সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানের নতুন পদ সৃষ্টির ঘোষণা মোদির

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১১:০৫ এএম, ১৭ আগস্ট ২০১৯ শনিবার

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আদলে এবার ভারতেও তৈরি হতে চলেছে ‘চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ’ (সিডিএস) পদ। তিন বাহিনীর সমন্বয়ে তৈরি হবে নতুন এই পদ। ১৫ আগষ্ট ভারতের ৭৩তম স্বাধীনতা দিবসের দিন সকালে দিল্লির লালকেল্লা থেকে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বড়সড় ঘোষণা দিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

ভারতবাসীর সুরক্ষাবৃদ্ধি এবং সন্ত্রাসদমনে সেনার ৩ বাহিনী অর্থাৎ স্থল, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর প্রধান এবং বাছাই করা কর্মকর্তাদের নিয়ে তৈরি হবে একটি টিম-যার শীর্ষে থাকবেন চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ। তিন বাহিনীর মধ্যে যথাযথ সমন্বয়ের উদ্দেশ্যেই নতুন এই পদটি তৈরির ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। মূলত সিডিএস-এর মাধ্যমেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সমস্ত অপারেশনের রিপোর্ট সরাসরি পৌঁছবে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। 

এদিন লালকেল্লা থেকে ভাষণ দিতে মোদি জানান ‘আমাদের তিন বাহিনীর সমন্বয় দেশের গর্ব। এই তিন বাহিনীর মধ্যে আরও ভাল সমন্বয়ের জন্য আজ একটি ঘোষণা করছি। এবার থেকে ভারতে একজন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ থাকবেন। নতুন এই পদ সেনাবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে।’
 
মোদি আরও বলেন ‘এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরেই এই দাবি তুলে আসছিলেন। আমরা আজ স্থির করেছি যে এবার থেকে ভারতেরও একজন সিডিএস থাকবে। একবার এই পদটি তৈরি হলে, এটা তিন বাহিনীর শীর্ষ স্তরে কার্যকরী নেতৃত্ব প্রদান করবে।’ মোদির অভিমত সমগ্র বিশ্বে যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি পরিবর্তন ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

 

এদিনের ভাষণে জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ও ৩৫এ ধারা বিলোপ নিয়েও ফের একবার মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন ‘কেন্দ্রে নতুন সরকারের বয়স ১০ সপ্তাহও হয়নি। কিন্তু এই অল্প সময়েও সমস্ত ক্ষেত্রেই আমরা শক্তিশালী ও সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছি। ১০ সপ্তাহের মধ্যেই সরকারের পক্ষ থেকে সংবিধানের ৩৭০ ও ৩৫এ ধারা বিলোপের মতো পদক্ষেপ সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের স্বপ্ন পূরণ করবে।’ 

মোদির প্রশ্ন এত বছর ধরে এই সমস্যা জিইয়ে রাখার কি দরকার ছিল? যে কাজ গত ৭০ বছরে হয়নি, সেই কাজ নতুন সরকার ৭০ দিনে করে দেখিয়েছে। গোটা দেশ আজ বলছে এক জাতি, এক সংবিধান। আমরা প্যাটেলের ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর স্বপ্ন পূরণে অঙ্গীকারবদ্ধ। 

স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজে অংশ নিতে এদিন সকালেই দিল্লির লালকেল্লায় পৌঁছে যান দেশটির প্রধানমন্ত্রী। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে সেনার পক্ষ থেকে ‘গার্ড অব অনার’ও দেওয়া হয়। এরপর জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। সাথে সাথেই বেজে ওঠে দেশটির জাতীয় সঙ্গীত। 

কুচকাওয়াজেও অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরাও। পতাকা উত্তোলনের পর লালকেল্লায় জাতীর উদ্যেশ্যে ভাষণ দেন নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্বাধীনতা দিবসে মোদির এটা ছিল ষষ্টতম ভাষণ। 

এর আগে এদিন সকালে রাজঘাটে গিয়ে দেশটির জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মোদি। 

দিল্লি ছাড়াও দেশিটির প্রতিটি অঙ্গরাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত রাজ্যগেলোতেও মর্যাদার সাথে পালিত হচ্ছে ভারতের ৭৩ তম স্বাধীনতা দিবস। এ লক্ষ্যে দেশজুড়েই নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। দিল্লিতে কংগ্রেসের সদর কার্যালয়ে দেশটির পতাকা উত্তোলন করেন দলের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সালমান খুরশিদ, সিনিয়র নেতা আহমেদ প্যাটেল, কপিল সিবল, মোতিলাল ভোরা, গুলাম নবি আজাদ প্রমুখ। 

কলকাতার রেড রোডে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তেও ছিল সৌহার্দ্যরে ছবি।