আতংকে নিউইয়র্ক জরুরি অবস্থা জারি
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ১২:০৮ এএম, ১৩ মে ২০২৩ শনিবার
লক্ষাধিক এসাইলাম প্রার্থীর
আগমনের আশংকা
আজকাল রিপোর্ট
নিউইয়র্কে এসাইলাম প্রার্থীদের আগমনের আশংকায় গভর্ণর ক্যাথি হোকুল রাজ্য জুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। ৮ জুন পর্যন্ত এই জরুরি অবস্থা বলবৎ থাকবে। গর্ভনর ক্যাথি হোকুল বলেছেন, সম্ভাব্য মাইগ্র্যান্ট সংকট মোকাবেলায় অতিরিক্ত ন্যাশনাল গার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যেই ১ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য নিউইয়র্কে প্রায় ৭০ হাজার মাইগ্র্যান্টকে সহায়তা দিচ্ছে। নিউইয়র্ক সিটিকে অতিরিক্ত ১ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এদিকে সিটি মেয়র এরিক এডামস বলেছেন, নতুন করে মাইগ্র্যান্টদের রাখার মতো সিটিতে একটি হোটেলও খালি নেই। গত দুই বছরে দেশের দক্ষিণ সীমান্ত হয়ে আসা এসাইলাম প্রার্থীদের জন্য ১২০টি হোটেল ভাড়া করা হয়েছে। ট্রাম্প জমানার ‘টাইটেল ৪২’-এর মেয়াদ শেষ হলে দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে আসা এসাইলাম প্রার্থীদের সম্ভাব্য জনস্রােত নিয়ে মেয়র এরিক এডামসের অফিস উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ হাজার আশ্রয়প্রার্থী প্রবেশ করবে। তারা বলছেন, এর ধাক্কা এসে পড়বে নিউইয়র্ক সিটিতে। লক্ষাধিক মাইগ্রেন্টস প্রবেশ করতে পারে । কিন্তু তা সামাল দেয়া সিটির পক্ষে সম্ভব নয়। আগে থেকেই সিটি এই মানবিক সমস্যা মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। পার্শ্ববর্তী কাউন্টির হোটেল ও শেল্টারগুলোর সাথে যোগাযোগ রাখছে সিটি কর্তপক্ষ।
মেয়র এরিক এডামস বৃহস্পতিবার সিটির ‘রাইট টু শেল্টার’ ল সাসপেন্ড করেছেন। এ আইনের আওতায় এতদিন শেল্টারে যারা থাকতেন তারা প্রাইভেট রুম, বিছানা, এককভাবে ব্যবহারের জন্য বাথরুম ও কিচেন পেতেন। এ আইনটি স্থগিতের মধ্য দিয়ে গন শেল্টার চালুর ইঙ্গিত দিয়েছেন মেয়র। এসাইলিদের ভবিষ্যত স্রােত সামাল দিতে তিনি এ উদ্যোগ নিয়েছেন। মেয়র বৃহস্পতিবার সকালে ১ বাস এসাইলাম প্রার্থীকে অরেঞ্জ কাউন্টির একটি হোটেলে পাঠিয়েছেন। এই প্রথমবারের মতো এসাইলিদের অফিসিয়ালি শহরের বাইরে পাঠানো হলো। তিনি বলেছেন, তাদের সকল খরচ সিটি বহন করবে। আমরা শুধু স্থানীয়ভাবে ভলেন্টিয়ার সেবা নিচ্ছি।
নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক এডামস রকল্যান্ড কাউন্টির দুটি হোটেলেও অস্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আশ্রয়প্রার্থীদের পাঠাচ্ছেন। নিউইয়র্ক সিটি ডেপুটি মেয়র এনি উইলিয়ামস এক বিবৃতিতে বলেছেন, ৬০ হাজার এসাইলাম প্রার্থীদের সহায়তার দায়িত্ব সিটির পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী কাউন্টিগুলোরও রয়েছে। এর মধ্যে ৩৭ হাজার ৫ শত এসাইলি সরসরি সিটির কেয়ারে রয়েছে।
রকল্যান্ড ও অরেঞ্জ কাউন্টিতে শরনার্থী পাঠানোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ উঠেছে। রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান মাইক ললার বলেছেন, রকল্যান্ড সেনচুয়ারি কাউন্টি নয়। ইমিগ্রেশন প্রশ্নে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র ও বাইডেন প্রশাসনের ব্যর্থ নীতির দায়দায়িত্ব রকল্যান্ড কাউন্টি নেবে না। সিটির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রকল্যান্ড কাউন্টি প্রশাসন মামলা দায়ের করেছে। কোর্ট থেকে দেয়া এক আদেশে বলা হয়েছে কাউন্টির আরমনি ইন এন্ড সুটস সিটির পাঠানো মাইগ্রেন্টদের গ্রহণ করতে পারবে না। গত ৪৮ ঘন্টায় রকল্যান্ড কাউন্টি প্রশাসন ২টি মামলা করেছে সিটি থেকে পাঠানো ৩৪০ জন এসাইলামপ্রার্থীদের রুখতে। আগামী সোমবার স্টেট সুপ্রীম কোর্টে এর ওপর শুনানী হবে। সিটি মেয়র বলেছেন, তিনি আপীল করবেন।
রকল্যান্ড ও অরেঞ্জ কাউন্টি ইতোমধ্যেই স্টেট অব ইমারজেন্সী ঘোষণা করেছে। গভর্ণর ক্যাথি হোকুল বলেছেন, আমরা সিটি ও কাউন্টির নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা একটা সমাধানের পথ খুঁজছি। সিটিতে মাইগ্রেন্ট বিস্ফোরনের আগেই স্টেটের বিভিন্ন স্থানে মাইগ্রেন্টদের বসবাসের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।