প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনেই পিএসসি পরীক্ষা
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৯:১৯ এএম, ২৬ আগস্ট ২০১৯ সোমবার
প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা নিতে প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড তৈরি করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই)। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে এ বোর্ডের অধীনেই শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা নেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এফ এম মনজুর কাদির ডেইলি বাংলদেশকে জানান, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা আয়োজনের জন্য অধিদফতরের অন্যান্য কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করা যাচ্ছে না। এতে করে পুরো বিভাগটি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। আমরা এটি কমিয়ে আনতে চাচ্ছি।
তিনি বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বন্ধ হচ্ছে না। ব্যাপক সংখ্যক শিক্ষার্থী এতে প্রতিবছর অংশগ্রহণ করছে। এ পরীক্ষা সুষ্ঠু ভাবে নিতে একটি বোর্ড তৈরি করা প্রয়োজন। এতে করে পরীক্ষার মান আরো বাড়বে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের অধীনে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার জন্য আলাদা বোর্ড তৈরি করার খবরে খুশি নন অভিভাবকরা। এই পরীক্ষার নামে শিশুদের ওপর ‘বোঝা চাপিয়ে’ দেয়া হয়েছে বলে আগে থেকেই অভিযোগ করে আসছেন অভিভাবকরা। এর কারণে প্রকৃত শিক্ষার বদলে কোচিং ও টিউশনের ওপর নির্ভরশীলতা বেড়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন অনেকে।
এ বিষয়ে ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, সমাপনী পরীক্ষা তুলে দেয়ার জন্য সরকারের কাছে আগেই আহ্বান জানিয়েছি আমরা। মাঝে শুনেছি এটি বন্ধ করে দেয়া হবে। প্রাথমিকে শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে। এখন উল্টো বোর্ড বসানো হচ্ছে। এটি মোটেও সঠিক সিদ্ধান্ত নয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন প্রবীণ শিক্ষক বলেন, আমরা কোনোভাবেই এটির পক্ষে নই। এই পরীক্ষার নামে শিশুদের মননে এখন প্রতিযোগিতা ঢুকে যাবে। এর ফলে দীর্ঘ মেয়াদে আমরাই ক্ষতিগ্রস্ত হব।
তবে ডিপিই-এর কয়েক জন কর্মকর্তা বোর্ড তৈরির পক্ষে মতামত দিয়েছেন। ডেইলি বাংলাদেশের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, প্রাথমিকের অর্ধেক পরীক্ষার্থী নিয়েও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ১১টি শিক্ষা বোর্ড রয়েছে। তাহলে আমাদের থাকতে সমস্যা কোথায়? সমাপনী পরীক্ষাকেও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার সময় এসেছে।
এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড তৈরি করার জন্য প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। এটি দ্রুত বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছরে ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারি করা হয়েছে। এগুলো সহ বর্তমানে সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে প্রায় ৬৬ হাজার। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিবছর ৩০ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেয়।