মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১   ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সংসদ নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্র আ’লীগের কমিটি হচ্ছে না

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০২:৩৯ এএম, ২২ এপ্রিল ২০২৩ শনিবার


 
আজকাল রিপোর্ট
বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কমিটি হচ্ছে না। এমন আভাস পেয়ে হতাশ হয়েছেণ পদপদবী প্রত্যাশী দলীয় নেতৃবৃন্দ। এখন আর কোন  গ্রুপের মহড়া বা পাল্টা মহড়া জ্যাকসন হাইটস বা ব্রুকলিনের চার্চ ম্যাডোনাল্ডস এলকায় দেখা যাচ্ছে না।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের বিরোধী এক নেতা আজকালকে বলেন, নতুন কমিটি এ পুরো বছওে আর আলোর মুখ দেখছে না। নির্বাচনের পর নেত্রী এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। তাই কমিটি নিয়ে আমরা আর অযথা সময় নষ্ট করতে চাই না। গত এক যুগে কমিটি হলো না। আর নির্বাচনের বছরে কমিটি আসা সুদূর পরাহত। তবে এ মাসের শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রী ওয়াশিংটন আসছেন। তার সফর ও সংবর্ধনা সফল করতে আমরা ওয়াশিংটন যাচ্ছি। উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রীর নিউইয়র্ক আসাকে উপলক্ষ করে আওয়ামী লীগ স্ংগঠনিকভাবে ব্যাপক তৎপর থাকে। বছরের বাকি সময় জুড়ে তারা থাক নিষ্প্রাণ।  এমনকি তেমন ঘটা কওে তাদের জাতীয় দিবসগুলিও পালন করতে দেখা যায় না। করলেও সেটা হয়ে থাকে দায়সারাভাবে । অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন গোটা বিশেক নেতাকর্মী। যে কয়জন থাকেন অনুষ্ঠানে সবাই সুযোগ পান বক্তব্য দিতে অর্থাৎ যারা নেতা তারাই শ্রোতা। আওয়ামী লীগের এই সেপ্টেম্বর কেন্দ্রিক তৎপরতার কারণে সংগঠনের অভ্যন্তরেই কাউকে কাউকে অভিহিত করা হয়  ‘সেপ্টেম্বরি নেতা’ হিসেবে।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান। এক যুগের বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। কর্মী বান্ধব সিদ্দিকর রহমান বাস করেন নিউ জার্সিতে। কিন্তু দলীয় কর্মকান্ড ও জাতীয় দিবসে সস্ত্রীক ছুটে আসেন নিউইয়র্কে। দলীয় কোন কার্যালয় না থাকায় বিভিন্ন রেষ্টুরেন্টই হয়ে ওঠে নেতাকর্মিদের নিয়ে তার বসার স্থান। ঘন্টার পর ঘন্টা একজন সাধারন কর্মীর মতো বসে থাকেন জ্যাকসন হাইটসে। নিরহংকার এ রাজনীতিক দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছে সম্মানীয়। সমস্যাটি হয় সিদ্দিকুর রহমান ব্যক্তিগত, পারিবারিক কিংবা দলীয় কারণে যুক্তরাষ্ট্রে না থাকলে বা বাংলাদেশে গেলে । তার অনুপস্থিতিতে আওয়ামী লীগ যেন এতিম হয়ে যায়। একজন প্রবীন সাংবাদিকের ভাষায়, ‘ড. সিদ্দিক দেশে গেলে যেন দলটি চলে যায় বাংলাদেশে। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আছে বলে মনে হয় না। চোখে পড়ে না তাদেও উল্লেখযোগ্য কোন কর্মসূচি’। অবশ্য মিশন বা কনস্যুলেট কোন অনুষ্ঠান আয়োজন করলে অনেকেই তাতে যোগ দেন সদলবলে।
একদল নেতা সেপ্টেম্বর মাস এলেই জ্যাকসন হাইটসে রাত দিন ঘোরাঘুরি করেন।  তখন তাদের জন্য রেস্টুরেন্টে বসার জায়গা পেতে বেগ পেতে হয়। তখন সেইসব ‘সেপ্টেম্বরী নেতা’রা আওয়ামী লীগের ব্যানারে মিছিল মিটিঙে মুখর থাকেন সারাক্ষণ। তাদের দাবী একটাই নতুন কমিটি চাই। বলা হয়ে থাকে,  সেপ্টেম্বরী নেতারা সারা বছর থাকেন ঘুমিয়ে। সেপ্টেম্বর মাসে দলের সভানেত্রী নিউইয়র্ক থাকেন। তখন তাদেও ঘুম ভাঙে। নেত্রীর নজরে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হোটেলের সামনে সারাক্ষণ জমায়েত থাকতে দেখা যায় তাদের।  হোটেল লবিতে পা রাখার যায়গা থাকে না। তা সামাল দিতে হোটেল স্টাফদের হিমশিম খেতে হয়। বিদেশি হোটেল গেষ্টরা হন বিরক্ত। বিশ্বের অন্য কোন দেশের প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্ট হোটেলে উঠলে এমন দৃশ্য দেখা যায় না। সেপ্টেম্বরে মিছিল মিটিংএ জ্যাকসন হাইটস এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটি অনেক বড়। সবাইকে নিয়ে অনুষ্ঠান করলে শুধু কমিটির লোকই হবে শতাধিক। সভানেত্রী সভাপতি পদে বিকল্প  গ্রহণযোগ্য কাউকে না পাওয়াতে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির কথা ভাবছেন না বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র মনে করেন। তারা মনে করেন গ্রহণযোগ্য কাউকে না পাওয়া পর্যন্ত নতুন কমিটি হবে না। শেখ হাসিনা খুঁজছেন একজন সার্বক্ষনিক সভাপতি। তা’ছাড়া ২০২৩ সাল তো নির্বাচনী বছর। এ বছর নতুন কমিটি গঠনের কাজে তিনি হাত দেবেন এমন সম্ভাবনা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এর ফলে সেপ্টেম্বরী নেতারা ঝিমিয়ে পড়েছেন। তবে আগামী সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ অধিবেশনে আসলে তারা হয়ত আবারও নিজেদের অবস্থান মিছিল মিটিংয়ের মাধ্যমে জানান দিতে পারেন।