বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের শাহাদতবার্ষিকী আজ
নিউজ ডেস্ক:
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৮:৫২ এএম, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৪৮তম শাহাদতবার্ষিকী আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে যশোরের গোয়ালহাটি গ্রামে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ সমরে লড়াই করে শহীদ হন তিনি। যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিপুর গ্রামে তাকে সমাহিত করা হয়।
১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদরের চন্ডীবরপুর ইউপির মহিষখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এই বীরশ্রেষ্ঠ। বর্তমানে ওই গ্রামের নামকরণ করা হয়েছে ‘নূর মোহাম্মদ নগর’। তার বাবার নাম মোহাম্মদ আমানত শেখ ও মা জেন্নাতুন্নেছা, মতান্তরে জেন্নাতা খানম। বাল্যকালেই বাবা-মাকে হারান তিনি। সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন।
১৯৫৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসে (ইপিআর) যোগদান করেন তিনি। দীর্ঘদিন দিনাজপুর সীমান্তে চাকরি করার পর ১৯৭০ সালের ১০ জুলাই যশোর সেক্টরে বদলি হন। পরবর্তীতে ল্যান্স নায়েক হিসেবে পদোন্নতি পান।
তিনি ৮ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার নেতৃত্বে যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিপুর সীমান্তের বয়রা অঞ্চলে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। পাকবাহিনীর গুলিতে সহযোদ্ধা নান্নু মিয়া গুরুতর আহত হলেও তাকে কাঁধে নিয়েই শত্রুপক্ষের সঙ্গে যুদ্ধ করেন। হঠাৎ পাকবাহিনীর মর্টারের আঘাতে নূর মোহাম্মদের হাঁটু ভেঙে যায়। তবুও গুলি চালানো বন্ধ করেননি তিনি। শত্রুমুক্ত করতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যান।
১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোরের গোয়ালহাটি ও ছুটিপুরে পাকবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে তিন সঙ্গীকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন উৎসর্গের অনন্য নজির স্থাপন করেন তিনি।
বর্তমানে তার ছেলে গোলাম মোস্তফা কামাল ও তিন মেয়ে রয়েছেন। গত বছর স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেসা মারা যান।
তার স্মৃতি রক্ষার্থে নূর মোহাম্মদ নগরে নির্মাণ করা হয়েছে ‘বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর’ এবং স্মৃতিস্তম্ভ। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং মহাবিদ্যালয়।
দিবসটি উপলক্ষে নূর মোহাম্মদ নগরে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ ট্রাস্টের উদ্যোগে স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি, র্যালি, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।