রুশ হ্যাকারদের টার্গেটে মার্কিন পরমাণু বিজ্ঞানীরা
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০৩:৩৯ এএম, ৮ জানুয়ারি ২০২৩ রোববার
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ চলছেই। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়ার পরও ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ইউক্রেনে রাশিয়া যখন তাদের উন্মত্ততায় ব্যস্ত, তখন এর সঙ্গে আরো একটি খবর আগুনে নতুন করে ঘি ঢেলেছে। রুশ হ্যাকাররা মার্কিন পরমাণু বিজ্ঞানীদের টার্গেট করেছে। রাশিয়ার হ্যাকার গ্রুপ কোল্ড রিভার দেশটির অন্তত তিনটি পারমাণবিক স্থাপনার বিজ্ঞানীদের টার্গেট করেছে বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় খবর এসেছে।
২০২২ সালের আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে কোল্ড রিভার গ্রুপের হ্যাকাররা ব্রুকহ্যাভেন, আরগোন এবং লরেন্স লিভারমোর ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিজের বিজ্ঞানীদের টার্গেট করে। তথ্য হাতিয়ে নিতে হ্যাকাররা এসব গবেষণাগারের ওয়েবসাইটে ভুয়া লগইন পেজ তৈরি করত এবং বিজ্ঞানীদের লগইন পাসওয়ার্ড হাতিয়ে নিতে তাদের নিয়মিত ইমেইল পাঠাত বলে বার্তা সংস্থাটির অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে। সাইবার নিরাপত্তা গবেষক এবং পশ্চিমা সরকারি কর্মকর্তাদের মতে, ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের পর থেকে কোল্ড রিভার কিয়েভের মিত্র দেশগুলোর বিরুদ্ধে হ্যাকিং আক্রমণ বাড়িয়েছে। সেই সময় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমিরি পুতিন ঘোষণা দেন যে, নিজ ভূখণ্ড রক্ষায় প্রয়োজনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে রাশিয়া। হ্যাকার গ্রুপ কোল্ড রিভার সর্বপ্রথম আলোচনায় আসে ২০১৬ সালে। সে সময় ব্রিটেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে হামলা চালায় গ্রুপটির হ্যাকাররা। এর পর থেকেই তারা নিয়মিত সাইবার হামলা চালিয়ে আসছে।
কোল্ড রিভারকে সাইবার নিরাপত্তার জন্য অন্যতম ঝুঁকি হিসেবে উল্লেখ করে মার্কিন সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা ক্রাউডস্ট্রাইকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যাডাম মেয়ারস বলেছেন, ‘যেসব গুরুত্বপূর্ণ হ্যাকিং গ্রুপের কথা আপনি কখনো শোনেননি, তার মধ্যে অন্যতম এটি। তারা সরাসরি ক্রেমলিনের তথ্য অপারেশনকে সহায়তার লক্ষ্যে পরিচালিত। ’ এ বিষয়ে রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি) ও ওয়াশিংটনে রাশিয়ার দূতাবাসে মেইল করে মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে গবেষণার ফলাফল পাঁচটি শিল্প বিশেষজ্ঞদের দেখানো হয়েছে। তারা সবাই পরমাণু ল্যাবে হ্যাকের প্রচেষ্টায় কোল্ড রিভারের জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। যা শেয়ার্ড ডিজিটাল ফিঙ্গারপ্রিন্টের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।
এদিকে, কোল্ড রিভারের কার্যক্রম সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ইউএস ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি (এনএসএ)। এমনকি কোনো মন্তব্য করেনি ব্রিটেনের গ্লোবাল কমিউনিকেশনস হেডকোয়ার্টারও (জিসিএইচকিউ)। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।