দম ফেলার সময় নেই কামারপট্টিতে
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৯:১৯ এএম, ১০ আগস্ট ২০১৯ শনিবার
আর মাত্র দু’দিন বাকি ঈদুল আজহার। কোরবানির পশুর হাটও বসে গেছে এরইমধ্যে। কেউ পশু কেনায় ব্যস্ত কেউবা আবার কামারের দোকানে ছুটছেন পশু জবাই করার ছুরি, চাপাতি, বটি, কুড়াল কিনতে। কারওয়ান বাজারের কামারপট্টিতে যেন দম ফেলার সময় নেই কারিগরদের। একই অবস্থা রাজধানীর অন্যান্য কামার কারিগরদেরও।
শুক্রবার কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, কামারপট্টিতে বেশ ভিড়। কারিগরদের যেন দম ফেলার সময় নেই। এ বাজারে এসব জিনিস প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে ১২টি। এসব প্রতিষ্ঠান খুচরা ও পাইকারি দু’ভাবেই পণ্য বিক্রি করে।
দোকানিরা জানান, পশু জবাই করার জন্য ঢেউ দেয়া বড় ছুরিগুলো পাওয়া যাবে ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যে। চামড়া ছাড়ানোর ছুরি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৩০০ টাকায়। ডিজাইন ও কাঁচা মালের তারতম্যে পছন্দ অনুযায়ী জিনিসের দাম কম-বেশি হতে পারে। মাংস কাটা চাপাতির দাম (কোপা) ৩৫০ থেকে শুরু করে ৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। ভালো মানের চাপাতি (স্প্রিং বা কাচা লোহা) ৫৫০ থেকে ৮৫০ টাকায় কেজি বিক্রি হচ্ছে।
দোকানিরা আরো জানান, দেশি চাপাতিগুলো মূলত কেজি হিসেবে বিক্রি হয়ে থাকে। প্রতি কেজি ওজনের চাপাতির দাম ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এছাড়া বিদেশি চাপাতির দাম ৭০০ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। এবার প্রতিটি বটি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে দুই হাজার টাকা (কেজি)। পশুর হাড় কাটার ছোট চায়নিজ কুড়াল পাওয়া যাবে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে।
ডেঙ্গু আতঙ্কে বাড়ি যাননি ব্যাংকার ফয়জুর রহমান। সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ঢাকায় কোরবানি করবেন। কয়েকজন মিলে গরুও কিনেছেন। এখন তিনি এসেছেন আনুষাঙ্গিক সরঞ্জাম কিনতে। তিনি জানান, ছুরি-চাপাতির দাম খুব চড়া। একটা চাপাতির দাম ৮শ’ টাকা রাখছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, এ শিল্পের প্রধান উপাদান লোহা আর কয়লার দাম বেড়ে গেছ। আবার কারিগরদের মজুরিও বাড়তি।
আলাউদ্দিন নামের একজন ব্যবসায়ী বলেন, দিনে একজন কারিগর ৮০-১০০টা ছুরি বানাতে পারে। সব খরচ শেষে লাভের মুখ দেখা কঠিন। তবে আজ (শুক্রবার) ব্যবসা ভাল হচ্ছে। চান রাত পর্যন্ত এই ধারা থাকবে বলে তার আশা।
এদিকে, মাংস কাটার জন্য গাছের গুড়িরও চাহিদা রয়েছে অনেক। গাছের গুঁড়ি পাওয়া যাবে ছোট, বড় ও মাঝারি মোট তিনটি সাইজে। আকারভেদে মাংস রাখার পলি ও প্লাস্টিকের ম্যাটের দাম রাখা হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা। বিভিন্ন ধরনের চপিং বোর্ড কেনা যাবে ৫০০ থেকে দেড় হাজার টাকায়। হ্যান্ড মিট কাটার পাওয়া যাবে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায়।
রাজধানীতে কারওয়ান বাজার ছাড়াও নিউমার্কেট, গুলশান-১ নম্বরে অবস্থিত ডিএনসিসি মার্কেট, চকবাজার, কাপ্তান বাজার, ধানমণ্ডি রায়ের বাজার, খিলগাঁও বাজার, মিরপুর-১ নম্বরসহ সিটি কর্পোরেশনের প্রায় সব মার্কেটেই ছুরি, বটি, চাপাতিসহ ঈদের পশু কোরবানির প্রয়োজনীয় সব জিনিসই পাওয়া যাচ্ছে।