লজ্জা দূর করার ৫ উপায়
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৩:২৬ পিএম, ৬ আগস্ট ২০১৯ মঙ্গলবার
লজ্জা একটি সুন্দর আবেগ। লজ্জা মানুষকে ক্ষতিকর প্রবৃত্তি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। আর লজ্জার কারণেই আমরা অশোভন কার্যকলাপ থেকে সাধারণত নিজেদের বিরত রাখি। লজ্জার কারণেই আমরা অনেক সময় লোভনীয় কিন্তু সামাজিকভাবে অগ্রহণযোগ্য কার্যকলাপ, যেমন চুরি, পরকীয়া প্রেম ইত্যাদি থেকে বিরত থাকি।
তবে লজ্জা স্বাভাবিকভাবে হিতকর হলেও এর অতিরিক্ত প্রভাব বা বিকৃত প্রভাব যে কোনও মানুষের জীবনকে বিড়ম্বিত এমনকি বিপর্যস্ত করে তুলতে পারে। লজ্জা তখন ক্রোধ, একগুঁয়েমি, অহঙ্কার, বিষণ্নতা, মৌনের মুখোশ পরিধান করতে পারে।
সুপ্ত লজ্জায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা সবসময় লজ্জা ও গর্বের নাগরদোলায় দুলতে থাকে। সাফল্য এদের সাময়িকভাবে গর্বের পথে নিয়ে যায়, আবার যে কোনও ছোটখাট ব্যর্থতাও এদের মধ্যে লজ্জা ও অক্ষমতার অনুভূতিকে চাঙ্গা করে তোলে। এই সুপ্ত লজ্জার হাত থেকে যত নিষ্কৃতি পাওয়া যায়, ততই জীবন আনন্দময় হয়ে উঠতে পারে। তাই সুপ্ত লজ্জার হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার জন্যে নিন্মোক্ত ৫টি পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন।
লজ্জাকে প্রকাশ্যে নিয়ে আসা
শনাক্তকরণের মাধ্যমে লজ্জাকে প্রকাশ্যে নিয়ে আসুন। কোনও মানুষ, স্থান, বিষয় বা কার্যক্রমকে আপনি এড়িয়ে চলেন, তা শনাক্ত করুন। এদের এড়িয়ে চলার পেছনে সুপ্ত লজ্জার কারণগুলো খুজে বের করুন।
পালিয়ে না বেড়ানো
লজ্জার প্রকৃতি হচ্ছে লুকানো বা পালিয়ে বেড়ানো। তাই একে মোকাবেলা করতে হবে উল্টোভাবে। অর্থাৎ যখন আপনি লজ্জায় চোখ নামিয়ে ফেলতে যাচ্ছেন, তখন সরাসরি চোখের দিকে তাকান এবং মনে মনে ভাবুন আমার এতে লজ্জা পাবার কিছু নেই।
যাদেরকে এড়িয়ে চলবেন
ইচ্ছাকৃতভাবে যারা আপনাকে লজ্জাজনিত পরিস্থিতিতে ফেলতে চায় বলে আপনি মনে করছেন তাদের এড়িয়ে চলুন। তাদের সঙ্গে সম্পর্কের ধরন পাল্টে ফেলুন।
পূর্বের দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি করা
বিশিষ্ট মনোবিজ্ঞানী ডা. গারশেন কাউফম্যান নিরিবিলি বসে ভাবনার মাধ্যমে লজ্জাকর পরিস্থিতি থেকে রেহাই পাওয়ার চমৎকার অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি ছাত্রাবস্থায় একবার ক্লাসে বক্তৃতা করতে গিয়ে স্টেজে পড়ে যান। এতে ছাত্রদের মধ্যে হাসির রোল ওঠে। তিনি লজ্জা অনুভব করেন এবং এরপর থেকে তার মনে বক্তৃতাভীতি বাসা বাঁধে। পড়াশুনা শেষ করার পর তিনি এই লজ্জাকে দূর করার জন্যে বেশ কিছুদিন নিরিবিলি বসে পূর্বের দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি করে তা শেষ করতেন ইতিবাচক দৃশ্যের অবতারণা করে। এভাবে তিনি লজ্জাজনক স্মৃতিকে সাফল্যের স্মৃতিতে রূপান্তরিত করেন। বক্তৃতা- যা ছিল এক সময়ে ডা. কাউফম্যানের জন্যে দুঃস্বপ্ন সেটা এক আনন্দের বিষয়ে রূপান্তরিত হয়।
ত্রুটিকে সহজে মেনে নিন
লজ্জার সবচেয়ে বড় প্রতিষেধক হচ্ছে আত্মসম্মানবোধ ও আত্মবিশ্বাস। নিজেকে সম্মান করতে শুরু করুন। নিজেকে অনন্য সৃষ্টি হিসেবে ভাবুন। কোনও মানুষই দোষক্রুটি মুক্ত নয়। আপনার মাঝেও ত্রুটি থাকতে পারে। সে ত্রুটিকে সহজে মেনে নিন। আর যে গুণগুলো রয়েছে তাকে বিকশিত করুন। আপনার বিকশিত গুণকেই মানুষ তখন সম্মান করবে। আপনারও আত্মসম্মানবোধ বেড়ে যাবে।