সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ছোট্ট ৯টি স্মার্ট অভ্যাসে বাড়ান নিজের কর্মক্ষমতা

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১০:৫৮ এএম, ২৪ আগস্ট ২০১৯ শনিবার

একটু স্মার্ট চিন্তা করেই নিজেকে আরো বেশি কর্মঠ করে তুলতে পারেন আপনি নিজেই। এর মাধ্যমে খুব দ্রুত সফলতা ও উন্নতি পাওয়া সম্ভব।  এর জন্য প্রয়োজন শুধুমাত্র নিজের একটু বুদ্ধি কাজে লাগানো এবং তা অভ্যাসে পরিণত করা। তবেই আপনি নিজেকে আরো বেশি কর্মঠ ও কর্মক্ষম করে তুলতে পারবেন।

অনেক সময়েই দেখা যায় পরিকল্পনা করা থাকলেও সে অনুযায়ী কাজ করা হয়ে উঠে না। কিন্তু একটু স্মার্টলি পরিকল্পনা করতে জানলে অল্প পরিশ্রমেই ভালো ফলাফল পাওয়া সম্ভব। তাই নিজেকে আরো কর্মঠ করে তোলার ক্ষেত্রে একটু স্মার্ট চিন্তা করা উচিত। সবদিক বিবেচনা করে আগালেই সফলতা ও উন্নতি অনেক দ্রুত পাওয়া সম্ভব। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক নিজেকে আরো বেশি কর্মক্ষম করে তোলার ছোট্ট ৯ টি স্মার্ট অভ্যাস-   

১.সঠিক জায়গায় সঠিক কাজ

কোথায় কতোটুকু চেষ্টা করলে কাজটি সঠিকভাবে করা সম্ভব তা বোঝার চেষ্টা করুন। প্রায় বেশীরভাগ মানুষের মতে মাত্র ২০% চেষ্টাতেই ৮০% ফলাফল লাভ করা সম্ভব। তাহলে কোন ২০% চেষ্টা আমাদের কাছে সবচাইতে বেশি মূল্যবান? যখন আমরা সেই মাত্র ২০% চেষ্টার অংশটুকু বুঝে ফেলতে পারবো তখনই আমরা বুঝতে পারবো আমাদের বল আসলে কোথায় প্রয়োগ করা উচিত। আর এতে করে আমরা বেশ সহজেই নিজের লক্ষ্যের অনেক কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারি বেশ কম সময়ে।  

২. স্বল্পমেয়াদী লক্ষ্য নির্ধারণ করুন

যখন ভবিষ্যতের কথা এবং একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করে আগাবেন তখন বড় একটি লক্ষ্য নেয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু স্বল্পমেয়াদী লক্ষ্য নিয়ে কাজ করলে লক্ষ্যটি সীমিত রাখুন। আপনি বড় একটি লক্ষ্য নির্দিষ্ট করলে তা স্বল্প সময়ে হয়তো করে উঠা সম্ভব হবে না, এতে করে আপনার পরিকল্পনাই ভেস্তে যাবে। মনে রাখবেন একদিন সব করা সম্ভব নয়। ছোটো ছোটো লক্ষ্য পূরণ করেই দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনাকে সফল করা সম্ভব।

৩. নিজের অ্যাক্টিভিটি সাইকেল মেনে কাজ করুন

আপনার দেহ একটি সাইকেলে চলে। পুরোদিন বসে কাজ করলেই কাজটি ঠিকভাবে হবে এমন কোনো কথা নেই। গবেষণায় দেখা যায় আমাদের মস্তিষ্ক একটি দিকে একটানা ৯০ মিনিটের মতো ফোকাস করতে পারে, এরপর আমাদের ১৫ মিনিটের বিশ্রামের প্রয়োজন হয়। আপনি যদি টানা ২ থেকে ৩ ঘণ্টা বসে কাজটি শেষ করতে চান তাহলে কিন্তু ফলাফল কিছুই আসবে না বরং সময়ই নষ্ট হবে। তাই নিজের অ্যাক্টিভিটি সাইকেল মেনে কাজ করুন।

৪. প্রতিদিনই ছোটো ছোটো লক্ষ্য পূরণ করার চেষ্টা করুন

সকালের শুরুতে ছোটো ছোটো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো বেছে বের করে নিন। এরপর প্রতিদিনই এই গুরুত্বপূর্ণ ছোটো কাজগুলো শেষ করে ফেলার চেষ্টা করুন। ছোটো ছোটো কাজগুলো সফলভাবে করে ফেলার অভ্যাস আপনাকে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে এবং সময়ানুবর্তীতা শেখাবে।

৫. কীভাবে সময় ব্যয় করছেন সেদিকে খেয়াল রাখুন

নিজেকে স্মার্ট উপায়ে কর্মঠ করে তোলার অন্যতম প্রধান উপায় হচ্ছে সময়ের সঠিক ব্যবস্থাপনা করা। ফরাসি নোবেল বিজয়ী দার্শনিক হেনরি লুই বার্গসঁ বলেন, ‘কাজের পরিকল্পনা করার মূল অর্থ হচ্ছে সঠিকভাবে সময়ের ব্যবস্থাপনা করে ফেলা’।

৬. ভালো কিছু অভ্যাস রপ্ত করুন

নিজের জন্য ভালো কিছু অভ্যাস রপ্ত করে ফেলাও আপনার কর্মজীবনে বেশ ভালো প্রভাব ফেলবে। যেমন, আপনি প্রতিদিন একই সময়ে ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস করলে আপনার পরিকল্পনা করার ক্ষমতা বাড়বে যা প্রকাশ পাবে আপনার দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে এবং আপনার কাজ করার ক্ষমতার মাধ্যমে।

৭. নিজের সাইকেল মেনে কাজ করুন

ভালো কাজের অর্থ অতিরিক্ত পরিশ্রম বা অতিরিক্ত কিছু করা নয়। একবারে বেশি কাজ করার অর্থ যে আপনি ভালো কিছু কাজ করে ফেলছেন তা কিন্তু নয়। এরচাইতে ছোটো ছোটো কাজ এবং নিজের সাইকেল মেনে কাজ করা অনেক বেশি ভালো ফলাফল প্রদান করে। নির্দিষ্ট লক্ষ্য সম্বলিত এবং উপযুক্ত মানুষের ছোটো একটি টিম অনেক বেশি সফল হতে পারেন। কারণ ছোটো টিমে অনেক বেশি সময় পাওয়া যায় এবং টিমের মানুষকে অনেক সময় দেয়া যায়।

৮. পুরনো জিনিস সংশোধন করে নতুন কিছু তৈরি করুন

নতুন কিছু করতে নিজেকে উদ্যোগী করে তুলুন, প্রয়োজনে তা সংশোধন করার ক্ষমতা রাখুন। আবার কিছু জিনিস পুনরায় ব্যবহার করতে পারার অর্থ হচ্ছে নতুন করে পুরো সাইকেলটি তৈরি করতে হচ্ছে না। পুরনো সাইকেলটিতে নতুন কিছু সংযোজন বা সংশোধন করে নতুন কিছু তৈরি করা যাচ্ছে। এতে সময় এবং শ্রম দুটোরই সঠিক প্রয়োগ হচ্ছে। অপচয় হচ্ছে না কোনো কিছুই।

৯. নিজের ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগান

প্রোফেসর কেলি তার নিজের বই ‘ম্যাক্সিমাম উইলপাওয়ার’এ ৩ ধরণের ইচ্ছাশক্তির কথা উল্লেখ করেন, ‘আমি করবো, আমি করবো না এবং আমি চাই’। এই তিনটি ইচ্ছাশক্তি যদি বুঝতে পারেন তাহলেই নিজেকে অনেক বেশি কর্মক্ষম করে তুলতে পারবেন। যদি ‘আমি করবো না’ ইচ্ছাশক্তিটি আপনার মধ্যে প্রবল হয় তাহলে আপনি খুব সহজেই লক্ষ্যভ্রষ্ট হতে পারেন।

যদি ‘আমি করবো’ ইচ্ছাশক্তিটি আপনার মধ্যে প্রবল হয় তাহলে এই ইচ্ছাশক্তি লক্ষ্যের উপর নির্দিষ্ট করে ধরে রাখতে পারলে আপনি সফল হবেন। আর যদি আপনার মধ্যে ‘আমি চাই’ ইচ্ছাশক্তিটি প্রবলভাবে থাকে তাহলে আপনি নিজেই জানেন আপনি কি চান এবং নিজেকে সেভাবেই উদ্যোগী করে সফলতা নিজের করে নিতে পারবেন।