শনিবার   ০২ নভেম্বর ২০২৪   কার্তিক ১৮ ১৪৩১   ২৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

নীল দুনিয়ার অজানা কথা জানালেন মিয়া খলিফা

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০২:১৪ পিএম, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ মঙ্গলবার

মন দিয়ে স্নাতক পড়ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে। নিজেকে গুটিয়ে রাখতেন ক্যাম্পাস জীবনে। হঠাৎ একদিন তার মনে হলো আত্ম-সম্মান বোধের ঘাটতি রয়েছে তার। পাচ্ছেন না আত্ম-বিশ্বাস। সমাধানে ব্যায়াম করা শুরু করলেন। কমালেন ৫০ পাউন্ড ওজন। তাতেও মন ভরেনি। সার্জারি করিয়ে বড় করলেন স্তনের আকার। তবু মনে হচ্ছিলো কোন উন্নতি হয়নি।

একদিন তাকে পর্ন অভিনয়ের প্রস্তাব দেন এক মার্কিন পরিচালক। বুঝে না বুঝে রাজি হয়ে যান মিয়া। ভেবেছিলেন এতে বাড়বে আত্ম-সম্মান বোধ, আত্ম-বিশ্বাসও। বলছি সাবেক পর্ন তারকা মিয়া খলিফার কথা।

 

মিয়া খলিফা বলেন, প্রথমদিন পর্ন অভিনয় করার পর একই সঙ্গে লজ্জা ও অপরাধবোধ কাজ করছিলো। একই সঙ্গে মনে হচ্ছিলো আমি ঠিক করা করেছি। তখন আমি আসলে ২১ বছর বয়সী একটা গাধা ছিলাম।

মানুষ এক জীবনে অনেক ভুল করে। সে সব ভুল শুধরেও নেয় অনেকে। কিন্তু ভুলের অনুশোচনা বুকে বয়ে চলে নীরবে নিভৃতে। তেমনি অনুশোচনায় জ্বলছেন মিয়া খলিফা। নীল ছবি থেকে অনেক আগেই নিজেকে বের করে এনেছেন। আপাত দৃষ্টিতে সাদামাটা জীবন তার। উপস্থাপনাসহ নানা রকম পেশায় জীবন চালানোর চেষ্টা করছেন। তবে নিজের জীবনের ভয়াবহ তিন মাসের অভিজ্ঞতা ভুলতে পারেন না তিনি।

যতোই সুন্দর জীবনের চেষ্টা করুক না কেন গোটা দুনিয়ায় তার পরিচিতি নীল ছবির তারকা হিসেবেই। এখনো লোকে তাকে সে চোখেই দেখে। তিনি বুঝতে পারেন এ পরিচয়টা কাটাতে তার সময় লাগবে। কিংবা হয়তো কোনো দিনই মুছবে না।

সম্প্রতি সংবাদ সংস্থা বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, অল্প বয়সে অজানা রঙিন জগতে হারিয়ে যাওয়ার তিন মাসের মাথায় মোহভঙ্গ হয়। সম্মান ও সময়ের বিনিময়ে সেভাবে টাকাও রোজগার করতে পারিনি। ২০১৫ সালেই বেরিয়ে এসেছি নীল দুনিয়া থেকে। অথচ হারানো সম্মান ফিরে পাইনি, স্বাভাবিক জীবনও পাইনি।

 

আবেগপ্রবণ মিয়া বলেন, আমার ব্যক্তিগত জীবনটা তছনছ হয়ে গেছে। আজও রাস্তাঘাটে লোকজনের মাঝে নিজেকে নিয়ে ভীষণ হীনমন্যতায় ভুগি। নীল ছবির জগৎ থেকে বের হওয়াটা সহজ নয় কখনোই। এই ইন্ডাস্ট্রিতে ঢোকার পর একের পর এক পাকচক্রে জড়িয়ে পড়েন অল্প বয়সী মেয়েরা। পর্নো ইন্ডাস্ট্রির ব্ল্যাকহোল টেনে নেয় অল্প বয়সী মেয়েদের। নারী পাচারকারীদের মাধ্যমেও ছোট ছোট মেয়েরা পর্নো ইন্ডাস্ট্রিতে আসতে বাধ্য হয়।

তিনি আরো বলেন, বহু মেয়ে অপরিণত মনে, ভুল সিদ্ধান্ত ও কিছু মানুষের পাল্লায় পড়ে নিজের জীবন নষ্ট করে দিয়েছে। আমায় এ ধরনের অনেক মেয়েই মেইল করে সেকথা জানিয়েছে। সেগুলো ভয়াবহ।

তার ভাষ্যমতে, পর্ন ইন্ডাস্ট্রির আসল রূপ বুঝতে পেরেই কোনো মতে সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। তার পর্নো ছবি করার কথা জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গেই তাকে তার বাবা-মা ও পরিবারের লোকজন ত্যাগ করেছেন। পর্ন ছেড়ে দেয়ার পরেও আর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি তাদের সঙ্গে। তবে সময়ের সঙ্গে ক্ষত কমে যাবে সেই বিশ্বাস বুকে ধরে আছেন তিনি।