কমিটি গঠন নিয়ে নড়েচড়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০৩:০৮ এএম, ১৮ মার্চ ২০২৩ শনিবার
তারেকের সাথে পাঁচ নেতার বৈঠকের পর
আজকাল রিপোর্ট
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি গঠনের ইঙ্গিতে নড়েচড়ে উঠেছেন নেতা কর্মিরা। সংগঠনে ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য। বিভিন্ন উপদল নিজেদের শক্তি জানান দিতে সভা সমাবেশ করছেন। এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে এ মাসের প্রথমদিকে ৫ নেতার লন্ডন গমন ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে তাদের সাক্ষাতের পর থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের বিএনপি নেতারা মিলিতভাবেই তারেক রহমানের কাছে কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন। কেন্দ্রীয় বিএনপিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে নেতাদের অর্ন্তভূক্তির দাবিও ছিল তাদের। এ দুটি দাবিতেই তারেক রহমান ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন। তিনি এই নেতাকে সহসাই যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির কমিটি দেয়ার আশ্বাস দেন। তার আগে তিনি ঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে পরামর্শ করার কথা বলেন। বৈঠকের পরদিনই ঢাকা থেকে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির ৩ নেতাকে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে অর্ন্তভূক্তি ঘোষণা দেয়া হয়। কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পেয়েছেন জিল্লুর রহমান জিল্লু, গিয়াস আহমেদ ও মিজানুর রহমান মিল্টন ভূঁইয়া। বৈঠকে আরও ২ নেতা উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন জসিম ভূঁইয়া ও আব্দুস সবুর।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি কবে আসছে তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে সবাই বিপুল আগ্রহ নিয়ে লন্ডনের দিকে তাকিয়ে আছেন। ২০১৫ সাল থেকে কমিটিবিহীন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি বিভিন্ন উপধারায় চলমান। নতুন কমিটিতে কে সভাপতি ও কে সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন সেটাই এখন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির আলোচ্য বিষয়। তবে দায়িত্বশীল একটি সূত্র আজকালকে জানিয়েছেন, তারেক রহমান কেন্দ্রে স্থান দেয়া ৩ নেতার যে কোন একজনকে সভাপতি হিসেবে বেছে নেবেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। সাধারণ সম্পাদকের পদটি পুরোপুরি উন্মুক্ত। কার কপালে জুটবে এ পদের মালাটি তা দেখবার বিষয়। সাধারণ সম্পাদকের দৌড়ে রয়েছেন জসিম ভূইঁয়া, কামাল পাশা বাবুল, ফিরোজ আহমেদ, আকতার হোসেন বাদল ও আনোয়ারুল ইসলাম।
বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লুর দৃষ্টি আর্কষণ করা হলে তিনি বলেন, দলের নেতা তারেক রহমান বলেছেন তিনি কেন্দ্রের সাথে আলাপ করে কমিটি দেবেন। তিনি যে কমিটিই দেবেন তা আমরা মাথা পেতে নেব। আপনি কি সভাপতি হবার প্রত্যাশা করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে জিল্লু বলেন, কমিটি নিয়ে আমি কোন মন্তব্য এখন করবো না। তারেক রহমানের যে কোন সিদ্ধান্তই আমার রাজনীতির নির্দেশনা হিসেব কাজ করবে। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব মিল্টন ভূইঁয়া এই প্রতিবেদককে বলেন, আমার ধারণা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কেন্দ্রে স্থান পাওয়া ৩ নেতার মধ্য থেকেই সভাপতি পদে একজনকে বেছে নেবেন। তিনি সভাপতি হবার প্রত্যাশা করছেন কিনা জানতে চাওয়া হলে মিল্টন ভূঁইয়া বলেন, রাজনীতি করি দেশের জন্য। শহীদ জিয়ার আদর্শ বাস্তবায়ন করার জন্য। দলের কান্ডারি তারেক রহমান আমাকে এ দায়িত্ব দিলে মাথা পেতে নেব। আর আমাকে না দিলেও কোন অভিযোগ থাকবে না। যাকেই দায়িত্ব দেবেন তার নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির জন্য কাজ করবো। দলের সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি গিয়াস আহমেদ যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির দায়িত্ব নিতে আগ্রহী বলে তার ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন। সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত ও মূলধারার রাজনীতিক গিয়াস আহমেদের দলের ভেতরে ও বাইরে ক্লিন ইমেজ রয়েছে। তিনি বর্তমানে ওমরাহ হজ্ব পালনে সৌদি আরব থাকায় তার কমেন্ট নেয়া সম্ভব হয়নি।
দলের সম্ভাব্য সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী জসিম ভূইয়া প্রতিবেদককে বলেন, ৩৫ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির রাজনীতি করি। একদিনের জন্যেও দলকে ছেড়ে যাইনি। বিএনপির কান্ডারি তারেক রহমান আমাকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন। আমার কি প্রত্যাশা তাও হয়তো তিনি অবগত। দলের মঙ্গলে তিনি আমাকে যে দায়িত্ব দেবেন তা মেনে নিয়ে কাজ করে যাব। ফিরোজ আহমেদ বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারন সম্পাদক। দীর্ঘদিন ধরে জাতীয়তাবাদী দলের সাথে সংযুক্ত। ইন্টার স্টেট বিএনপিরর সাধারণ সম্পাদক। তিনিও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদেও প্রত্যাশি বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি আজকালকে বলেন, জননেতা তারেক রহমান দলের কোন দায়িত্ব দিলে অবশ্যই তা মেনে নেব। তার নির্দেশ হবে আমার রাজনীতির পাথেয়। আমাকে দায়িত্ব দেয়া হলে সকল মত ও পথের নেতাকর্মিদের সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ বিএনপি গড়ে তুলবো। আকতার হোসেন বাদলও সাধারণ সম্পাদকের দৌড়ে রয়েছেন বলে অনেকে মনে করছেন। এ ব্যাপারে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, আমি প্রার্থীতায় বিশ্বাসী নই। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যেখানে রাখবেন সেখান থেকেই কাজ করবো। তবে আমার প্রত্যাশা একটাই, আগামী কমিটি গঠনে তৃণমূলের নেতৃত্বের মূল্যায়ন যেন হয়।