শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১   ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কংগ্রেস দখলে দুই দল মরিয়া

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০৩:৪২ এএম, ৫ নভেম্বর ২০২২ শনিবার

মঙ্গলবার মধ্যবর্তী নির্বাচন : হোকুল-জেলডেন জোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা

আজকাল রিপোর্ট
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনের আর চার দিন বাকি। ৮ নভেম্বর মঙ্গলবার এ নির্বাচন। এই ভোট নির্ধারণ করবে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জনপ্রিয়তার মানদন্ড। এ নির্বাচনে লড়াই হবে কংগ্রেস দখলের। ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান দুই দলই এখন নির্বাচনী প্রচারণায় মরিয়া। কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেট বা  নি¤œকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসে কারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে তা নিয়ে দেশ জুড়ে বিরাজ করছে টানটান উত্তেজনা।
এ ব্যাপারে বিভিন্ন জরিপ থেকে যে সব তথ্য বেরিয়ে আসছে তাতে দেখা যাচ্ছে যে কোনো একটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে পারে ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। কারো কারো হিসাবে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি সিনেট ও হাউজ উভয় কক্ষেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে পারে। আর তেমন হলে প্রেসিডেন্টের এককচ্ছত্র ক্ষমতায় শিকল পরাতে মুখিয়ে থাকবে রিপাবলিক্যানরা। এ বিবেচনায় এই মধ্যবর্তী নির্বাচন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জন্য এক কঠিন পরীক্ষা। সিনেট ও হাউজ উভয় কক্ষের নেতৃত্ব হারালে দেশ পরিচালনায় আগামী ২ বছর পদে পদে হোঁচট খেতে হবে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো যুক্তরাষ্ট্রেও জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়া, উচ্চ কর, আইনশৃংখলার চরম অবনতি, গর্ভপাতের অধিকার, জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু এবারের নির্বাচনে প্রধান ফ্যাক্টর। কংগ্রেসের দুই কক্ষই এখন ক্ষমতাসীনদের নিয়ন্ত্রণে। সে কারণে  প্রেসিডেন্ট বাইডেনের পক্ষে কোনো আইন পাশ করতে বেগ পেতে হচ্ছিল না। মধ্যবর্তী নির্বাচনে যদি তার দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় তাহলে বাইডেনের যে কোনো পরিকল্পনাই আটকে দিতে পারে বিরোধীরা। এতে দেশ পরিচালনা ও বিল পাশ আগামী দুই বছর কঠিন হবে বাইডেনের জন্য।
এদিকে নির্বাচনী প্রচারনায় নিজেকে ব্যস্ত রাখছেন রিপাবলিকান সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কংগ্রেস ও স্টেট পর্যায়ে তিনি ২ শতাধিক প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন।
অন্যদিকে বসে নেই প্রেসিডেন্ট বাইডেনও। তিনি ফ্লোরিডা , নিউইয়র্ক, পেনসিলভানিয়া, জর্জিয়া ও মিশিগান সফর করে যোগ দিয়েছেন নির্বাচনী প্রচারনায়। নির্বাচনে সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখতে মরিয়া ডেমোক্র্যাটরা। ১টি স্পেশাল আসনসহ ৩৫টি উন্মুক্ত আসনে সিনেট নির্বাচন হচ্ছে। এর মধ্যে ১৪ টিতে বর্তমানে ডেমোক্র্যাট সিনেটর ও ২১টিতে রিপাবলিক্যান সিনেটর ছিলেন। তবে সিনেট দখলের নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে মাত্র ৫টি আসন। এ রাজ্যগুলো হচ্ছে জর্জিয়া, নেভাডা,উইসকনসন, আরিজোনা ও পেনসিলভেনিয়া। জর্জিয়া, আরিজোনা ও নেভাডায় ডেমোক্র্যাট দলীয় বর্তমান সিনেটররা বিজয়ী হতে পারলে তাদের সংখাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত। এ তিনটির একটিতে হারলে পেনসিলভানিয়া বা ওয়াহিও স্টেট থেকে রিপাবলিক্যানদের আসনে তাদের জিততে হবে। এমনি দোলাচলে রয়েছে ডেমোক্র্যাটদের ভবিষ্যৎ।
এদিকে হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভস এর পুরো ৪৩৫ আসনেই নির্বাচন হচ্ছে। বর্তমান হাউজে ডেমোক্র্যাটদের আসন ২২০টি। রিপাবলিক্যানদের ২১২। ৩টি আসন শূন্য রয়েছে। পোলিং এনালাইসিস ওয়েবসাইট ৫৩৮ এর সর্বশেষ জরিপে বলা হয়েছে, হাউজে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জিতবে রিপাবলিকানরা। এর সম্ভাবনা শতকরা ৮২ ভাগ। আর সিনেটে মেজরিটি ধরে রাখতে পারবে ডেমোক্র্যাটরা। এমন সম্ভাবনা শতকরা ৫৩ ভাগ।
এদিকে ব্লু স্টেট হিসেবে পরিচিত নিউইয়র্কের গভর্ণর নির্বাচন নিয়ে উভয় দলের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। গেল সপ্তাহে দুটি জরিপে রিপাবলিকান প্রার্থী লি জেলডেনকে এগিয়ে থাকার আভাস দেয়া হয়েছিল।  নিশ্চিত জয়ের সম্ভাবনা থেকে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাসে কিছুটা হতাশা সৃষ্টি হয় ডেমোক্র্যাট নেতত্বে। গভর্ণর ক্যাথি হোকুলের প্রচারণায় নেমে পড়েন স্বয়ং প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও সাবেক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিলারী ক্লিনটন। গত বুধবারের জরিপে অবশ্য ক্যাথি হোকুলকে শতকরা ৫ ভাগ ভোটে অগ্রবর্তী দেখানো হয়েছে। জরিপে হোকুল পেয়েছেন ৫২.৫ ভাগ। আর জেলডিন পেয়েছেন ৪৭.৫ শতাংশ।