সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফ্রিল্যান্সারদের মাধ্যমে বছরে আয় ৮৫০ কোটি টাকা

নিউজ ডেস্ক:

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১২:৩২ পিএম, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ শুক্রবার

বৈশ্বিক ডিজিটাইজেশন ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সুবাদে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ডিজিটাল আউটসোর্সিংয়ে বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দেশ হয়ে উঠছে এখন বাংলাদেশ। বৈশ্বিক এ খাতে বাংলাদেশের প্রায় সাড়ে ৬ লাখ ফ্রিল্যান্সার কাজ করছেন, যাদের মাধ্যমে প্রতিবছর দেশে ১০ কোটি ডলারের বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আসছে।

যা স্থানীয় মুদ্রায় ৮৫০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে)।

জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়নবিষয়ক সংস্থা আঙ্কটাডের ‘ডিজিটাল ইকোনমাই রিপোর্ট-২০১৯’ শীর্ষ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনটি বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে। এ প্রতিবেদনটি আগে ‘ইনফর্মেশন ইকোনমাই রিপোর্ট’ নামে প্রকাশিত হতো।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে আউটসোর্সিংয়ের ব্যাপক প্রসার হয়েছে। ২০১১ সালে এ খাতে মাত্র ১০ হাজার ফ্রিল্যান্সার কাজ করত। ২০১৩ সালে তা বেড়ে ৩০ হাজারে দাঁড়ায়। ডিজিটাইজেশন ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে ২০১৭ সালে তা ৫ লাখে দাঁড়ায়। এ ছাড়া বাংলাদেশের আইটি খাতে ৩ লাখের বেশি পেশাজীবী কাজ করছে।

আঙ্কটাডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, একটি দেশের অর্থনৈতিক ডিজিটাইজেশন শুধু পণ্য ও সেবার উদ্ভাবনই বাড়ায় না, সেই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ বাজারে বিপুল কর্মসংস্থান তৈরি করে ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে জোরালো করে। কম খরচ ও ঝুঁকি বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়াসহ উন্নত বিশ্বের অনেক বড় বড় কোম্পানি এখন বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে আইটি আউটসোর্সিং করছে। এতে বাংলাদেশ হয়ে উঠছে ফ্রিল্যান্সিং কর্মসংস্থানের একটি বড় উৎস।

ফ্রিল্যান্সিং কাজের মধ্যে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং থেকে শুরু করে ওয়েব ডিজাইন, কর প্রতিবেদন প্রস্তুতকরণ ও অনুসন্ধান ইঞ্জিন ওপটিমাইজেশনসহ অনেক কাজই রয়েছে। তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক এসব কাজ উদীয়মান দেশগুলোতে কর্মসংস্থানের বিপুল সুযোগ তৈরি করেছে, যা আগে ছিল না। ফলে বাকি বিশ্বকে আউটসোর্সিং সেবা দেয়ার দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষস্থানে রয়েছে এখন এশিয়া।

ফ্রিল্যান্সিং কাজের ক্ষেত্রে একজন মানুষ প্রথাগত চাকরির চেয়ে অনেক বেশি স্বাধীনতা ও সুবিধা পেয়ে থাকেন। যে কোনো স্থান থেকে যে কোনো সময় কাজ করা যায়, রাস্তার জ্যাম পেরিয়ে অফিসে যেতে হয় না, নিজের বাসায়ই কাজ করা যায়। ক্লায়েন্ট বা প্রকল্প নিজের পছন্দমতো নেয়া যায় এবং বৈশ্বিক বাজারে প্রবেশ করা যায়। ফলে বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং হয়ে উঠেছে অনেক বাংলাদেশির জন্য পছন্দের ক্যারিয়ার।

বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ডিজিটাইজেশন উদ্যোগের ফলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মোবাইল ইন্টারনেটের পাশাপাশি ব্রডব্যান্ড সেবাও ছড়িয়ে পড়ছে। এতে এ দেশের তরুণ-তরুণীদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং অনেক সহজ হয়ে গেছে। বর্তমানে এ দেশের নিবন্ধিত ফ্রিল্যান্সার রয়েছে ছয় লাখ ৫০ হাজার। এর মধ্যে প্রায় পাঁচ লাখ নিয়মিত কাজ করছে। বাংলাদেশের আইসিটি ডিভিশনের তথ্য অনুযায়ী তারা বার্ষিক ১০ কোটি ডলার আয় করছে।

শ্রমব্যয় কম থাকায় বিশ্বের আউটসোর্সিং বাজারে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে বাংলাদেশ। তবে এখনও বেশকিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে বাংলাদেশের। সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে ইন্টারনেট সেবার মান।

ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মূল্যও অনেক বেশি। প্রত্যন্ত অঞ্চলে থাকা ফ্রিল্যান্সারদের জন্য এটা অনেক বড় সমস্যা। ব্রডব্যান্ড সুবিধা থাকলেও অনেক সময় তা ধীরগতির হয়। আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে টাকার সহজ লেনদেন ব্যবস্থা।