আরও চার রুশ যুদ্ধবিমান পাচ্ছে মিয়ানমার
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০২:১৭ এএম, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২ বুধবার
রাশিয়া থেকে আরও চার যুদ্ধবিমান পাচ্ছে মিয়ানমার। সুখোই এসইউ-৩০এসএম মডেলের যুদ্ধবিমানগুলো খুব শিগগিরই সরবরাহ করা হবে। মিয়ানমার জান্তা সরকারের এক মুখপাত্র মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সময় অনলাইন
গত বছর সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারের শান, চিন ও রাখাইন রাজ্যে জান্তা বাহিনী ও বিদ্রোহী যোদ্ধাদের মধ্যে লড়াই চলছে। প্রতিরোধ যোদ্ধা ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বিমান হামলা চালাচ্ছে জান্তা বাহিনী। এর মধ্যেই চলতি বছরের মার্চ মাসে এসইউ-৩০ মডেলের দুটি যুদ্ধবিমান হাতে পায় মিয়ানমার।
এবার আরও চারটি রুশ যুদ্ধবিমান পেতে যাচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটি। জান্তা সরকারের মুখপাত্র জ মিন তুন বলেন, চলতি মাসে রাশিয়া সফরকালে যুদ্ধবিমানগুলো সরবরাহের ব্যাপারে রুশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন জান্তা সরকারের প্রধান মিন অং হ্লাইং। তিনি বলেন, যুদ্ধবিমানগুলো শিগগিরই সরবরাহ করা হবে।
ইরাবতীর প্রতিবেদনমতে, অত্যাধুনিক ছয়টি যুদ্ধবিমান ক্রয়ের জন্য ২০১৮ সালে রাশিয়ার সঙ্গে ২০ কোটি ৪০ লাখ ডলারের একটি চুক্তি করে মিয়ানমার। ওই চুক্তির আওতায় বিমানগুলো সরবরাহ করছে মস্কো। দুটি ইতোমধ্যে সরবরাহ করা হয়েছে। বাকি রয়েছে আরও চারটি।
খবরে বলা হয়, চুক্তি অনুযায়ী শুধু যুদ্ধবিমানই নয়, এর সঙ্গে মিয়ানমারে বেশ কয়েকজন প্রশিক্ষক ও প্রকৌশলীও পাঠায় দেশটি। প্রশিক্ষক ও প্রকৌশলীরা যুদ্ধবিমান পরিচালনায় মিয়ানমার বিমানবাহিনীকে সহায়তা করছে।
সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেয়া বিমানবাহিনীর সাবেক একাধিক কর্মকর্তা জানান, জান্তার বিমানবাহিনীকে প্রশিক্ষণের জন্য একাধিক রুশ পাইলট ও প্রকৌশলী রাজধানী নেপিদো ও মান্দালয় বিমানঘাঁটিতে অবস্থান করছে।
মিয়ানমারের যুদ্ধকালীন সম্পদ সাধারণত অভিযান এলাকায় রাখা হয়ে থাকে; বিশেষ করে দেশটির সীমান্ত এলাকায়। তবে নতুন দুটি এসইউ-৩০ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করা হয় নেপিদো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।
রোহিঙ্গা গণহত্যার পরের বছর রাশিয়ার সঙ্গে এসইউ-৩০ যুদ্ধবিমান ক্রয়চুক্তি করে মিয়ানমার। সে সময় মিয়ানমার সফর করেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগু। ওই সফরের সময় ছয়টি বিমান বিক্রি করতে সম্মত হয় মস্কো।
ওই সময় রাশিয়ার উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী লেফটেন্যান্ট জেনারেল আলেক্সান্ডার ফোমিন বলেন, এই বিমানগুলো মিয়ানমারের বিমানবাহিনীর মূল যুদ্ধবিমান হয়ে উঠবে। দেশটির আঞ্চলিক সার্বভৌমত্ব ও সন্ত্রাসবাদী হুমকি মোকাবিলার প্রধান অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে বলেও জানানো হয় ওই বিবৃতিতে।
এর আগেও রাশিয়া থেকে কয়েকটি মডেলের আরও বেশ কয়েকটি যুদ্ধবিমান কিনেছে মিয়ানমার। এর মধ্যে রয়েছে, মিগ-২৯, ইয়াক-১৩০ ও এমআই ২৪ হেলিকপ্টার গানশিপ।
২০১৭ সালের আগস্টের শেষদিকে স্থানীয় সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের ওপর ‘গণহত্যা‘ চালায় মিয়ানমার। সে সময় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নজিরবিহীন নির্যাতনের শিকার হয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ১১ লাখের বেশি।
জাতিসংঘ ও বেশ কয়েকটি দেশ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এ নির্যাতনকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। তবে মিয়ানমার সেনাবাহিনী শুরু থেকেই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অধিকাংশ দেশ ও সংস্থা রোহিঙ্গা নিপীড়নের ঘটনায় সমালোচনায় মুখর হলেও মিয়ানমারের সেনা অভিযানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে রাশিয়া।