দুর্নীতি নির্মূলে নিরলসভাবে কাজ করছে কমিশন
নিউজ ডেস্ক
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৯:৫৬ এএম, ২২ আগস্ট ২০১৯ বৃহস্পতিবার
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক বিকাশের প্রধান অন্তরায় হচ্ছে দুর্নীতি। দুর্নীতিকে নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলে নিরলসভাবে কাজ করছে কমিশন।
বুধবার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে জাতিসংঘ উন্নয়ন তহবিলের (ইউএনডিপি) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের সময় তিনি এ কথা বলেন। ইউএনডিপি’র তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ফিলিয়াট ম্যাটসেজা।
বৈঠকে কমিশনের প্রতিরোধমূলক কার্যক্রমসহ সাবির্ক কার্যক্রম ফিলিয়াট ম্যাটসেজাকে অবহিত করা হয়।
এ সময় ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধে কমিশন বহুমাত্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে ভবিষ্যত প্রজন্মকে নৈতিক মূল্যবোধে জাগ্রত করার লক্ষ্যে স্কুল, মাদরাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২৮ হাজার ‘সততা সংঘ’ গঠন।
তিনি বলেন, এছাড়া দুর্নীতি প্রতিরোধে গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জেলা, উপজেলা, নগর ও মহানগর পর্যায়ের স্বচ্ছ এবং সৎ মানুষদের নিয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এসব কমিটিও দুর্নীতি প্রতিরোধে স্ব স্ব উদ্যোগে উত্তম চর্চার বিকাশে বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
তিনি বলেন, সরকারি সেবা প্রদানের প্রক্রিয়াকে পদ্ধতিগত সংস্কারের মাধ্যমে ঘুষ, দুর্নীতি, দীর্ঘসূত্রিতা এবং জনহয়রানি লাঘবের লক্ষ্যে কমিশন ২৮ টি প্রাতিষ্ঠানিক টিম গঠন করেছে। এসব টিম সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান আইন, বিধি, পরিচালনা পদ্ধতি, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ ও অপচয়ের দিকসমূহ পর্যবেক্ষণ এবং বিশ্লেষণ করে এসব প্রতিষ্ঠানের জনসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সফলতা ও সীমাবদ্ধতা, আইনি জটিলতা, সেবা গ্রহীতাদের হয়রানি ও দুর্নীতির কারণসমূহ চিহ্নিত করে তা বন্ধে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করে প্রতিবেদনসমূহ সরকারের নিকট পেশ করা হচ্ছে। দুর্নীতি প্রতিরোধে কমিশন বিজনেস প্রসেস রিইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ওপর অধিকতর গুরুত্বারোপ করছে দুদক।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে সরকারের কল্যাণমূলক কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার একটি অন্যতম কৌশল হচ্ছে গণশুনানি। গণশুনানিকে সরকারি সেবা প্রত্যাশী জনগণ এবং সেবা প্রদানে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারীদের মধ্যে প্রত্যক্ষ সংযোগের একটি প্রক্রিয়াও বলা যেতে পারে। এতে স্থানীয় পর্যায়ে স্বচ্ছতা ও জবাদিহিতা নিশ্চিতে কাজ করছে।
তিনি বলেন, কমিশনের এনফোনর্সমেন্ট ইউনিট প্রায় প্রতিদিনই একাধিক স্থান বা সংস্থায় দুর্নীতি সংঘটিত হওয়ার আগেই তা প্রতিরোধে অভিযান পরিচালনা করছে। এমনকি আজও কমপক্ষে ১০টি স্থানে এসব অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, কমিশনের প্রায় ৭০ ভাগ মামলায় অপরাধীদের শাস্তি হচ্ছে। কমিশন শতভাগ মামলায় শাস্তি প্রত্যাশা করে।
তদন্তের ক্ষেত্রে কমিশনের সক্ষমতা এখনো কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পৌঁছায়নি উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, এই সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিগত তিন বছরে প্রায় তিন হাজার কর্মকর্তাকে (একই কর্মকর্তাকে একাধিক বিষয়ে একাধিক বার) প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ইউএনডিপিসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা টেকনিক্যাল সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে।
ফিলিয়াট ম্যাটসেজা দুদকের কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, দুর্নীতি বৈশ্বিক সমস্যা। দুর্নীতি দমন কমিশনের সঙ্গে দুর্নীতি প্রতিরোধমূলক কাজে ইউএনডিপি’র সহযোগিতার ক্ষেত্র রয়েছে।