সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সন্তান মোটা হচ্ছে? ওজন কমাবেন যেভাবে

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১০:৩৪ এএম, ৬ আগস্ট ২০১৯ মঙ্গলবার

আধুনিক জীবনের ব্যস্ততার ছায়া পড়েছে বাড়ির খুদে সদস্যটির উপরে। ব্যস্ততার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে মা-বাবারা পড়েছেন ফ্যাসাদে। পড়াশুনার চাপ এবং অভিভাবকের প্রত্যাশার বহর চেপে বসছে শিশুর কাঁধে। সেই সঙ্গে ঠিক সময় না খাওয়া, যত্রতত্র খাওয়া, কম ঘুম, হতাশা ইত্যাদি দেখা যায় শিশুর জীবনে। যার ফলে বয়সের তুলনায় শিশুর ওজন বাড়ছে অধিক হারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, গোটা বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোতে শিশুদের মোটা হয়ে যাওয়ার প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন চিকিৎসকরাও।

 

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ছোটবেলা থেকেই শিশুকে নির্দিষ্ট নিয়মে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে। মা-বাবাকেও মানতে হবে কিছু নিয়ম। রান্না করতে ইচ্ছে করছে না বলে শিশুকে দোকানের খাবার, যখন তখন বায়না করলেই চকোলেট দেয়া, ঘুম থেকে তুলে পড়তে বসানো এসব অভ্যাস বদলাতেই হবে। প্রথম থেকে না ভাবলে তা বড় সমস্যায় ফেলবেই।

সন্তানের ওজন ঠিক রাখতে যেসব উপায় অবলম্বন করতে পারেন :

পর্যাপ্ত ঘুম

শিশু বয়সেই বুদ্ধি ও দেহের বিকাশ ঘটে। এই বয়সে শরীর গঠনে বড় ভূমিকা রাখে ঘুম। তাই পরীক্ষা-পড়াশোনার চাপ যতই থাকুক না কেন ঘুমের সময় কমানো যাবে না। কমপক্ষে সাত-আট ঘণ্টা ঘুমের সময় রাখতে হবে।

পুষ্টিকর খাওয়া-দাওয়া

পুষ্টিবিদের কাছে যান শিশুকে নিয়ে। ওর নির্দিষ্ট বয়সে খাদ্যের তালিকা ঠিক কেমন হবে তা মেনে চলুন। এই তালিকায় শিশুদের পছন্দের খাবারও থাকে। কেবল দরকার কতটা খাবে আর কখন খাবে তা নিয়ে পরিমিতিবোধ।

মানসিক চাপ

সন্তানের মানসিক চাপ বাড়তে পারে এমন কোন পদক্ষেপ নিবেন না। সবার মস্তিষ্ক ও বুদ্ধি সমান হয় না। শুধু পড়াশোনা দিয়েই যে বড় হতে হবে এমনও নয়। বরং ওর আগ্রহের ব্যাপারে জোর দিন। ওকে ওর মতো বড় হতে দিন। একটা বয়সে সবই ঠিকই হয়ে যাবে। অকারণে ভীতি বা চাপের মধ্যে ফেলবেন না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।

ফাস্ট ফুড

যখন তখন বাড়িতেই নুডলস বা ফ্রোজেন ফুড এনে বানিয়ে দেওয়ার অভ্যাস পরিহার করুন। দোকানের সুপ ও ঠান্ডা পানীয়ও এড়িয়ে চলুন। এসবে থাকা অতিরিক্ত চিনি ও প্রিজারভেটিভসে থাকা সোডিয়াম ফ্যাট বাড়ায় দ্রুত। বরং বাড়িতে বানানো খাবারে সন্তানকে অভ্যস্ত করুন। নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে মিষ্টি জাতীয় খাবার।

চকোলেট

শিশুদের প্রিয় খাবার চকোলেট। এই চকোলেট দাঁতের ক্ষতির সঙ্গে ওজনও বাড়ায় হু হু করে। তাই কথায় কথায় চকোলেট না দিয়ে মাঝে মধ্যে দিবেন। তা যদি ডার্ক চকোলেট হয়, তাহলে খুবই ভাল।

ফ্রিজের ঠান্ডা পানি

গরমে ঠাণ্ডা পানি শিশুরা পছন্দ করে। ঠান্ডা পানি ওজন বাড়ার জন্য দায়ী। এই অভ্যাসকে একেবারেই প্রশ্রয় দিবেন না। এর জন্য পরিবারের অন্য সদস্যরাও ঠাণ্ডা পানি পরিহার করুন বা শিশুর আড়ালে পান করুন।

পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি

পানির তৃষ্ণায় বেশি পানি খেলে অনেক সময়  শরীর পানি জমিয়ে রাখে। এতেও শরীর ফোলে। তাই শিশুকে নিয়ম করে পানি খাওয়ার অভ্যাস করান।

ভাত কম দিন

যে শিশুর ওজন বাড়তির দিকে তাকে ছোট থেকেই ভাত কম দিন। ভাতের জায়গায় দু’-একটি রুটিও দিতে পারেন। কম ভাতের সঙ্গে সবজি, মাংস, মাছ, পনির, দুধ, টক দই এসব বেশি বেশি দিতে পারেন।

শরীরচর্চা বা খেলাধুলা

শুধু পড়াশোনা আর অন্যান্য গুণে দক্ষ করে তুলতে গিয়ে খেলাধুলার সময়টা কেঁড়ে নেবেন না। খেলাধুলা শরীর ও মন দুটোই ভাল রাখে। সাঁতারেও ভর্তি করে দিতে পারেন। বাসায় ছুটাছুটি করতে দিন। বড়রা শরীর ঠিক রাখার জন্য বাসায় যেভাবে হালকা ব্যায়াম করেন তখন আপনার সন্তানকেও নিতে পারেন সঙ্গে।