জালালাবাদে সমঝোতার উদ্যোগ ব্যর্থ
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০২:০৪ এএম, ২৫ মার্চ ২০২৩ শনিবার
মইনুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ৬ সাবেক সাধারণ সম্পাদকের
আজকাল রিপোর্ট
জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাবেক ছয় সাধারণ সম্পাদক সংগঠনে সৃষ্ট সংকট নিরসনের যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন তা ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতার জন্য তারা সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলামের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করে বলেছেন, তার কারণেই সমঝোতা উদ্যোগ ভেস্তে গেছে। লিখিতভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েও তিনি বাড়ি নিয়ে জটিলতা ও সংগঠনের সাড়ে ৩ লাখ টাকা ফেরত দেয়ার বিষয়ে সমঝোতায় এগিয়ে আসেননি।
জালালাবাদ এসোসিয়েশনের এই ৬ সাবেক সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে পাঁচজন জুনেদ এ খান, মিসবাহ মজিদ, আতাউর রহমান সেলিম, আব্দুল হাসিব মামুন, ও আহমেদ জিলু গত সোমবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে সমিতিতে সমঝোতা প্রতিষ্ঠায় তাদের ব্যর্থ উদ্যোগের সার্বিক বিষয় তুলে ধওে বক্তব্য রাখেন। ছয় জনের অপর একজন জেড চৌধুরী জুয়েল মালয়েশিয়া সফরে থাকায় সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত থাকতে পারেননি।
এক প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, সহ সাধারন সম্পাদক রোকন হাকিমকে ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করাটাও গঠনতন্ত্রসম্মত হয়নি। তাকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে উল্লেখ করা জালালাবাদের গঠনতন্ত্র অনুসারে অবৈধ। তবে কার্যকরি কমিটির সভায় মইনুল ইসলামকে সাময়িকভাবে বহিস্কারের যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তা বৈধ। তাকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করতে হলে সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই অন্তর্বর্তী সময়ে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব সহ সাধারন সম্পাদক পালন করবেন এটাই গঠনতন্ত্রের বিধান। সংগঠনে সৃষ্ট পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তারা বলেন, জালালাবাদের অর্থ দিয়ে নিজের বাড়ি কেনা একটি ক্রিমিনাল অ্যাক্ট। এ ব্যাপারে আইনী প্রক্রিয়ায় যাওয়ার ব্যাপাওে নির্বাচিত বর্তমান কমিটিই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তবে রোকন হাকিমকে ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক ঘোষণা সঠিক হয়নি।
জ্যামাইকা হিলসাইডের মতিন রেষ্টুরেনেন্টে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে তারা লিখিত বক্তব্যে বলেন, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সংকট সমাধানে আমরা একটি সমঝোতাপত্র তৈরি করি। সভাপতি বদরুল খান এতে স্বাক্ষর করেন। সাধারন সম্পাদক মইনুল এক সপ্তাহ ধরে টালবাহানা করার পর স¦াক্ষর প্রদান করে। স্বাক্ষর করার পরও মইনুল সংগঠনের অর্থে কেনা বাড়ির কাগজপত্র ও খরচের হিসেব দিতে গড়িমসি করতে থাকেন। এক সপ্তাহ পর তিনি বাড়ি কেনার আংশিক হিসেব দাখিল করেন। এতে দেখা যায় বাড়ি ক্রয়কালে তিনি সংগঠনের তহবিল থেকে ৩ লাখ ৯ হাজার ডলার উত্তোলন করেছেন। বাড়ি কেনার পর নাকি তিনি বাড়ির জন্য আরও ২ লাখ ৪০ হাজার ৯৮২ ডলার খরচ করেছেন। অন্যান্য খরচসহ সবমিলে বাড়িটি জালালাবাদ এসোসিয়েশনের নামে হস্তান্তর করতে প্রয়োজন হবে প্রায় ১ মিলিয়ন ২ লাখ ৫৯ হাজার ৩২ ডলার। আদৌ এ বাড়ির দাম এটা হবে কিনা এবং জালালাবাদের নামে বাড়িটি কিনলে তা আর্থিকভাবে সংগঠনের ক্ষতির কারণ হবে কিনা তা যাচাই করার জন্য বাড়ির এপ্রেইজাল ও ইনসপেকশনের অনুমতি দিতে মইনুলকে অনুরোধ করা হয়।। কিন্তু এতে তিনি রাজি হন নি। এতে সমঝোতার উদ্যোগ বাধাগ্রস্থ হয়। সঠিক তথ্য বিবেচনায় না এনে বাড়ি প্রশ্নে আলোচনা সঠিক হবে না বলে আমরা মনে করি। এ ব্যাপাওে সাধারন সম্পাদক মইনুলের অসহযোগিতার কারণে সমঝোতা প্রক্রিয়া থেকে আমরা সরে দাঁড়াচ্ছি। তবে সমঝোতার স্বার্থে যে কোন পক্ষকে আগামীতে আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসিব মামুন বলেন, সাধারন সম্পাদক মইনুলকে সাময়িকভাবে বহিস্কার সাংগঠনিকভাবেই হয়েছে। তবে তার চূড়ান্ত অনুমোদন নিতে হবে সাধারণ সভায়। আমাদের এই সমঝোতা উদ্যোগের গত দেড় মাস মইনুল সাময়িক বহিষ্কারের আওতায় ছিলেন না। তাকে বহিষ্কারের আদেশ স্থগিত রাখা হয়েছিল সমঝোতার স্বার্থে । গতকাল ১৯ মার্চ পর্যন্তও তা স্থগিত ছিল। এটা আমরা করতে পেরেছিলাম উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা করে সংগঠনের স্বার্থে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিছবাহ মজিদ বলেন, রোকনকে সাধারন সম্পাদক ঘোষণা নিয়ম মোতাবেক হয়নি। তিনি সহ সাধারন সম্পাদক হিসেবেই কাজ চালিয়ে নিতে পারতেন সাধারন সভা পর্যন্ত। জনাব মজিদ বলেন, বাড়িটি জালালাবাদের জন্য নিয়ে বা না নিয়েও সমাধানের পথ খুঁজে বের করা যেত। কিন্তু বাড়িটির প্রশ্নে মইনুল ইসলামের কোন সহযোগিতা আমরা পাই নি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বিবৃতি পাঠ করেন সাবেক সাধারন সম্পাদক জুনেদ এ খান।
এদিকে রোকন হাকিম ‘আজকাল’কে এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমাকে অহেতুক বিব্রত করা হচ্ছে। মনে হচ্ছে আমি সাধারণ সম্পাদক হবার জন্যই মইনুলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি। আমি প্রানপ্রিয় জালালাবাদের লাখ লাখ ডলার লুটপাটের প্রতিবাদে কথা বলছি। সাধারণ সম্পাদক মইনুলকে বহিস্কার করার পর সংগঠনের কার্যকরি কমিটি ও ট্রাষ্টিবোর্ড আমাকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনে আহবান জানিয়েছে। তা সংগঠনের রেজুলেশনেও রয়েছে। আমিতো চেয়ে কিছু নিইনি। সাবেক ৬ সাধারন সম্পাদক যা বলছেন তাতে আমি বিব্রত।