‘পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীর’ তৈরিতে নেহরুকে দুষছেন অমিত
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ১১:১৮ এএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বুধবার
কাশ্মীর ভেঙে একাংশ পাকিস্তানের হস্তগত হওয়ার পেছনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে দায়ী করেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার মতে, পাকিস্তানের সঙ্গে নেহরু সরকারের ‘অসময়ে যুদ্ধবিরতি চুক্তি’ করার কারণে ‘পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীর’ তৈরি হয়।
ক্ষমতাসীন বিজেপির ঘাঁটি বলে পরিচিত মহারাষ্ট্রে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে অমিত শাহ এ মত প্রকাশ করেন। মহারাষ্ট্রে এখন ক্ষমতাসীন বিজেপিই। সামনের মাসের নির্বাচন ঘিরে প্রচারণার অংশ হিসেবেই সমাবেশে বক্তব্য রাখছিলেন বিজেপি নেতা অমিত শাহ।
মহাত্মা গান্ধীকে ভারতের ‘জাতির জনক’ মানা হলেও স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নেতা ছিলেন জওহরলাল নেহরু। ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের পূর্ব ও পরবর্তী কেন্দ্রীয় নেতা নেহরুই ছিলেন স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। তবে নেহরু কংগ্রেসের নেতা ছিলেন বিধায় ভারতের এখনকার সবচেয়ে প্রভাবশালী দল বিজেপির নেতারা বরাবরই তার সমালোচনা করে আসছে।
এই সমালোচনারই ধারাবাহিকতায় অমিত সম্প্রতি কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদায় ভারতের সংবিধানে রাখা ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের বিষয় উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন, নেহরু যদি অসময়ে পাকিস্তানের সঙ্গে ওই চুক্তিতে না যেতেন, তবে পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীর বলতে কিছু থাকতো না। তখন নেহরুর বদলে কাশ্মীরের বিষয়টি (প্রিন্স-শাসিত স্বাধীন কাশ্মীর কার সঙ্গে একীভূত হবে) সরদার প্যাটেলকে (তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) দেখাশোনা করার দায়িত্ব দেওয়া উচিত ছিল। ভারতবর্ষে প্রিন্স-শাসিত যেসব রাজ্যই সরদার প্যাটেল দেখাশোনা করেছেন, সব ভারতের অংশ হয়ে গেছে।
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকরা চলে যাওয়ার সময় উপমহাদেশ ভাগ হয়ে গেলে তখন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের একাংশের শাসকেরা বিশেষ শর্তে ভারতে যোগ দেন। এই অবস্থায় রাজনৈতিক সংকট তৈরি হলে নানা সংঘাতের পর চুক্তি অনুসারে কাশ্মীরের পশ্চিম-উত্তরাংশ পাকিস্তানের হাতে চলে যায়, যেটা বর্তমানে আজাদ-কাশ্মীর বলে পরিচিত সেখানে। ওই অঞ্চলটি স্ব-শাসিত পাকিস্তানে।
আর ভারতের শাসিত কাশ্মীরের সেই ‘বিশেষ শর্ত’ রক্ষায় সংবিধানে এত বছর ধরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ থাকলেও সম্প্রতি তা বাতিল করে দেয় বিজেপি সরকার। ওই অনুচ্ছেদটির আওতায় কাশ্মীর আলাদা সংবিধান ও পতাকার স্বাধীনতা ভোগ করতো। এমনকি সেখানে সরকারি চাকরি, জমি কেনা এবং ব্যবসা করার সুযোগটিও ছিল কেবল কাশ্মীরিদের জন্যই। কিন্তু ওই অনুচ্ছেদ বাতিলের কারণে সেসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে কাশ্মীরিরা।
এ নিয়ে বিরোধী অন্য দলগুলোর পাশাপাশি কংগ্রেসের সমালোচনার জবাবে অমিত শাহ বলেন, ৩৭০ অনুচ্ছেদ তুলে নেওয়ার পেছনে কংগ্রেস রাজনীতি খুঁজছে। কিন্তু এটা আমাদের জন্য জাতীয়তাবাদ।