বিদ্যুৎহীন কিয়েভ ছেড়ে পালাচ্ছেন অনেকে, পানির জন্য দীর্ঘ লাইন
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০৪:১০ এএম, ২ নভেম্বর ২০২২ বুধবার
রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে পানির সংকট দেখা দিয়েছে। হাজারো মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে পানি সংগ্রহ করছেন। কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো জানিয়েছেন, রাজধানী শহরের ৪০ শতাংশ লোক এখন পানির সংকটে আছে এবং প্রায় পৌনে ৩ লাখ পরিবারে এখনো বিদ্যুৎ-সংযোগ পুনঃস্থাপন হয়নি। বিদ্যুত্হীন কিয়েভ থেকে অনেক মানুষ চলে যাচ্ছেন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে।
রাশিয়া জানিয়েছে, ইউক্রেনের সামরিক স্থাপনা এবং জ্বালানিব্যবস্থা ছিল তাদের হামলার লক্ষ্য এবং সব লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সোমবার বলেছেন, শনিবার বন্দর নগরী সেভাস্টোপোলে ড্রোন হামলা চালিয়ে রাশিয়ার একটি যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করেছে ইউক্রেন। জবাব হিসেবে এই হামলা চালানো হয়েছে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা রাশিয়ার ছোড়া ৪৫ থেকে ৫৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে।
রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনাসমূহ কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নিরাপত্তাজনিত কারণে তা বাকি বিশ্বের সামনে প্রকাশ করেনি বলে জানাচ্ছে দেশটি। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, ভবিষ্যতে আরো হামলার লক্ষ্যবস্তু হওয়ার আশঙ্কা এড়াতেই এটি করা হয়েছে। কিন্তু সোমবারের হামলার চিহ্ন ছড়িয়ে আছে সবখানে। কয়েকটি অঞ্চলে এখনো বিদ্যুতের সংযোগ ফেরেনি। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বিদ্যুৎ ব্যবহারে ইউক্রেনীয় নাগরিকদের অত্যন্ত মিতব্যয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিয়েভে সড়কের বাতিগুলো নিভিয়ে রাখা হয়েছে এবং ট্রলি বাসের পরিবর্তে প্রচলিত বাস সার্ভিস চালানো হচ্ছে। বাড়িতে পানি না পেয়ে সড়কে থাকা পাম্পগুলো থেকে পানি সংগ্রহের জন্য হাজারো মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
কিয়েভের ৮০ শতাংশ বাড়ি এখনো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। হাজার হাজার মানুষ কিয়েভ ছেড়ে পালিয়ে অন্যত্র যাচ্ছেন। তারা আতঙ্কে আছেন। সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় জেলেনস্কি বলেছেন, বিদ্যুৎ-পানির সংযোগ স্থাপনের জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ভিন্ন এক বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনীয়দের বেঁচে থাকার ইচ্ছা মেরে ফেলার ক্ষেপণাস্ত্র নেই রাশিয়ার।’ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় রাজধানী কিয়েভ ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য এলাকার মধ্যে রয়েছে লাভিভ, খারকিভ, জাপোরিশা এবং দনিপ্রপেট্রোভস্ক।
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলেছেন, মোট ১০টি অঞ্চলের ১৮টি স্থাপনা, যার বেশির ভাগই জ্বালানি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউক্রেনের বিমান বিধ্বংসী প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভূপাতিত করেছে এমন একটি ক্ষেপণাস্ত্র মলদোভার একটি সীমান্ত শহরে গিয়ে পড়েছে। মলদোভার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এতে সেখানকার বেশকিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিন্তু কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। মলদোভা পরে বলেছে যে, চিসিনাউতে রুশ দূতাবাসের একজন কর্মীকে এলাকা ত্যাগ করতে বলা হয়েছে। যদিও ঐ ব্যক্তির বিস্তারিত পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। —বিবিসি