মৃত্যুর পর এক বছরেরও বেশি সময় সচল থাকে মানবদেহ
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০২:০৩ পিএম, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ শনিবার
মৃত্যুর পর মরদেহে কী রকম ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ঘটে বা আ-দৌ কোনো ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ঘটে কি না তা নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে অস্ট্রেলিয়ার এক বিজ্ঞানী জানালেন, মৃত্যুর পর এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সচল থাকে মানবদেহ। দীর্ঘ ১৭ মাস এক মরদেহের ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর অ্যালিসন উইলসন নামের এই বিজ্ঞানী এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। তার এ গবেষণা বিশ্বের সব গোয়েন্দা ও প্যাথোলজিস্টদের জন্য বিশেষ সহায়ক হতে পারে বলে দাবি করেছেন তিনি।
আজ শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, গবেষণায় তিনি দেখেছেন, মানুষ মারা যাওয়ার পর আসলে নিস্ক্রিয় থাকে না, যেটাকে বলা হয় চিরনিদ্রায় শায়িত।
মরদেহটি পরীক্ষার জন্য প্রতি মাসে একবার করে অস্ট্রেলিয়ার কেয়ার্ন শহর থেকে সিডনি ছুটে গেছেন এই বিজ্ঞানী। এতে তার প্রতি ফ্লাইটে সময় লেগেছে তিন ঘণ্টা।
অস্ট্রেলিয়ার হেমিস্ফেয়ার শহরের দক্ষিণাঞ্চলে মরদেহের একটি ফার্ম রয়েছে, যেটি শহরটি থেকে অনেক দূরে গোপনীয় একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত। তবে ময়নাতদন্ত-সম্পর্কিত গবেষণার জন্য প্রতিষ্ঠিত ফার্মটি সরকারিভাবে ‘দ্য অস্ট্রেলিয়ান ফ্যাকাল্টি ফর ট্যাফোনমিক এক্সপেরিমেন্টাল রিসার্চ’ বা ‘আফটার’ নামেই বেশি পরিচিত। এখানে ৭০টি মরদেহ রাখা আছে। এগুলোর একটিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছিলেন বিজ্ঞানী অ্যালিসন।
অ্যালিসন ও তার সহকর্মীদের গবেষণার বিষয় ছিল-টাইম ল্যাপস ক্যামেরা ব্যবহার করে কোনো মৃতের মরে যাওয়ার প্রকৃত সময়টা বের করা এবং এ সময়টা মরদেহে কী রূপ ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া চলে সে সম্পর্কে একটা ধারণা নেয়া।
বিজ্ঞানী অ্যালিসন বলেছেন, ‘মৃত্যুর পর মানবদেহে যে কার্য চলে তা মূলত মানবদেহ পচনের ওপর নির্ভর করে। বিশেষ করে মরদেহ মমি বা অন্য কোনোভাবে সংরক্ষণ করে রাখা হলে সেখানে অঙ্গের সক্রিয়তা ভিন্ন হতে পারে।’
তার এ গবেষণা মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে এবং গোয়েন্দাদের ক্রাইম সিন সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিতে সাহায্য করবে বলে জানান এই বিজ্ঞানী।
তার গবেষণাটি সম্প্রতি ‘ফরেনসিক সায়েন্স ইন্টারন্যাশনাল : সার্জারি’ জার্নালে প্রকাশ হয়েছে।