অর্ধ লক্ষ মানুষের আয়ের পথ তৈরী করেছে শাপলা ফুল
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৮:৫৫ এএম, ৩১ আগস্ট ২০১৯ শনিবার
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া, টুঙ্গিপাড়া, কাশিয়ানী ও মুকসুদপুর উপজেলা বিল অধ্যুষিত এলাকা। বর্ষা মৌসুমে এসব এলাকার বিভিন্ন খাল-বিল ও জলাশয় পানিতে তলিয়ে যায়। এ পানিতে প্রাকৃতিকভাবেই জন্ম নেয় শাপলা ফুল। বর্ষা মৌসুমে খাল-বিল ও জলাশয় থেকে শাপলা সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন এসব এলাকার প্রায় অর্ধ লক্ষ মানুষ।
বর্ষা মৌসুমে কৃষকের তেমন কোন কাজ না থাকায় এলাকার অনেক কৃষক, বেকার ও অন্যান্য পেশার লোক বর্তমানে এ পেশায় জড়িয়ে পড়েছে। পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ এই শাপলা একদিকে যেমন সবজির চাহিদা মেটাচ্ছে, তেমনি অন্যদিকে বর্ষকালে কাজ না থাকা বেকার মানুষের আয়ের পথ তৈরী করে দিচ্ছে।
শাপলা ফুল সাধারণত বর্ষায় ডুবে যাওয়া বোরো ধানক্ষেত, পাটক্ষেত ও আমন ধান ক্ষেতে বেশি জন্মায়। শাপলা শুধু জাতীয় ফুলই নয়, নানা অঞ্চলের মানুষের কাছে সবজি হিসেবেও বেশ জনপ্রিয়।
বিলগুলোতে খুব ভোরে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষেরা নৌকা নিয়ে ঘুরে ঘুরে শাপলা সংগ্রহ করে। কোন পুঁজির প্রয়োজন হয় না বলে এ পেশা বেশ লাভজনক।
শাপলা বিক্রিকে কেন্দ্র করে কাশিয়ানী উপজেলার রাহুথড়ে পাইকারী বাজার গড়ে উঠেছে। ভোরের আলো ফুটতেই এ বাজারে আশপাশের গ্রামসহ প্রত্যন্ত এলাকা থেকে শাপলা সংগ্রহকারীরা জড়ো হন। ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগমে মুখরিত হয় এ বাজার। শাপলা ফুলের সাদা আভায় আচ্ছাদিত হয়ে যায় সড়কে বসা পুরো বাজার। পাইকাররা এসব শাপলা কিনে জেলা সদরসহ পাশর্^বর্তী যশোর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, নড়াইল ও লোহাগড়ায় বিক্রি করে থাকেন।
শাপলার পাইকারি আড়তের ইজারাদার সংকর কুমার বসু বলেন, প্রতিদিন সকালে বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ পাইকারী বিক্রির জন্য এখানে নিয়ে আসে শাপলা। পাইকারীররা এসব শাপলা কিনে ভ্যান, ইজিবাইক ও নছিমন করে গোপালগঞ্জ সদরসহ যশোর, খুলনা, আলফাডাঙ্গা ও ভাটিয়াপাড়া নিয়ে বিক্রি করে। প্রতিদিন প্রায় ৩০/৪০ গাড়ী শাপলা এখান থেকে বিভিন্ন জেলায় যায়।
শাপলা সংগ্রহকারী হীরা বিশ্বাস বলেন, আমি দীর্ঘ ১১ বছর ধরে বর্ষাকালে শাপলা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। প্রতিদিন প্রায় ৮/৯ শ’ টাকার শাপলা সংগ্রহ করতে পারি। ভোরে বাজারে পাইকারী বিক্রি করে দেই।