সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ডিভোর্সের ধাক্কা কাটানোর উপায়

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১১:৫০ এএম, ২৪ আগস্ট ২০১৯ শনিবার

লাভ ম্যারেজ হোক আর সেটেল ম্যারেজ হোক উদ্দেশ্য একটাই দু’জনে মিলেমিশে সুখে থাকা এবং ভবিষ্যতকে এগিয়ে নেওয়া। অনেকের ক্ষেত্রে তা আর হয়ে ওঠে না। ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক এই মধুর সম্পর্ক ডিভোর্সে গড়ায়। আবার কখনও কখনও দেখা যায়, দু’জনের তিক্ততা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে ডিভোর্স ছাড়া উপায় থাকে না। 

ডিভোর্সে মনের চাপ বেড়ে যায় অনেকটাই। বেশির ভাগ সময়ে দেখা যায় ডিভোর্স যে উপায়েই হোক না কেন, আর যে যে কারণেই হোক না কেন, অনেকে এ সময় নিজেকে অসহায় আর একাকীত্ব ভাবতে থাকেন। এর ফলে অনেকের স্মৃতিভ্রমের সমস্যাও হয়। আবার কেউ কেউ জীবন নিয়ে চরম সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলেন। 

এসব বিবেচনায় নিয়ে মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ডিভোর্সের আগে খুব ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্তে আসা জরুরি। যদি ডিভোর্স নেওয়াই একমাত্র সমাধানের পথ হয়, তাহলে মনকে সেভাবে তৈরি করাটা জরুরি। হঠাৎ ডিভোর্সের খবর পেলে তা মেনে নিতে হলে থাকতে হবে মনের জোড়ও।

এবার মনোবিজ্ঞানীদের দৃষ্টিতে ডিভোর্সের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার উপায়গুলো জেনে নিন :

মাথা ঠান্ডা রাখুন

ডিভোর্স সামলানোর প্রথম ধাপ হলো মাথা ঠান্ডা রাখা। ভেঙে পড়লে তার প্রভাব সামাজিক ও পেশাগত জীবনেও পড়বে। তাই প্রথমেই মনকে বোঝান, যে মানুষ আপনার সঙ্গে থাকতে চাইছে না, তাকে জোর করে আঁকড়ে ধরে রাখার মধ্যে কোন কৃতিত্ব নেই। এই সময় মন ভাল রাখা কঠিন, তবু বিষাদকে চেপে বসতে দেওয়া যাবে না। তাই মনের সঙ্গে শরীরকেও রাখতে হবে চাঙ্গা। আর যারা ডিভোর্স প্রসঙ্গে নানা কথা বলে তাদের সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলুন কয়েকটা দিন। শরীর চর্চায় কিন্তু ব্রেক দেয়া যাবে না। নতুন উদ্যমে তা আরও বাড়িয়ে দিন।

পুরনো স্মৃতি এড়িয়ে যান

বিয়ের উপহার বা এরকম কোন দৃশ্য কষ্ট দিলে সেসব কিছু দিনের জন্য হলেও সরিয়ে ফেলুন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শোক সামলানোর পর সম্পর্ক কেন টিকল না তা ভাবুন এবং ভুল থেকে শিক্ষাও নিন।

সাহসী হতে থাকুন

এই সময়ে সাহসী হতেই হবে। ভেতরের ক্ষত কখনও কাউকে বুঝতে দিবেন না। সবার কাছে মনের অবস্থা প্রকাশ করতে গেলে বার বার দুঃখের প্রসঙ্গগুলো উঠে আসবে যা মনের জন্য ভাল নয়। এছাড়া অনেকেই আপনার এই অবস্থায় মনে আঘাত দিতে পারে। তাই আপনাকে মনে সাহস রাখতে পারে।

নিজের যত্ন

সমাজে এ রকম অনেক ডিভোর্স হয়ে থাকে তাই এ নিয়ে নিজেকে কোনভাবে কষ্ট দেবেন না। নিজের সিদ্ধান্তে ডিভোর্স করলেও অনেক সময় পুরনো সুখের দিনগুলো ঘুরে ফিরে এসে কষ্ট দেয়। এই সময়টাতে বরং নিজেকে অন্য কোন কাজে ব্যস্ত করে ফেলুন। কোন কিছুর শখ থাকলে সেটিও শুরু করতে পারেন। সাংস্কৃতিক চর্চাও করতে পারেন। এসবে একান্তই মন না বসলে খুব কাছের বন্ধু বা পরিজনদের সময় দিন। কোথাও বেড়িয়ে আসুন। বাইরে খেতে যান বা কেনাকাটা করুন। মোদ্দাকথা, মন একটু অন্যদিকে থাকে এমন কাজে ব্যস্ত রাখুন নিজেকে।

সম্পর্কের জন্য ব্যস্ততা নয়

একাকিত্ব দূর করার জন্য নতুন সম্পর্কে জড়ানোর আগে নিজেকে কিছুটা সময় দিন। পূর্বের ভুলগুলো সামনে রেখে তারপর সিদ্ধান্ত নিন। নতুন মানুষ জীবনে এলেও তড়িঘড়ি করবেন না। সেই মানুষটির সঙ্গ ভাল লাগে, প্রয়োজনীয় মনে হয়, তবেই এগোন।

সন্তানের দিক ভাবুন

যদি সন্তান থাবে তবে ডিভোর্সের আগে সন্তানের কথা ভাবুন। চেষ্টা করুন ওর কথা ভেবে আর একটু মানিয়েগুছিয়ে একসঙ্গে থেকে যাওয়া যায় কি না। সেটা একান্তই না পারলে একসঙ্গে মিলে ঠিক করুন, সন্তান কার কাছে থাকবে। অবশ্যই সন্তানের মতামত বা ইচ্ছা জেনে নিন। চেষ্টা করুন বাকি জীবনটা সন্তানের দায়িত্ব দু’জনেই ভাগ করে নিতে। সন্তানের প্রশ্নে ইগোকে সামনে আনবেন না।

আর্থিক দিক

আইনগত ভাবে আর্থিক ভাগ-বাটোয়ারার পথ তো আছেই। এছাড়াও যদি  পরনির্ভরশীল হন, তাহলে নিজের খরচের রাশ টানুন। যেসব খরচ আগে অতিরিক্ত ছিল, সেসব ছেঁটে ফেলুন। বরং সেই টাকা ব্যয় করে এমন কিছু শিখে ফেলুন, যা আপনাকে আনন্দও দেবে আবার কিছুটা আত্মনির্ভরশীল হতে শেখাবে।