মঙ্গলবার   ০৫ নভেম্বর ২০২৪   কার্তিক ২০ ১৪৩১   ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দৃষ্টিশক্তি হারাতে বসেছেন ছটকু আহমেদ!

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১২:১১ পিএম, ২০ আগস্ট ২০১৯ মঙ্গলবার

ঢাকাই ছবির বরেণ্য চলচ্চিত্রকার ছটকু আহমেদ আহমেদ ভালো নেই। দৃষ্টিশক্তি হারাতে বসেছেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে বাম চোখের রেটিনায় ‘ম্যকুলার ডি জেনারেশন’ রোগে ভুগছেন। এর আগে ২২ বছর ধরে গ্লুকোমার কারণে ডান চোখের দৃষ্টি হারিয়েছেন তিনি। 

বর্তমানে বাম চোখের চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন চক্ষু বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হলে চিকিৎসকরা তার অন্ধত্ব নিবারণের জন্য ৫টি ‘লুসেনটিস’ ইনজেকশন দেয়ার পরামর্শ দেন। এই ইনজেকশনের প্রতিটির মূল্য ১ লাখ টাকারও বেশি। চোখের সমস্যা ছাড়াও ছটকু আহমেদ হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। 

অনেকদিন ধরে চলচ্চিত্রের অবস্থা ভালো না থাকায় কর্মহীন জীবন যাপনের কারণে এই ব্যয়বহুল চিকিৎসা করানো তার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। 

 

ছটকু আহমেদ ১৯৬২ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নামে প্রথম নাটক পরিচালনা করেন। ১৯৬৬ সালে ধারাবাহিক নাটক ‘অমর জীবন’ রচনা করেছেন ও জয় রচিত ও ফাল্গুনী হামিদ প্রযোজিত ‘দিঠি’ নাটক পরিচালনা করেছেন। ১৯৭২ সালের ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসাবে তার চলচ্চিত্র আগমন। 

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ছটকু আহমেদ তিন শতাধিক মুক্তিপ্রাপ্ত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ রচনা করেছেন। যার মধ্যে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত ছবিগুলো হচ্ছে সত্য মিথ্যা, বাংলার বধু, লালু মাস্তান, পিতা মাতা সস্তান, ঘাতক ও চেতনা। তিনি রচনা করেছেন কামাল আহমেদ পরিচালিত ‘অবুঝ সন্তান’, নায়করাজ রাজ্জাক পরিচালিত ‘প্রেম শক্তি’, মোতালেব হোসেন পরিচালিত ‘হিংসা’ ও ‘মিথ্যা অহংকার’, শামসুদ্দিন টগর পরিচালিত ‘জজ সাহেব’, মনোয়ার খোকন পরিচালিত ‘স্বামী কেন আসামী’ ও সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘শান্তি চাই’ ইত্যাদি ছবিগুলো।

ছটকু আহমেদ এ পর্যন্ত বেশ কিছু পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- নাত বৌ, রাজদন্ড, গৃহবিবাদ, অত্যাচার, চেতনা, মায়া মমতা, সত্যের মৃত্যু নেই, বুকের ভিতর আগুন, মিথ্যার মৃত্যু, বুক ভরা ভালোবাসা, বর্ষা বাদল, শেষ যুদ্ধ, মহা তান্ডব, আজকের রূপবান, প্রতিবাদী মাস্টার।

 

কর্মজীবনের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৮৬ সালে গৃহ বিবাদ চলচ্চিত্রের সেরা গীতিকার, কাহিনীকার ও সংলাপ রচয়িতা হিসেবে বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮৯ সালে তিনি সত্য মিথ্যা চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। তার পরিচালিত সত্যের মৃত্যু নাই চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশের সর্বাধিক ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রসমূহের মধ্যে অন্যতম।