প্রসঙ্গে এসএইচকে গ্লোবাল এর চেয়ারম্যান শামস হাসান কাদির বলেন, আমাদের দেশের কালচার হচ্ছে; আমরা গুণীজনদের সম্মান দেই উনারা আমাদের কাছ থেকে চলে যাওয়ার পর। অথচ উনারা আমাদের মাঝে থাকা অবস্থায়ই উনাদেরকে সম্মান জানানোটা আমাদের উচিত। সেই ধারা চালু করারই প্রথম প্রয়াস আমাদের সি.বি. জামান স্যারকে আমাদের 'এডভোকেট সুরাজ' চলচ্চিত্রের পরিচালক হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা।

 

তিনি আরো বলেন, আমরা শুধু উনাকেই না বাংলাদেশের সিনিয়র পরিচালক, শিল্পী-কলাকুশলীদের একটা লিস্ট করেছি, ধারাবাহিকভাবে উনাদেরকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করবো।

উল্লেখ্য, পরিচালক সি.বি. জামান নিজের ক্যারিয়ার শুরু করেন ১৯৬৬ সালে লাহোর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে সহকারী পরিচালক হিসেবে হিসেবে। ১৯৭৩ সাল হতে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সরাসরি চলচ্চিত্র পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। এ সময়ে তিনি নির্মাণ করেন একে একে ঝড়ের পাখি (১৯৭৩), উজান ভাটি (১৯৮২), পুরস্কার (১৯৮৩), শুভরাত্রি (১৯৮৫), হাসি (১৯৮৬), লাল গোলাপ (১৯৮৯) ও কুসুম কলি'র (১৯৯০) মতো কালজয়ী চলচ্চিত্র। এরমধ্যে শুভরাত্রি ছবিটি ব্যবসায়িক সফলতার পাশাপাশি ১৯৮৬ সালে ৯টি ক্যাটাগরির ভেতরে ৬টি ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও  বাচসাস পুরস্কারে ভূষিত হয়।

এছাড়াও তিনি বেশ কয়েকটি স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামান্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন, যার মধ্যে ডিএফপি'র 'নুরুর সমস্যা' প্রামান্যচিত্রটিতে প্রথমবারের মতো তিনি ক্যামেরার সামনে আনেন আজিজুল হাকিম ও সালাহ্‌উদ্দীন লাভলু'র মতো অভিনেতাদের।

 

তিনি কাজ করেছেন অনেকের সঙ্গেই কিন্তু তাদের মধ্যে খান আতাউর রহমানকে তিনি নিজের গুরু ও সবচাইতে কাছের বন্ধু হিসেবে ভাবতেন। 'নবাব সিরাজউদ্দৌলা' থেকে শুরু করে 'এখনো অনেক রাত' পর্যন্ত খান আতা'র প্রায় সব ছবিতেই তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি ও খান আতাউর রহমান তাহের চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে গড়ে তোলেন 'প্রমোদকার' চলচ্চিত্র গোষ্ঠী। এই প্রমোদকার নামেই তারা একত্রে পরিচালনা করেন বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ৪ চলচ্চিত্র; 'ত্রিরত্ন' (১৯৭৪), 'সুজন সখী' (১৯৭৫), 'দিন যায় কথা থাকে' (১৯৭৯) ও 'হিসাব-নিকাশ' (১৯৮২)।