সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক মানের রাবার যন্ত্রাংশ তৈরি হচ্ছে খুলনা শিপইয়ার্ডে

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৯:১৪ এএম, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ রোববার

দেনার দায়ে ডুবতে বসা খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে। লাভজনক এ প্রতিষ্ঠানটির একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান খুলনা শিপইয়ার্ড রাবার ফ্যাক্টরিই এখন বছরে ৩০ কোটি টাকা মুনাফা করবে। দেশে প্রথম আন্তর্জাতিক ও গুণগত মানসম্পন্ন রাবার যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানা স্থাপন করেছে নৌবাহিনী পরিচালিত খুলনা শিপইয়ার্ড।

এ ফ্যাক্টরিতে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডসহ মেরিটাইম সংস্থার জাহাজ, সাবমেরিন, টাগবোট, পন্টুন, জেটিসহ অন্যান্য মেরিন রাবার আইটেম যন্ত্রাংশ তৈরি করা হচ্ছে। এখানে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, তাইওয়ান, ইন্দোনেশিয়া ও চীনসহ বিদেশ থেকে আমদানিকৃত রাবারের কাঁচামাল ব্যবহৃত হচ্ছে।

 

কারখানাটি সম্পূর্ণভাবে উৎপাদনে গেলে বছরে বিপুল পরিমাণ টাকার যন্ত্রাংশ তৈরি করবে। যা দেশের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি কয়েক হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে। বিদেশে প্রশিক্ষিত কর্মী ও প্রকৌশলীদের তত্ত্বাবধানে সম্পূর্ণ অটোমেটিক পদ্ধতিতে মাননিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে পণ্য উৎপাদিত হওয়ায় এ কারখানাটি ইতোমধ্যেই আর্ন্তজাতিক সনদও লাভ করেছে।

khulna-KSY

খুলনা শিপইয়ার্ডের রাবার ফ্যাক্টরির জেনারেল ম্যানেজার (ডিজাইন ও প্লানিং) ক্যাপ্টেন এম শহিদুল্লাহ আল ফারুক (ই) পিএসসি, বিএন জাগো নিউজকে জানান, ১৯৫৭ সালে খুলনার রূপসা নদীর তীরে ৬৮.৯৭ একর জমিতে খুলনা শিপইয়ার্ড গড়ে উঠলেও নানা কারণে ১৯৮০ সালের দিকে রুগ্ন শিল্পে পরিণত হয়। ১৯৯৯ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে মৃত প্রায় খুলনা শিপইয়ার্ডকে নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করার পর ২০১৩-১৪ সাল থেকে যুদ্ধ জাহাজসহ সব ধরনের জলযান তৈরিতে সক্ষমতা অর্জন করে। কিন্তু এসব যুদ্ধ জাহাজসহ সামুদ্রিক জলযানের জন্য প্রয়োজনীয় রাবার আইটেম ও খুচরা যন্ত্রাংশ তৈরির জন্য মানসম্পন্ন কারখানা না থাকায় সঠিক সময় ও গুণগত মানসম্পন্ন জাহাজ নির্মাণ যেমন ব্যাহত হচ্ছে। তেমনি বিদেশ থেকে এসব রাবার যন্ত্রাংশ আমদানি করতে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হচ্ছে।

khulna-KSY

এ অবস্থায় বিপুল পরিমাণ চাহিদার ঘাটতি পূরণ এবং গুণগত রাবার যন্ত্রাংশ তৈরির লক্ষ্য নিয়ে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড ৫০ হাজার বর্গফুট আয়তনের আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন রাবার ফ্যাক্টরি স্থাপন করে। বিশেষায়িত এ কারখানায় উন্নত প্রযুক্তি, প্রোডাকশন ও টেস্ট ইক্যুইপমেন্ট, কোয়ালিটি কন্ট্রোল ও টেস্ট ল্যাবরেটরির মাধ্যমে নৌবাহিনীসহ অন্যান্য মেরিটাইম সংস্থার জাহাজ, সাবমেরিন, টাগবোট, পন্টুন, জেটি ও অন্যান্য মেরিন রাবার রাবার যন্ত্রাংশ তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া স্পেশালাইজড যানবাহনসহ অন্যান্য অটোমোবাইলের মানসম্মত কাস্টমাইজড খুচরা রাবার যন্ত্রাংশ তৈরি করাও সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, খুলনা শিপইয়ার্ডের রাবার ফ্যাক্টরিতে নিজস্ব ডিজাইন হাউজ, অত্যাধুনিক মেশিন, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রেস, টেস্ট ইক্যুইপমেন্টসহ পূর্ণাঙ্গ ল্যাবরেটরি ও গবেষণাগার রয়েছে। এছাড়া বিদেশে প্রশিক্ষিত ইঞ্জিনিয়ারসহ দক্ষ কর্মীর দ্বারা আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে রাবার যন্ত্রাংশ তৈরি হচ্ছে। যা দেশীয় শিল্পের সক্ষমতা সৃষ্টি করেছে।

khulna-KSY

কারখানার পূর্ণাঙ্গমাত্রায় উৎপাদন সম্ভব হলে দেশের মেরিটাইম সংস্থাসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় রাবার যন্ত্রাংশের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বছরে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে বলে মনে করছেন এ শীর্ষ কর্মকর্তা।

বিদেশে প্রশিক্ষিত দক্ষ কর্মী ও প্রকৌশলীদের তত্ত্বাবধানে সম্পূর্ণ অটোমেটিক পদ্ধতিতে কঠোর মাননিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে পণ্য উৎপাদিত হওয়ায় কারখানাটি ইতোমধ্যেই ব্যুরো ভেরিটাসসহ আর্ন্তজাতিক স্বীকৃতিও লাভ করেছে।