জালালাবাদ এসোসিয়েশনের অর্থ কেলেংকারি
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০৩:৪২ এএম, ২০ মে ২০২৩ শনিবার
তদন্তে ডিস্ট্রিক্ট এটর্নি অফিস
আজকাল রিপোর্ট:
জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকার আর্থিক অনিয়মের কিছু নির্দিষ্ট অভিযোগ নিয়ে কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট এটর্নি অফিস তদন্ত শুরু করেছে। সংগঠনের তহবিল থেকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ ডলার উত্তোলন ও তা ব্যক্তিগত খাতে ব্যবহারের অভিযোগ এনেছে জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা’র কার্যকরি পরিষদ।
গেল সপ্তাহে কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট এটর্নি অফিস বাদী পক্ষের স্টেটমেন্ট গ্রহণ করেছে। তারা ব্যাংক স্টেটমেন্ট, সংবিধানের কপি ও বিভিন্ন সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত সমূহও উপস্থাপন করেন। এটি একটি ক্রিমিনাল কেস হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। কেসটির ওপর তদন্ত অব্যাহত থাকবে। এটর্নি অফিস জালালাবাদ এসোসিয়েশনের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা, সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম (সাময়িকভাবে বহিস্কৃত) এবং সাবেক ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের বক্তব্যও নেবেন। করোনাকালীন সময়ে নন-প্রোফিট সংগঠন জালালাবাদ এসোসিয়েশনের আড়াই লাখ ডলার কিভাবে ওয়্যার ট্রান্সফারের মাধ্যমে একটি কনস্ট্রাকশন ফামের্র একাউন্টে জমা হলো তাও খতিয়ে দেখবেন তদন্তকারী অফিসাররা। কার্যকরি কমিটির পক্ষ থেকে ট্রাস্টি বোর্ডের কাছে এটর্নি জেনারেল অফিসে দাখিলকৃত অভিযোগের কপি হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে আগামী ১১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হচ্ছে জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাধারণ সভা। এই সভাতেই ভাগ্য নির্ধারিত হবে সাময়িক বহিস্কৃত সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলামের ভাগ্য। তাকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা হবে নাকি স্বপদে ফিরে আসবেন সে সিদ্ধান্ত এদিনেই হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে সংগঠনের অর্থে নিজের ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের নামে বাড়ি কেনার।
জালালাবাদের সংকট নিরসনে সমঝোতা ও আপোষের কোন পথ খোলা আছে কিনা সংগঠনের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এটর্র্নি মঈন চৌধুরীর কাছে তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনও আছে। তবে উভয় পক্ষকেই নরম হতে হবে। গেল সপ্তাহে পৃথক পৃথকভাবে উভয় পক্ষের সাথে ট্রাস্টিবোর্ড বসেছিল। তাদের বক্তব্য আমরা শুনেছি। সমঝোতার কাছাকাছি আসতে আমরা পারিনি। এভাবে সমাধান না হলে কোর্টে কোন ফয়সালা সম্ভব কিনা জানতে চাওয়া হলে মঈন চৌধুরী বলেন, কোর্টেও সমঝোতা হতে পারে। তবে তা পরিহার করে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে পারলে ভাল হয়।
নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক জালালাবাদ এসোসিয়েশনের প্রবীন এক নেতা বলেন, ট্রাস্টি বোর্ডের সভায় মইনুল তার কেনা বাড়ি, যাকে কিনা জালালাবাদ ভবন বলা হচ্ছে, তা বাড়ি হস্তান্তরের জন্য ১.২ মিলিয়ন ডলার দাবি করেছেন। এই মূল্যে জালালাবাদ এসোসিয়েশন বাড়িটি নিতে আগ্রহী নয়। জালালাবাদ এসোসিয়েশন বাড়িটি গ্রহণ করলে মর্টগেজ প্রদানে সমস্যায় পড়তে হবে। বরং তারা সংগঠনের সাড়ে ৩ লাখ ডলার মইনুলের কাছ থেকে ফিরে পেতে চায়।
আইনী পদক্ষেপের ব্যাপারে জালালাবাদের সভাপতি বদরুল খানের বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য এখন ১১ জুনের সাধারণ সভার দিকে। এটিকে সাফল্যমন্ডিত করাই বড় দায়িত্ব। মইনুল ইসলামের ব্যাপারটি আইনী প্রক্রিয়াধীন আছে। এর বেশি আমি কিছু বলতে পারবো না। তবে সংগঠনের অর্থ লোপাট করে কেউ রেহাই পাবে না। জবাবদিহিতার আওতায় তাকে আসতেই হবে। মনে রাখতে হবে জালালাবাদের অর্থ সিলেটবাসীদের আমানত। ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রোকন হাকিম বলেন, ২০২১ সালে নবায়নকৃত সদস্য ও আজীবন সদস্যদের নিয়ে এই সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেই সংগঠন পরিচালনায় করণীয় ও দিক নির্দেশনা প্রদান করবেন সদস্যরা।
ট্রাস্টি বোর্ডের সাথে বৈঠক ও আইনী প্রক্রিয়া সম্পর্কে সাময়িক বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হয়। তিনি বলেন, ট্রাস্টি বোর্ডের সাথে আমার বৈঠক হয়েছে। তারা বদরুল খান ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথে বেঠক করে একটি প্রস্তাব নিয়ে আবারও আমার সাথে আলোচনা করবেন। মইনুল বলেন, এ ছাড়া অনেক কিছুই নির্ভর করছে ১১ জুনের সাধারণ সভার ওপর। আইনী প্রক্রিয়া প্রশ্নে তিনি এ ধরনের কোন উদ্যোগ সম্পর্কে তার অজ্ঞতা প্রকাশ করেন।