২৬ শতাংশ মানুষ সুপেয় পানি পাচ্ছে না : জাতিসংঘ
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০২:৩৫ এএম, ২৫ মার্চ ২০২৩ শনিবার
আজকাল ডেস্ক
বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২৬ শতাংশ নিরাপদ সুপেয় পানির সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এ ছাড়া মৌলিক পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য নিয়মিত পানির নিশ্চয়তা নেই ৪৬ শতাংশ মানুষের। আন্তর্জাতিক পানি দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব বলা হয়। খবর বিবিসি, আলজাজিরা ও সিএনএনের। ইউএন ওয়াটার অ্যান্ড ইউনেস্কোর প্রকাশ করা ওই প্রতিবেদনে বিশ্বজুড়ে পানির অপচয় রোধের আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, অতিরিক্ত ব্যবহার এবং দূষণের কারণে পানির সংকট স্থায়ী হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে যেসব অঞ্চলে এখনো পর্যাপ্ত পানি রয়েছে এবং যেসব অঞ্চলে এরই মধ্যে সংকট দেখা দিয়েছেÍউভয় অঞ্চলেই মৌসুমি পানি সংকট বাড়ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে গত বুধবার শুরু হয়েছে তিন দিনের জাতিসংঘের পানি সম্মেলন। বিশ্বের হাজারো প্রতিনিধি এতে অংশ নিচ্ছেন। আন্তর্জাতিক পানি দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, পানি হলো মানব সভ্যতার জীবনীশক্তি। যথেচ্ছ ব্যবহার, পরিবেশ দূষণ এবং এখনো আমলে না নেওয়া বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে পানি কমে যাচ্ছে।
সংখ্যার হিসাবে বর্তমানে বিশ্বে ২০০ কোটিরও বেশি মানুষের নিরাপদ সুপেয় পাানির নিশ্চয়তা নেই। আর পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য নিয়মিত পানির সুবিধা নেই ৩৬০ কোটিরও বেশি মানুষের। পানির অপচয় রোধে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রায় ৫ দশক আগে ২২ মার্চকে পানি দিবস ঘোষণা করে জাতিসংঘ। তবে সম্প্রতি এ ইস্যুতে জাতিসংঘ আরও বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়, এককথায় বলতে গেলে, বিশ্বের অর্ধেক মানুষকে বর্তমানে বছরের কোনো না কোনো সময়ে তীব্র পানি সংকটের মধ্যে কাটাতে হয়। ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের সব মানুষের জন্য নিরাপদ সুপেয় এবং পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য প্রয়োজনীয় পানির নিশ্চিয়তা চেয়েছে জাতিসংঘ।
প্রতিবেদনের প্রধান লেখক রিচার্ড ক’নর বলেন, জাতিসংঘ যে লক্ষ্য নিয়েছে তা পূরণ করতে হলে এখন থেকেই প্রতিবছর ব্যয় করতে হবে ৬০ হাজার কোটি থেকে ১ লাখ কোটি ডলার। এ প্রকল্পকে এগিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক মহলকে এগিয়ে আসতে হবে। চার দশক ধরে প্রতিবছর বিশ্বে পানি ব্যবহারের পরিমাণ বেড়েছে ১ শতাংশ করে। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধির যে হার, তাতে আগামী ২০৫০ সাল পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকবে। যদি আমরা এ সংকটের সমাধান না করি, তবে নিশ্চিতভাবেই এটি বৈশ্বিক সংকটে পরিণত হবে।
রিচার্ডের মতে, পানির ব্যবহার মূলত বাড়ছে উন্নয়নশীল ও উদীয়মান অর্থনীতির বিভিন্ন দেশে। প্রতিবছর এসব দেশে একদিকে যেমন বাড়ছে কৃষি ও শিল্পোৎপাদন, তেমনি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জনসংখ্যাও। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণেও পানির ওপর চাপ বাড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গত কয়েক বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনেক কৃষি অঞ্চল খরাপ্রবণ হয়ে উঠছে। ফলে উৎপাদন চালু রাখতে সেচের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে কৃষকদের। বর্তমানে বিশ্বের স্বাদু পানির ৭০ শতাংশই ব্যবহার হচ্ছে কৃষি খাতে। পানির অপচয় রোধে ব্যবহৃত পানি পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা আবশ্যক। এর ফলে অপচয় ব্যাপকভাবে রোধ করা সম্ভব। প্রতিদিন বিশ্বজড়ে ৮০ শতাংশ ব্যবহৃত পানি অপচয় হচ্ছে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এ হার প্রায় ৯৯ শতাংশ।