বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১   ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিশিষ্টজনদের লেখা রাজনৈতিক ধারাভাষ্য

বিএনপি’রও আছে জুজুর ভয়

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০২:৩৯ এএম, ২৭ মে ২০২৩ শনিবার



 
ড. নূরুন নবী
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নতুন একটি নিষেধাজ্ঞা জারির হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যদি কেউ সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা হয়, তাহলে সেসব ব্যক্তি বা সংস্থার বিরুদ্ধে আমেরিকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ হবে।
বিগত দিনগুলোতে আমরা দেখেছি, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে দিতে চায় না বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দল। তারা জ্বালাও-পোড়াও করেছে, অগ্নি-সংযোগ করেছে। তারা তত্ত্বাবধায় সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। তা না হলে তারা নির্বাচন অনুষ্ঠান বানচালের হুমকি দিয়েছে। আমি মনে করি, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের বিৃবতি বিএনপিকেও সতর্ক করবে। তারাও যে এর আওতার বাইরে এমনটি ভাবার কোনো কারণ নেই। জুজুর ভয় বিএনপিরও আছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে আসছে। ইরাক, ইয়েমেন, সিরিয়া, লিবিয়া এমন অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। দেশ যত ছোট হোক না কেন, কোনো বৃহৎ দেশের উচিত নয় ওই দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় বলে আসছেন, তিনি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সব ধরনের ব্যবস্থা নেবেন। সম্প্রতি কাতার সফরেও তিনি যথাসময়ে নির্বাচন দেওয়ার কথা পুনঃর্ব্যক্ত করেছেন। তাঁর দল আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে পুনপ্রতিষ্ঠা করেছে। আওয়ামী লীগই বাংলাদেশে একমাত্র দল বিগত দিনে সুষ্ঠুভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে। ইতোমধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন, সঠিক ভোটার তালিকা প্রণয়ন, সবার জন্য ভোটার আইডি কার্ডের ব্যবস্থা, ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতি চালু-সহ যুগান্তকারী অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। কিন্তু বর্তমান সরকারের এই সব উদ্যোগকে মেনে নিচ্ছে না বিএনপি তথা বিরোধী দলগুলো। তারা সরকারকে একের পর এক আলমেটাম দিচ্ছে। দাবিতে তারা মানুষ হত্যা করছে, জ্বালাও-পোড়াও, অগ্নিসংযোগের মতো ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত। এসব কিছুই সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বাধা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন যদি সত্যিকার অর্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন চান, তাঁর বিবৃতি যদি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারাকে অব্যাহত রাখার জন্যই হয়ে থাকে তাহলে যারা নির্বাচন বানচাল করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে এখনই যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবস্থা নেয়া উচিত। তাদেরকে নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা থেকে বিরত রাখা উচিত।    
আপাতত দৃষ্টিতে মনে হতে পারে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার এই ভবিষ্যত নীতি বর্তমান সরকারকে চাপে রাখার জন্য। তাহলে তা যুক্তরাষ্ট্র কিংবা বাংলাদেশ কোনো দেশের জন্যই ভাল ফল বয়ে আনবে না।
বাংলাদেশ যে ভৌগলিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গায় রয়েছে, এবং ওই অঞ্চলের শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে এটি মাথায় রাখা উচিত। সেই সঙ্গে রাশিয়া, চীন ও ভারতের বিষয়টিকেও ভাবতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে। আর এসব কারণে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত হবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ধ্বংসাত্মক পন্থা অবলম্বন করা থেকে দূরে থাকা। আর তা হলে সবাই যুক্তরাষ্ট্রের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাবে।    
লেখক: বিজ্ঞানী, মূলধারার রাজনীতিক; কাউন্সিলম্যান, প্লেইনস বরো টাউনশীপ, নিউ জার্সী।