জম্মু-কাশ্মীরের নতুন অধ্যায় শুরু: মোদি
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ১০:১২ এএম, ১০ আগস্ট ২০১৯ শনিবার
সংবিধানের ৩৫এ ও ৩৭০ ধারা বাতিলের মাধ্যমে কাশ্মীরে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
সোমবার ভারতীয় সংবিধানের এ ধারা বাতিল করে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেয়ার পর প্রথমবারের মত জনসম্মুখে দেয়া ভাষনে এ কথা বললেন তিনি।
মোদি বলেন, কাশ্মীরের জনগণ এখন থেকে সমান অধিকার পাবে। লাদাখের অধিকার বঞ্চিত মানুষদের জীবনেও আসবে নতুন সূচনা।
ভারত সরকার কশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর পরিকল্পনা করেছে রাজ্যটিকে ভাগ করে দুটো কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার। বিষয়টি নিয়ে বুধবার সংসদ অধিবেশনের শেষ দিন প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ দেওয়ার কথা থাকলেও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমার মৃত্যুতে তা আর হয়ে ওঠেনি। তাই বৃহস্পতিবার রাত ৮ টায় জাতির উদ্দেশে টিভি এবং বেতারে এ ভাষণ দিলেন নরেন্দ্র মোদি।
এ সময় অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল হওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, এটি এ অঞ্চলের মানুষকে মুক্ত করবে এবং দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে তাদের আরো ঘনিষ্ঠতা বাড়বে।
৫ আগস্ট কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল হওয়ার পর থেকে কাশ্মীর কার্যত পুরো বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার দেশবাসীর উদ্দেশে দেয়া ভাষণে কাশ্মীর ঘিরে ভারত সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানান নরেন্দ্র মোদি।
প্রায় ৪০ মিনিট ধরে দেয়া ভাষণে মোদি বলেন, জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখের মানুষ তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হতো। বল্লব ভাই প্যাটেল থেকে বিআর আম্বেদকর, এসপি মুখার্জি, অটল বিহারি বাজপেয়ী এবং কোটি কোটি ভারতীয়র স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরে নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। এখন দেশের প্রত্যেকেই সমান অধিকার এবং সুবিধা ভোগ করবেন। আমি জম্মু-কাশ্মীর, লাদাখ এবং দেশের সব মানুষকে অভিনন্দন জানাই।
কিছু সময় থাকে যখন কিছু জিনিস থমকে থাকে, পরিবর্তন হয় না। অনুচ্ছেদ ৩৭০ এর ক্ষেত্রেও তেমন ঘটনা ঘটল। অনুচ্ছেদ ৩৭০ মানুষের ক্ষতি করেছে, জম্মু-কাশ্মীরের শিশুদের ক্ষতি করেছে; কিন্তু এটা নিয়ে কোনো কথা হয়নি।
মোদি বলেন, অনুচ্ছেদ ৩৭০ ও ৩৫-এ জম্মু-কাশ্মীরকে সন্ত্রাসবাদ, বংশীয় পরম্পরা ও দুর্নীতির দিকে টেনে নিয়ে গেছে। এসবের মাঝে সেখানকার জনগণ পাকিস্তানের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। গত তিন দশকে কাশ্মীরে নিষ্পাপ ৪২ হাজার মানুষের প্রাণ গেছে। ৪২ হাজার নিষ্পাপ মানুষ!
ভারতের এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে গতিতে জম্মু-কাশ্মীরের উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল, সেভাবে হয়নি। এখন জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখের মানুষের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে। জাতির মঙ্গলের জন্য পার্লামেন্টে খসড়া আইন পাস হয়েছে; কোন সরকার বা জোট ক্ষমতায় থাকলো সেটি কোনো বিষয় নয়।
‘কাশ্মীরের ঘটনায় সংসদ আইন তৈরি করেছিল কিন্তু সেই আইন থেকে সেখানকার মানুষ কোনো উপকার পায়নি। পুরো দেশের জন্য খসড়া শিক্ষা আইন প্রস্তুত করা হলেও জম্মু-কাশ্মীরের দেড় কোটি মানুষ কোনো উপকার পায়নি। তাদের অপরাধ কি ছিল?’
তিনি বলেন, জম্মু কাশ্মীরের কন্যা শিশুরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে, কিন্তু দেশের অন্যান্য প্রান্তের শিশুরা উপকৃত হয়েছে। দলিতদের ওপর নৃশংসতা ঠেকাতে আইন হয়েছে, কিন্তু জম্মু কাশ্মীরে এ ধরনের আইন নেই।