শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১   ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

টানা দ্বিতীয়বার আকরামের পরাজয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৪:২৩ পিএম, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ সোমবার

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের টানা দ্বিতীয়বারের মত নির্বাচনে পরাজয় বরণ করেছেন ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ও নাগকির ঐক্যের উপদেষ্টা এস এম আকরাম। ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি পরাজিত হয়েছেন। ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ ও প্রার্থী সেলিম ওসমান ও এস এম আকরাম টানা দুবার নির্বাচনে ভোটের লড়াইয়ে মুখোমুখি হয়েছেন। এতে করে এই আসনটি ফের ক্ষমতাসীনদের দখলে চলে গেছে।

জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৩০ এপ্রিল এমপি সেলিম ওসমানের মৃত্যুর পর ওই বছরের ২৬ জুন অনুষ্ঠিত উপ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সেলিম ওসমানের বিরুদ্ধে লড়েন এস এম আকরাম। ওই নির্বাচনে এস এম আকরাম ৬৬ হাজার ১১৪ ভোট পেয়েছিলেন। অথচ ওই নির্বাচনে সেলিম ওসমান সব রাজনৈতিক দলের সমর্থন নিয়েও পেয়েছিলেন ৮২ হাজার ৮৫৬ ভোট। তাই এই নেতা এই আসনে সকল প্রার্থীর চেয়ে জনপ্রিয়তার দিক থেকে অনেকটা এগিয়ে রয়েছেন।

এদিকে এস এম আকরাম ১৯৯৬ সালে নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর ও বন্দর ) আসন থেকে আওয়ামীলীগের টিকেটে ভোটের লড়াইয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোট সরকার গঠনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েও দলীয় নির্দেশে তাকে সরে দাঁড়াতে হয়। ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে শামীম ওসমানকে সমর্থন দিলেও জেলা আওয়ামীলীগের হিসেবে তার সমর্থন ছিল মেয়র নির্বাচিত হওয়া আইভীর প্রতি। ওই নির্বাচনের পরদিনই আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নীতি নির্ধারকদের প্রতি বিরাগভাজন হয়ে আওয়ামীলীগ থেকে সরে দাড়ান এস এম আকরাম। যোগ দেন মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্যে। দল পরিবর্তন করেই এই নেতা ২০১৪ সালের উপনির্বাচনে আনারস প্রতীকে সেলিম ওসমানের বিপরীতে নির্বাচনে লড়েন।

ক্ষমতাসীন দলের লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী সেলিম ওসমান মূলত ব্যবসায়ী হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। তিনি বিভিন্ন ব্যবসায়ীক সংগঠনের সাথে জড়িত রয়েছে। তবে ২০১৪ সালের নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের প্রয়াত সাংসদ সেলিম ওসমানের মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হয়ে পড়ে। এতে করে ওই বছরই উপ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন জাতীয় পার্টি দলের লাঙ্গল প্রতীকে তার ছোট ভাই সেলিম ওসমান স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম আকরামের সাথে নির্বাচন করে জয়লাভ করেন।

এদিকে নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে সম্প্রতি বিএনপি সহ আরো কয়েকটি দলের সমন্বয়ে ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়। আর কিছুদিন পরেই ঐক্যফ্রন্ট নির্বচন করা সিদ্ধান্ত নেয়। এই জোটের মধ্যে নাগরিক ঐক্য দলটিও রয়েছে। আর এই আসনে ফের এস এম আকরামকে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন দেয়া হয়। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন মহাজোট দল থেকে এই আসনে জাতীয় পার্টির সাংসদ সেলিম ওসমানকে ফের মনোনয়ন দেয়া হয়। এতে করে এই আসনের টানা দ্বিতীয়বারের মত এই দুই নেতা মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। তবে এবারো আকরাম বিগত নির্বাচনের মত পরাজয় বরণ করেছেন।

নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর ও বন্দর) আসনে ১৭১ ভোটকেন্দ্রে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান পেয়েছেন ২ লাখ ৭৯ হাজার ৫৪৫ ভোট। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা সাবেক এমপি এস এম আকরাম পেয়েছেন ৫২ হাজার ৩৫২ ভোট।

এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা হচ্ছে ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৬১৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ২৫ হাজার ২শ’ ১৪ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ২০ হাজার ৪শ’ ২ জন। মোট ভোট কেন্দ্র সংখ্যা হচ্ছে সদরে ৭৬টি, বন্দরে ৯৫টি।