মানসিক চাপে আছেন? নিয়ন্ত্রণ করুন এই উপায়ে...
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ১০:০৬ এএম, ৬ আগস্ট ২০১৯ মঙ্গলবার
মানুষের সঙ্গে মানসিক চাপ জীবনের একটা অংশ হয়েই থাকে। কিন্তু এই চাপ অতিরিক্ত অনুভব করা অনেক ক্ষতিকর। এর প্রভাব শরীরে পড়ে। তাই অতিরিক্ত চাপ অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। মানসিক চাপ থেকে রক্ষা পাওয়ার কিছু উপায় রয়েছে। যা অনুসরণ করা সবারই উচিত। চলুন তবে জেনেন নেয়া যাক সেই উপায়গুলো-
অন্যার ব্যাপারে বেশি মাথা না ঘামানো
কে কী করছে সে বিষয়ে মাথা ঘামানো নিজের মানসিক চাপ বৃদ্ধির একটি কারণ। আরেকটি সমস্যা হবে, অন্যের বিষয়ে নিয়ে মাথা ঘামালে তখন নিজেকে অন্যদের সঙ্গে তুলনা করার মনোভাব সৃষ্টি হবে। টাকা-পয়সা, সামাজিক অবস্থা, পদমর্যাদা, গাড়ি-বাড়ি অলংকার, পোশাক, সৌন্দর্য ইত্যাদি দিক থেকে তখন মানসিক চাপ অনুভব করবেন। তাই আপনার যা আছে তা নিয়ে খুশি থাকুন।
সাধ্যের অতিরিক্ত বোঝা কাঁধে নিবেন না
আপনার যতটুকু দায়িত্ব ও কর্তব্য ততটুকু পরম আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করুন। সাধ্যের অতিরিক্ত দায়িত্ব কাঁধে তুলতে যাবেন না। অন্যথায় আপনাকে অতিরিক্ত মানসিক চাপে থাকতে হবে।
অতিভক্তি এড়িয়ে চলুন
মানুষের সঙ্গে অতিরিক্ত সম্পর্ক মানসিক চাপের অন্যতম কারণ। তাই আত্মীয়, বন্ধু, প্রতিবেশী, কলিগ, ক্লাসমেট ইত্যাদির সঙ্গে সীমিত সম্পর্ক রাখুন। সম্পর্ক যত ব্যাপক হবে ততই আপনি নানা বাধ্যবাধকতার জালে আটকে যাবেন।
লোভ কে না বলুন
অতিলোভ করবেন না। অতিলোভী ব্যক্তি অর্থ-কড়ি, ধন-দৌলত, পদমর্যাদা ইত্যাদি বৃদ্ধির চিন্তায় বিভোর থাকে। অল্পে তুষ্টি মানসিক শান্তির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।
মিতব্যায়ী হন
সাধ্যের বাইরে নিজের অর্থ-সম্পদ, আরাম-আয়েশ উজাড় করে দিবেন না। যারা কৃত্রিমভাবে নিজের সব কিছুকে উৎসর্গ করে দেয় তারা তাদের কথা-বার্তা ও আচরণে মানুষের ধন্যবাদ ও প্রশংসা পাওয়ার অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু যদি তা না পায় তখন তার মানসিক অস্থিরতা ও টেনশন বেড়ে যায়।
আজকের দিনটিকে কাজ লাগান
আজকের দিনটিকে ভালভাবে উপভোগ করুন। আগামী কাল কী হবে সেটা আল্লাহর উপর ছেড়ে দিন। ইবাদত বন্দেগীর পাশাপাশি আল্লাহর দেয়া নেয়ামত স্বাচ্ছন্দ্যে উপভোগ করুন। আগামীর চিন্তায় অস্থির হয়ে মানসিক চাপ বৃদ্ধি করবেন না।
নির্জনে কিছু সময় কাটান
প্রতিদিন একান্ত নির্জনে কিছু সময় কাটান। এ সময় দুনিয়ার কারো সঙ্গে সম্পর্ক রাখবেন না। বিশেষ ইন্টারনেট তথা হোয়াটসএ্যাপ, ফেসবুক ইত্যাদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সম্পূর্ণ দূরে থাকুন। এ সময় আত্মসমালোচনা করুন।
বই পড়ুন
নানান বিষয়ে বই পড়ুন, জ্ঞানীদের জীবনী পড়ুন, তাদের উপদেশ ও মূল্যবান বাণীগুলো পড়ুন তাহলে তাদের জীবনের অভিজ্ঞতা ও উপদেশ দুনিয়ার জীবনে আপনার চলার পথকে সহজ করে দিবে।
বিপদাপদেই হয়তো কল্যাণ রয়েছে
জীবনে যত বিপদ ও সমস্যাই আসুক যেমন- আর্থিক ক্ষতি, পরীক্ষায় খারাপ রেজাল্ট, অসুখ-বিসুখ ইত্যাদি এগুলো নিয়ে খুব বেশী দু:শ্চিন্তা করবেন না। বরং সহজভাবে মেনে নিন। বিপদাপদেই হয়তো কল্যাণ রয়েছে যা বাহ্যিক দৃষ্টিতে মানুষের দৃষ্টিগোচর হয় না।
সব কিছুই গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করবেন না
মানুষের প্রতিটি কথা বা কাজ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা ঠিক নয়। সব কিছু গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা ঠিক নয়। বরং মনে আনন্দ বজায় রাখুন, মানুষের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতে হাসতে শিখুন।
শরীরের দিকে খেয়াল রাখুন
শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার, ঘুম, বিশ্রাম গ্রহণ জরুরি। তাই এই দিকগুলোতে বিশেষ নজর দিন।
গুছিয়ে কাজ করুন
দৈনন্দিন গুরুত্বপূর্ণ কাজে লিস্ট তৈরি করে আগেরটা আগে পরেরটা পরে করুন। তবে তা করতে গিয়ে নিজেকে কষ্টের মধ্যে ফেলে দিবেন না। মনে রাখবেন অগোছালো কার্যক্রম মানসিক অস্থিরতা বাড়ায় এবং মানসিক চাপ তৈরি করে।
কাজে নির্ভুলতার মানসিকতা পরিহার করুন
প্রতিটি কাজ ১০০ পার্সেন্ট নির্ভুল করতে হবে এই চিন্তা মাথা থেকে সরাতে হবে। কেননা, পূর্ণাঙ্গতার গুণ মানুষের নেই। যারা সব কাজ নির্ভুল করার চিন্তায় থাকে তাদেরকে চারদিক থেকে দু:শ্চিন্তা, টেনশন,অস্থিরতা ঘিরে ধরে। ফলে মানসিক চাপ চরম আকার ধারণ করে।