লবঙ্গ খাওয়ার কত গুণ জানেন কি?
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০২:৪০ পিএম, ১৯ আগস্ট ২০১৯ সোমবার
লবঙ্গের পরিচয় রান্নার মশলা হিসেবে। অনেক সময় মশলার চায়েও এটি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ছোট এই জিনিসটির ব্যবহার তেমন একটা হয় না। তবে প্রাকৃতিক শক্তির দিক থেকে যদি বিচার করেন, তাহলে বলতেই হবে লবঙ্গের কোন বিকল্প নেই।
প্রসঙ্গত বেশ কিছু আধুনিক গবেষণাতেও এই কথাটি প্রমাণিত হয়ে গেছে। আরও প্রমাণিত হয়েছে যে, নিয়মিত এই প্রকৃতিক উপাদানটি খাওয়া শুরু করলে ক্যান্সারের মতো রোগ দূরে থাকতেও বাধ্য হয়। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে।
লবঙ্গতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন কে, ফাইবার, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম। এই সবকটি উপাদানই নানাভাবে শরীরে কাজে লেগে। শুধু তাই নয়, ভিতর থেকে শরীরকে এতটা শক্তিশালী করে তোলে যে একাধিক রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না।
এবার লবঙ্গের গুণাগুণ জেনে নিন :
অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে এই প্রাকৃতিক উপাদানটির ভেতর একাধিক অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ যে কোনও ধরনের জীবাণুকে মেরে ফেলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই সংক্রমণ থেকে দূরে থাকতে অনেকেই নিয়মিত লবঙ্গ খেয়ে থাকেন। একই কাজ আপনিও করতে পারেন যদি ইনফেকশনের থেকে দূরে থাকতে চান।
আর্থ্রাইটিসের যন্ত্রণা কমায়
লবঙ্গে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি শক্তি যা হাড়ের রোগের প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এক্ষেত্রে এক কাপ লবঙ্গ চা বানিয়ে কয়েক ঘন্টা ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। তারপর সেই ঠান্ডা চা ব্যথা জায়গায় কম করে ২০ মিনিট লাগালে দেখবেন যন্ত্রণা একেবারে কমে গেছে।
দাঁতের ব্যাথা নিমেষে দূর
লবঙ্গতে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর এমন কিছু বিক্রিয়া করে যা নিমেষে দাঁতের যন্ত্রণা কমিয়ে থাকে। তাই দাঁতে অস্বস্তি বা মাড়ি ফোলার মতো ঘটনা ঘটলে কয়েকটা লবঙ্গ দিয়ে চা খেয়ে নেবেন। উপকার পাবেন।
জ্বরের প্রকোপ কমায়
লবঙ্গে থাকা ভিটামিন কে এবং ই, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে এতটাই শক্তিশালী করে দেয় যে শরীরে উপস্থিত ভাইরাস সব মারা পরে। ফলে ভাইরাল ফিবারের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার হয়ে যাওয়ার পর সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে যায়।
ত্বকের সংক্রমণ সারায়
ত্বকের সংক্রমণ হলেই চোখ বুজে ক্ষতস্থানে লবঙ্গের রস বা এই প্রকৃতিক উপাদানটি দিয়ে বানানো চা লাগাতে ভুলবেন না। এমনটা করলে দেখবেন কষ্ট কমতে একেবারে সময়ই লাগবে না। আসলে লবঙ্গে উপস্থিত ভোলাটাইল অয়েল শরীরে উপস্থিত টক্সিক উপাদান বের করে দেয়। সেই সঙ্গে জীবাণু মেরে ফেলে।
সাইনাস ইনফেকশনের প্রকোপ কমায়
লবঙ্গতে উপস্থিত ইগুয়েনাল নামে একটি উপাদান সাইনাসের কষ্ট কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই কারণেই তো আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা আজও এই ধরনের অসুখের চিকিৎসায় লবঙ্গের উপরই ভরসা করে থাকেন।
হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
লাঞ্চ বা ডিনারের আগে লবঙ্গ দিয়ে বানানো এক কাপ গরম গরম চা খেলে হজমে সহায়ক অ্যাসিডের ক্ষরণ বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে পেটের দিকে রক্ত প্রবাহেরও উন্নতি ঘটে। ফলে খাবার হজম হতে সময় লাগে না। তাই যাদের বদ-হজম সমস্যা আছে তারা লবঙ্গ চা পান করে দেখতে পারেন। এমনটা করলে উপকার মিলবে।
লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়ায়
লবঙ্গে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে প্রবেশ করার পর দেহের অন্দরে উপস্থিত টক্সিক উপাদান বের করে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শুধু লিভার নয়, শরীরের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।