বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১   ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বর্ণাঢ্য আয়োজনে নিউইয়র্কে উদযাপিত হলো বর্ষবরণ উৎসব

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০২:৪০ এএম, ২২ এপ্রিল ২০২৩ শনিবার

নববর্ষে এনআরবি’র দু’দিনব্যাপী অনুষ্ঠান

আজকাল রিপোর্ট
নানান অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্যদিয়ে  নিউইয়র্কে বিভিন্ন সংগঠন ১৪৩০ বঙ্গাব্দকে বরণ করে নিল। বর্ষবরণের সবচেয়ে বড় আয়োজনটি ছিল এনআরবি ওয়ার্ল্ডওয়াইডের। তাদের বর্ণাঢ্য ও ব্যাপকভিত্তিক বৈশাখী উৎসব অনুষ্ঠিত হয় দুই দিনব্যাপী। প্রথম দিন টাইমস স্কয়ারে মঙ্গল শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন প্রখ্যাত রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। এ বর্ষবরণের প্রথম দিন স্বাগত বক্তব্য দেন অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক একুশে পদকপ্রাপ্ত নৃত্যশিল্পী লায়লা হাসান।
১ বৈশাখ টাইমস স্কয়ারের এই অনুষ্ঠানে শতকণ্ঠে বরণ করা হয় ১৪৩০ বঙ্গাব্দকে। ভোর ৬টা ২০ মিনিটে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে শতাধিক শিল্পীর অংশগ্রহণে আবহমান বাংলার সংগীত ও নৃত্য পরিবেশনার মধ্য দিয়ে বরণ করা হয় নতুন বাংলা বছরকে। অনুষ্ঠিত হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা।
দ্বিতীয় দিন সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি  প্লাজায় মঙ্গল শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন নিউ ইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস। দুইদিনের এই নববর্ষ উদযাপনে হাজার হাজার প্রবাসী বাংলাদেশির সমাবেশ  ঘটে। এদিনের অনুষ্ঠান চলে সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত।  অনুষ্ঠানে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা এবং ভারতের কমলিনি মুখোপাধ্যায়সহ শতাধিক শিল্পী অংশ নেন। এনআরবি’র দুইদিনব্যাপী নান্দনিক এই উৎসরের সঙ্গীত পরিচালনা করেন মহিতোষ তালুকদার তাপস।
মঙ্গল শোভাযাত্রা উদ্বোধন করে মেয়র এরিক অ্যাডামস বাংলাদেশিদের তৎপরতার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, অজস্র মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখে আমি অভিভূত। আমেরিকার অগ্রগতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিভিন্ন সেক্টরে যে ভূমিকা রাখছে তা অতুলনীয়। এ সময় উৎসব স্মারক হিসেবে এরিক অ্যাডামসকে উত্তরীয় ও উৎসব পাঞ্জাবি উপহার দেন আয়োজক সংগঠন এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের সভাপতি বিশ্বজিত সাহা ও তোফাজ্জল লিটন। প্রধান সম্পাদক নুরুল বাতেন বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ স্মারকগ্রন্থ মেয়রের হাতে তুলে দেন।
এ সময় মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক ড. নুরুন্নবী, সংগীত পরিচালক মহিতোষ তালুকদার তাপস এবং বাংলাদেশ ক্লাব যুক্তরাষ্ট্রের সভাপতি নুরুল আমিন বাবু।

 
 
 
 
 

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল, ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সৌন্দর্যের কথা তুলে এরিক এডামসকে জানান, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উৎসব পহেলা বৈশাখ। সার্বিকভাবে নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের পাশে থেকে সহযোগিতা থাকার জন্য অ্যাডামসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
নিউইয়র্ক সিটি মেয়র অফিসের ডেপুটি কমিশনার দিলীপ চৌহান বলেন, বাংলাদেশিরা অতিথি পরায়ণ ও সংস্কৃতিবান।
বাংলা বর্ষবরণের এই উৎসবের আহ্বায়ক লায়লা হাসান বলেন, অন্তত দশ হাজার লোকের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের এ আয়োজন সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী জনগোষ্ঠী বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল। বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে যেখানে বাংলাদেশিরা থাকবে সেখানেই এই উৎসব হবে।
বিশ্বজিত সাহা বলেন, বাংলার বারোয়ারী মেলার নানান উপাদানসহ নানা ধরনের স্টল, শিশুদের যেমন খুশি চিত্রাঙ্কন, গরম গরম ইলিশ ভেজে পান্তাভাতের সঙ্গে পরিবেশন, সারাদিন বাংলা নাচ, গান, কবিতা, নাটক, বিদেশিদের কণ্ঠে বাংলা গান, মঙ্গল শোভাযাত্রায় হাজারো মানুষের অংশগ্রহণ পুরো প্রাঙ্গণটি এক টুকরো বাংলাদেশ হয়ে উঠেছিল।
দুইদিনের উৎসবে নানা ধরনের প্ল্যাকার্ড, ব্যানার ও বাদ্যযন্ত্র নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেন বাংলাদেশীরা।
বাংলা বর্ষবরণ ১৪৩০ উ্ৎসবে আমেরিকার বিভিন্ন স্টেট থেকে এবং বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, কানাডা ও অন্যান্য দেশ থেকে অংশ নেন শিল্পী ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার বাংলাদেশীরা।
এ ছাড়াও ঈদের পর আনন্দধ্বনি, উদীচী, শোটাইম মিউজিক,প্রকৃতিসহ বিভিন্ন সংগঠন বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।